এইচএসসির পর বিদেশে পড়তে হলে যে ১১টি বিষয় মাথায় রাখতে হবে ।

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ । কেমন আছেন প্রিয় ভিজিটর আশা করি ভালো আছেন । আমিও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি । আজকে আপনাদের সাথে কথা বলবো, এইচএসসির পর বিদেশে পড়তে হলে যে ১১টি বিষয় মাথায় রাখতে হবে ✍️

সদ্য উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা পাশ করা নানজীবার একদম শুরু থেকেই ইচ্ছে ছিল বিদেশে পড়াশোনা করার। তাই তো এই লকডাউনেই সে এইচ এস সি পরীক্ষার প্রস্তুতির পাশাপাশি বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সম্পর্কে ঘাঁটাঘাঁটি শুরু করে দেয়। আর নিজের পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্কলারশিপ পেয়েই কানাডায় উড়াল দেয় নানজীবা। আপনি যদি নানজীবার মত নিজেকে এইচএসসি-র পর এই অবস্থায় দাঁড় করাতে চান তবে আপনাকে কিছু জিনিস মনে রাখতে হবে। অসংখ্য শিক্ষার্থী HSC এর পর বিদেশে পড়াশোনা করতে যাওয়ার স্বপ্ন দেখে। কিন্তু বেশিরভাগ সময় দেখা যায় ভালো রেজাল্ট থাকা সত্ত্বেও সঠিক তথ্যের অভাবে স্বপ্ন স্বপ্নই রয়ে যায়।
যারা এইচএসসির পর বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে আগ্রহী, তাদের জন্যই আজকের এই ব্লগ। চলুন জেনে নেওয়া যাক ১১টি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সম্পর্কে যা এইচএসসির পর বিদেশে পড়তে যাওয়ার জন্য জরুরী।

🔴 টার্গেট ঠিক রাখা:
অমুক এইচএসসি-র পর বিদেশে পড়তে যাচ্ছে দেখে আপনারও যেতে হবে, ব্যাপারটা এমন না। জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে আমরা অনেকেই বাইরে যেতে চাই ৷ কিন্তু এটা যেহেতু জীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত, সেহেতু এটা নিতে হবে অনেক ভেবেচিন্তে। আপনার বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা, অর্থ, পরিবারের সম্মতিসহ সবকিছুই বিবেচনায় রাখতে হবে।

🔴 ভালো ফলাফল:
যদিও মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিকের রেজাল্ট সব বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রয়োজন হয় না, তবুও ভালো বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ নিয়ে পড়তে চাইলে ভালো ফলাফল করাটা জরুরি। আপনি যে প্রোগ্রাম বা কোর্সের জন্যই বিদেশে যান না কেন, আপনার রেজাল্ট যত ভালো হবে, বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় আপনার ভর্তি এবং স্কলারশিপের সুযোগ তত বেশি হবে।

🔴 সহশিক্ষা কার্যক্রম:
ইসিএ বা এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিস আপনার আবেদনপত্রে প্লাস পয়েন্ট হিসেবে কাজ করে। একজন শিক্ষার্থীর পড়াশোনার পাশাপাশি নাচ, গান, আবৃত্তি, খেলাধুলা, স্বেচ্ছাসেবা, লেখালেখি, রান্না, বিতর্ক, ফটোগ্রাফি, অলিম্পিয়াডের মতো বিভিন্ন বিষয়ে আগ্রহী হতে পারে। আর এই আগ্রহ থাকার ব্যাপারটি শুধু বললেই হবে না, দেখাতে হবে নিজের আবেদনপত্রে বিভিন্ন রচনার মাধ্যমে, শিক্ষকদের সুপারিশপত্র এবং সাক্ষাৎকারে জীবনের ছোট ছোট গল্পের মধ্য দিয়ে।

🔴 ভাষাগত দক্ষতা:
বেশিরভাগ দেশে ইংরেজি ভাষা প্রচলিত হওয়ায় IELTS কিংবা TOFEL -এ ভালো স্কোর থাকতে হবে। এসব স্কোরের মেয়াদ থাকে দুই বছর।
যুক্তরাষ্ট্রে যারা ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদে স্নাতকোত্তর করতে ইচ্ছুক, তাদের জন্য প্রয়োজন GRE (Graduate Record Examination)। আর যারা ব্যবসা অথবা মানবিক বিষয়ে পড়তে ইচ্ছুক তাদের জন্য আছে GMAT (Graduate Management Admission Test)। আর যারা উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে বিদেশে যেতে চায় অথবা বিদেশে কোন কলেজে ভর্তি হতে চায়, তারা SAT (Scholastic Aptitude Test) দিয়ে থাকে। ইউরোপীয় দেশগুলোতে সাধারণত আমেরিকাভিত্তিক GRE বা GMAT প্রয়োজন হয় না। GRE/ GMAT এর মেয়াদ ৫ বছর থাকে।
তবে যারা ইংলিশ মিডিয়ামে পড়াশোনা করেন তারা IELTS স্কোর ছাড়াও বিদেশে পড়াশোনা করার সুযোগ পেতে পারেন, যেহেতু তাদের পড়াশোনার মাধ্যম বা Medium of Instruction হলো ইংরেজি। বাইরের অনেক বিশ্ববিদ্যালয় Medium of Instruction কে IELTS বা TOEFL এর সমতুল্য হিসেবে গ্রহণ করে। সাধারণত বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সাম কন্ট্রোলার থেকে এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রি দপ্তর থেকে এই সার্টিফিকেট সংগ্রহ করতে হয়।
চীন, জাপান, জার্মানি, দক্ষিণ কোরিয়া, ফ্রান্স ইত্যাদি দেশে যেতে চাইলে এসব দেশের ভাষা আগেভাগেই শিখে নেওয়াটা ভালো। ভাষা জানা থাকলে এসব দেশগুলোতে বৃত্তি পাওয়াটা যেমন সহজ হয়, তেমন পার্টটাইম কাজের ক্ষেত্রেও এই ভাষার দক্ষতা উপকারে আসে।

