বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ? সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলুন

বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ? সুন্দর বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার ও বজায় রাখার কৌশল গুলো আজকে আমরা এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আলোচনা করতে চলেছি।

বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত

গান থেকে কবিতা কিংবা সিনেমার প্রেক্ষাপট হোক বা বাস্তবের রূঢ় জীবন কোনোটাই ‘বন্ধু বিনে’ সম্ভব নয়।

আর এই উপলব্ধির কারণেই হয়তো লেখক রাধারমণ দত্ত বন্ধুত্বের সরলতম সংজ্ঞা দিয়ে গান বেঁধেছিলেন – ‘বন্ধু বিনে নাইযে গতি, কিবা দিবা কিবা রাতি’।

আমাদের নিয়মের ঘেরাটোপে বন্দি জীবনকে অনিয়মের সীমানায় নিয়ে আসা, বাঁধনভাঙা উচ্ছাসে আশেপাশের মানুষদের তোয়াক্কা না করে এগিয়ে যাওয়ার মতো দুঃসাহসিক কাজ করতে বন্ধুরাই আমাদের উৎসাহী করে।

আর এই সকল কাজ করতে উৎসাহিত করার মাধ্যমে একমাত্র বন্ধুরাই আমাদের নিজের প্রকৃত সত্ত্বা খুঁজে পেতে এবং ঝিনুকের খোলা থেকে বেরিয়ে নিজেকে উন্মুক্ত করতে শেখায়।

আর তাই সেইসকল মানুষকেই বন্ধুর পরিচিতি দেওয়া যায় যারা চূড়ান্ত পাগলামি করার মাঝেও শুভাকাঙ্ক্ষী হিসাবে সর্বদা আপনার সুখ-দুঃখের সঙ্গী হতে পারবে।

কিন্তু বন্ধুত্ব করলেই যে তা সারাজীবনের জন্য টিকে যাবে এমন ভাবনা একদমই ঠিক নয়।

যেকোনো সম্পর্ককেই দীর্ঘদিন যাবৎ জিইয়ে রাখার জন্য যত্ন সহকারে আগলে রাখতে জানাতে হয়।

তবেই শুধুমাত্র বন্ধুর সাথে আত্মীয়তা সময়ের সাথে শক্তিশালী ও গভীর হওয়া সম্ভব।

কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় বন্ধুত্ব করতে জানলেও, অনেকেই সেই বন্ধুত্বকে টিকিয়ে রাখতে জানেন না।
তাই আজ আমরা সুন্দর বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে গড়ে তোলার ও বজায় রাখার কৌশল এবং সত্যিকারের একজন বন্ধুর সাথে সম্পর্কে কিরূপ হওয়া উচিত সেই সম্পর্কে আপনাদের জানাবো।
বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ?
আমাদের জীবনের সাথে জড়িত প্রায় বেশিরভাগ সম্পর্ককে আমরা নিজেরা বেছে নিই না, বরং জন্মসূত্রে পেয়ে থাকি, কিন্তু বন্ধু নামক ব্যক্তিটিকে চয়ন করার অধিকার কিন্তু সম্পূর্ণরূপেই আমাদের নিজেস্ব।

আর তাই ‘বন্ধুত্ব’ -এর সম্পর্ক বয়স, স্ট্যাটাস, পারিবারিক অবস্থান, ব্যাঙ্ক ব্যালেন্স বা জাতি-গোত্র মেনে হয় না।

এই সম্পর্ক থাকে সব বাঁধনের ঊর্ধ্বে।

তবে হ্যাঁ বন্ধুত্ব গড়ে তোলা ও বজায় রাখার ক্ষেত্রে একটি বিশেষ শর্ত আমাদের বাধ্যতামূলক ভাবে মেনে চলতে হয়। আর এই এক ও অদ্বিতীয় শর্তটি হল – পরস্পরকে সমান ভালোবাসা ও সম্মান প্রদান।

বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত – এই প্রশ্নের উত্তর ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হতেই পারে।

