কিভাবে পরীক্ষায় ধরা না পড়ে চিটিং করা যায়? মোহাম্মদ জুয়েল আহমদ ২০২৩ |
প্রথম প্রথম হাতটা একটু কেঁপে উঠতো, বুকের মধ্যে ধুকপুক ধুকপুক করতো কিন্তু এখন আমি অনায়াসে নকল করতে পারি। আপনারা থাম্বনেইল ও টাইটেল দেখে বুঝতে পেরেছেন, আজকে আমি কি নিয়ে লিখবো, আপনারা হয়তো অনেকেই ভাবছেন আসলেই জুয়েল সাহেব পরিক্ষার কিভাবে ভালো রেজাল্ট করেন? যেভাবে নকল করে লিখে ভালো রেজাল্ট করছেন সেটাই আজকেই হয়তোবক তুলে ধরবেন ।
আমার মনে হয় পরীক্ষায় চিটিং বিটিং করার থেকে ফেইল করা অনেক ভালো , কারণ একটা ব্যার্থতা জীবনের একটা বড় সফলতা বয়ে আনতে পারে । আমার ছোট জীবনের ছোট্ট একটা ঘটনা বলি ,
তখন আমি ক্লাস সিক্সে এ পড়ি , আমার কাছে সবচেয়ে বিরক্তিকর বিষয় ছিলো বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় সাবজেক্ট টা ! অনেকেই আবার বলতে পারেন এটা তো অনেক সহজ সাবজেক্ট, জুয়েল সাহেব আবার কি বলেন, যাই হোক এইদিকে না গিয়ে সরাসরি কথা আসি,
একবার অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার আগে কখনো বই খুলি নাই । দেখি নাই ! যখন ই পড়তে যাইতাম দেখতাম যে অনেক টার্ম ই খালি মুখস্থ করতে হয় (আমি বুঝতাম না তো তাই) । পরে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষার কয়েক মাস আগে আমার পরীক্ষার তাগিদে পড়তে শুরু করি , কিন্তু যে বিষয় বুঝি না সে বিষয়ে কি মুখস্থ বিদ্যায় কিছু হয় ? মুখস্থ করি ভুলে যাই (আমি আবার মুখস্থ বিদ্যায় আমি কাঁচা, এক লাইন মুখস্থ করলে পরের ২ মিনিটেই ভুলে যাই 😑) তো পরীক্ষা হলো , পরীক্ষার কক্ষে প্রশ্ন পাওয়ার পর আমার মনে হলো আমি এ পৃথিবীর নতুন সদস্য (😆) কিছু না বুঝে কোনো রকম এমসিকিউ দাগিয়ে দিলাম ৩০ টা , পরে খুব কষ্টে কয়েকটা সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিলাম । পরীক্ষার রেজাল্ট এর সময় দেখলাম আমি প্রত্যেক সাবজেক্টে ৭৫+ থেকে ৯০+ ও পেয়েছি কিন্তু বাংলাদেশে ও বিশ্বপরিচয়ে টেনেটুনে পাস মার্ক 🙂 কেউ আবার জিজ্ঞেস কইরেন না কত পাইছেন?