তবে কিছু বিষয় এমন আছে, যেগুলির সাথে আমরা প্রত্যেকেই হয়তো সহমত প্রকাশ করবো।

যেমন ধরুন, স্থায়ী বন্ধুত্ব গড়ে তোলার জন্য –

স্নেহ, সহানুভূতি, সহমর্মিতা, সততা, পারস্পরিক বোঝাপড়া, সমবেদনা, একে অপরের পাশে থাকা, আস্থা, সাবলীল অনুভূতির প্রকাশ প্রভৃতি বৈশিষ্ট্য উপস্থিত থাকার দরকার।
বৈশিষ্ট্যগুলিকে আরেকটু বিশদে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে:
১. সখ্যতার সম্পর্কে, বন্ধু বা প্রাণসখার সাথে খোলাখুলি কথা বলা আবশ্যক।

কথা ও অনুভূতি যত সাবলীল ভাবে বেরিয়ে আসবে, ততই সম্পর্কের স্বাভাবিকত্ব বজায় থাকবে।

২. দীর্ঘ দিন কথাবার্তা না হওয়া মানেই বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে গেছে, এমন ভাবনাই ভুল।

অনেক সময় দেখা যায়, কৈশোরে গড়ে ওঠা মিত্রতা তৎকালীন সময়ে এতটাই গভীরতা পেয়েছিল যে ২০-২৫ বছর পর দেখা হাওয়া সত্ত্বেও স্বভাবিকভাবে কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়াতে সমস্যা দেখা দেয়নি।

তাই বন্ধুত্ব কত দিনের তা গুরুত্বপূর্ণ নয়, বরং কতটা গভীর তা বিচার্য।

এর জন্য পারস্পরিক বোঝাপড়া কিছুটা হলেও দায়ী।

৩. বন্ধুর সাথে সৎ থাকলে তবেই সম্পর্ক সুন্দর হবে।

৪. সুখের দিনে তো সকলকেই পাওয়া যায়। কিন্তু দরকারে প্রিয় মানুষকে কাছে পাওয়ারই সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তাই বন্ধুর সাপোর্ট সিস্টেম হতে শিখতে হবে, সমস্যায় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে জানতে হবে।

৫. বন্ধুত্বের সম্পর্কে বিশ্বাস থাকা জরুরি। আস্থা বা বিশ্বাস ভিন্ন সখ্যতা অসম্পূর্ণ।

এরূপ একাধিক উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে বন্ধুত্বের সম্পর্কে কিরূপ হওয়া উচিত এই প্রশ্নের উত্তরস্বরূপ।
কাছে বেশি প্রত্যাশা রাখবেন, তখনই সম্পর্কে বিরূপ প্রভাব পরে।

তাই যতটা প্রত্যাশা না করলেই নয়, ততটুকুই করুন।

এছাড়া বন্ধুত্বের সম্পর্কে আপনার দ্বারা যদি অজান্তে কোনো ভুল হয়ে থাকে তবে সামনে থেকে এগিয়ে বন্ধুর থেকে ক্ষমা চান।

কেননা দীর্ঘ দিনের মান-অভিমান-রাগ ‘সরি’ -এই একটা শব্দ বলার দরুন গলে জল হয়ে যেতে পারে।

তাই কখনো কখনো সম্পর্ক ভালো রাখতে ভুল স্বীকার করা ও ক্ষমা চেয়ে নেওয়া উচিত।

আর বিপরীতে যদি আপনার বন্ধু কোনো ভুল করে থাকেন তবে, তাকেও ক্ষমা করার মানসিকতা রাখুন।

কেননা ক্ষমা করার ও ক্ষমা চাওয়ার ভাবনা থেকেই কিন্তু সম্পর্কে পরিপূর্ণতা আসে।
তাহলে বন্ধুরা, বন্ধুত্বের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিত ? এই প্রশ্নের উত্তর আমাদের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে পেয়েছেন বলে আমি আশা করছি।
 
আমার নাম মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ । আমি এই ওয়েবসাইট এর প্রতিষ্ঠাতা। পেশায় আমি একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার এবং ব্লগিং আমার প্যাশন। আমি এই সাইট এ ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ইংরেজি নিয়ে বিভিন্ন পোস্ট করি এং আর্ন মানি অনলাইন বিষয়ক বিভিন্ন পোস্ট করে থাকি। এই সাইট এর মূল লক্ষ্য হলো বাংলাতে কোয়ালিটি কনটেন্ট প্রকাশ করা যা সাইট এর ভিসিটার দের কাজে লাগে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.