কেমনটা লাগে? বাসায় রেজাল্ট কার্ড রেখে ঘুম দিছিলাম , ওইদিন খুব কান্নাকাটি করছি । পরে ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করলাম কেন পারি নাই , কি ভুল ছিল , কেন ভালো লাগে না । সবকিছু বিচার করে বুঝতে পারলাম আমি আসল মূল বিষয় কখনো বুঝার চেষ্টা করিনি । কখনো ইতিহাসের একটা ঘটনাকে ঘটনার মতো না দেখে , একটা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ করে আনন্দ না নিয়ে আমি সাল , তারিখ , দেশের নাম এগুলো মুখস্থ করেছি । কিন্তু আমি যদি বুঝে পড়তাম তাহলে এই রেজাল্ট আমার দেখতে হতো না । পরে একটা কোচিং এ ভর্তি হওয়ার পর একজন দারুন বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের স্যারের সাথে পরিচয় হলো,স্যার কিন্তু মেডাম ছিলো, দেখতেই আবার ম্যডাম বিরাট সুন্দরি,
উনি সুন্দরি ছিলেন বলেই তো পড়তে পারলাম,কেননা এত্ত সুন্দরী মেডামের কাছে গিয়ে পড়া না পারলেই তো নিজের সম্মান বোধ কি থাকবে, উনি যাতে বুঝে ছেলেটা হ্যাভি ট্যালেন্টেড।যাই হোক আমি এইদিকে আর যাচ্ছিনা । মেইন কথায় আসি৷।
আমি সারাজীবন উনার প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব , একমাত্র উনিই আমার এই বোরিং একটা সাবজেক্টের উপর ভালোবাসা জন্মে দিয়েছে , এমনকি বর্তমানেও যেকোনো বইয়ের সাজেশন নিতে বা কোনো প্রয়োজনে ম্যাডাম একটা নক দিলেই উনি বলে/বুঝিয়ে দেন) । পরে বার্ষিক পরীক্ষার রেজাল্টে দেখি আমার বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়ের মার্ক ১০০ এর মধ্যে ৮৮ 😪 । এরপর থেকে আর এখনো এমন বাজে রেজাল্ট করি নাই। তাই বলি , এই চিটিং না করে একবার খারাপ রেজাল্ট হতে দিন নাহয়! অথবা এখনই সময় বুঝে কাজ করুন!
এখন আসি আপনার প্রশ্নে , আপনার প্রশ্ন করার কারণ দুইটা হতে পারে , হতে পারে আপনি নিজের জন্য করছেন এই প্রশ্নটা , হতে পারে আপনি আপনার পরিচিত এমন কাউকে দেখছেন যারা ধরা না পরে চিটিং করে ভালো রেজাল্ট করছে । তো এই দুইটা কারণ একটু ব্যাখ্যা করে দেখি😛
এখন যদি ১ টা হোন , মানে নিজের জন্য , তাহলে বলবো চিটিং না করে পরিবর্তনের চেষ্টা করুন , কোথায় কি সমস্যা হচ্ছে ?
কেন হচ্ছে ? সেটা আগে বোঝার চেষ্টা করুন । কিন্তু এই আজাইরা কথা বলেও লাভ নাই , হতে পারে আপনার বাবা মা অনেক চাপ দিচ্ছে পাস করার জন্য তাই আপনি এই পথ অবলম্বন করার চেষ্টা করছেন বা হতে পারে আপনি অলস টাইপের লোক । এখন যদি বাবা মায়ের চাপে হয় তাহলে আপনি আপনার সমস্যা বুঝে একটা পথ অবলম্বন করে (হতে পারে বিষয়টা বোঝার জন্য কোনো বই কেনা বা ইন্টারনেট থেকে তথ্য নেওয়া) বাবা মাকে কারণ সহ বলে তাদের কাছে সাহায্য চান , যেন চিটিং করে আপনার ভবিষ্যৎ নষ্ট না হয় । আর অলসতা হলে এর থেকে কাটিয়ে উঠার চেষ্টা করুন অতি শীঘ্রই ।
এখন দ্বিতীয় কারণ নিয়ে বলি , যদি অন্যেরটা দেখলেন এবং প্রশ্ন করলেন , তাহলে বলবো অন্যরা কি করলো দেখার প্রয়োজন নাই , তারা নিজেই নিজের ভবিষ্যৎ নষ্ট করছে । এখন আমাদের জ্ঞানার্জনের সময় , চুরি করার না । নিজের জন্য নিজের ভবিষ্যৎ নিজেই তৈরি করতে হবে 🙂 ।
প্রথমে ভাবছিলাম উত্তর দিবো না । কিন্তু পরে ভাবলাম লিখা যখন শখের কাজ তাইলে একটু লিখিই 😜 আর আমি দুঃখিত , যে প্রশ্নের উত্তর ঠিকভাবে দিতে পারিনি হয়তো , কিন্তু আমার মনে হয় এই চিটিং বাজি করে জীবনকে ধ্বংসের দিকে আগার কোনো মানে হয় না । সফলতার জন্য প্রথমে একটু ব্যর্থ হওয়া ভালো ।
ধন্যবাদ
কোন মন্তব্য নেই