🔴 দেশ ও বিশ্ববিদ্যালয় বাছাই:
প্রথমেই যে বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে, তা হলো দেশ নির্বাচন। অর্থাৎ আপনি কোন দেশের কোন শহরে যাবেন। আপনাকে জানতে হবে কোন দেশগুলো উচ্চশিক্ষার মানের দিক থেকে এগিয়ে আছে। বর্তমানে শিক্ষার গুণগত মান বিচারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, মালয়েশিয়া, জাপান এগিয়ে আছে।
তবে এই দেশগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি বেছে নেয়ার ক্ষেত্রে আপনাকে যথেষ্ট চিন্তা-ভাবনা করতে হবে। কারণ একেকটি দেশের পড়াশোনার ধরন, টিউশন ফি, থাকা-খাওয়ার খরচ ও ভর্তি চাহিদায় পার্থক্য আছে। আপনার বাজেট, আগ্রহ ও যোগ্যতার সাথে সব দিক থেকে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে যে দেশটি, সেটিকেই বেছে নিতে হবে।
দেশ নির্বাচনের পরবর্তী ধাপ হলো বিষয় নির্বাচন। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এমন অনেক বিষয়ে পড়াশোনার সুযোগ রয়েছে যেগুলো দেশে নেই। ফলে আপনাকে এমন একটা বিষয় বেছে নিতে হবে যেটির প্রতি আপনার আগ্রহ রয়েছে, ভালো করার সামর্থ্য রয়েছে এবং বিষয়টিতে পড়াশোনা করে পরবর্তীতে ভালো কোনো চাকরির সুযোগও রয়েছে। ঝোঁকের মাথায় কোনো বিষয় পছন্দ করলে চলবে না।
এরপর আসে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন। উন্নত দেশে পেছনের সারির ইউনিভার্সিটি যেমন রয়েছে, তেমনি তুলনামূলকভাবে একটু কম উন্নত দেশে আছে প্রথম সারির ইউনিভার্সিটি। আবার বিশ্ববিদ্যালয়ভেদে টিউশন ফি'র তারতম্যও আছে। অনেকদেশে ফুল ফ্রি স্কলারশিপের ব্যবস্থা প্রচলিত নেই। তাই শিক্ষার গুণগত মান, পরিবেশ, বৈশ্বিক র‍্যাংকিং, টিউশন ফি, বৃত্তি সুবিধা, কোর্সের মেয়াদ, পার্ট-টাইম চাকরির সুযোগ, নাগরিকত্ব, জীবনমান, আবাসন ব্যবস্থা, বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা, আবহাওয়া ইত্যাদি বিষয় পর্যবেক্ষণ করেই আপনাকে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হবে। এগুলো দেখার একটা সহজ উপায় হল যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে আপনি ইচ্ছুক, সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ওয়েবসাইট ঘাঁটা। ধৈর্য ধরে সব নোট নিতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে যেসব বিষয়গুলোকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে:

- আপনার পছন্দকৃত বিষয় আছে কি না
- পড়াশোনার মান কেমন
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও শিক্ষকদের মান কেমন
- শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান কোথায়
- কোর্স মেয়াদ ও টিউশন ফি
- স্কলারশিপ সুবিধা
- আবাসন ব্যবস্থা
- ভর্তি যোগ্যতা

যেকোনো একটা দেশে আবেদন না করে একাধিক দেশের ৪-৫টা বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করলে ভালো ফলাফল পাওয়ার সুযোগ বেশি।
এখন জানবো আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, 'স্কলারশিপ' নিয়ে৷ বিদেশে স্কলারশিপ নিয়ে অনেকেই পড়তে যেতে চান। কারণ বাইরে পড়াটা বেশ ব্যয়বহুল। কিন্তু শিক্ষার্থীদের অনেকেই কীভাবে স্কলারশিপ খুঁজতে হয় সেই বিষয়টি নিয়ে দ্বিধায় থাকেন। সঠিক পরিকল্পনার অভাব ও বাস্তব জ্ঞান না থাকার কারণে এই স্কলারশিপ পাওয়ার স্বপ্ন মাঝেমধ্যে দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়।
🔴 প্রোগ্রাম নির্ধারণ: 
কোর্স বা প্রোগ্রাম নির্ধারণের সময় বেশ কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতে হবে।
আপনি কোন বিষয়ে পড়তে চান, বিশ্ব প্রেক্ষাপটে কোনটার চাহিদা বেশি, দেশীয় চাকরি বাজারে কী ভালো হবে, কী পড়লে সহজেই পেশাগত উন্নতি ও লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব, আপনি যেই দেশে পড়তে যেতে আগ্রহী সেই দেশে আপনার পছন্দের বিষয়ে উচ্চশিক্ষার মান বা পদ্ধতি বিশ্বে কতটুকু গ্রহণযোগ্য বা কতটুকু সময়োপযোগী, ভবিষ্যতের পেশাগত জীবন, কোর্সটিতে পড়াশোনা শেষে কোথায় কর্মক্ষেত্র গড়ে তুলবেন, সেখানের সুযোগ-সুবিধা, সম্ভাবনা ও অসুবিধা বা প্রতিবন্ধকতার মাত্রা কতটুকু, আপনার বর্তমান যোগ্যতার সাপেক্ষে কোন কোর্সটি আপনার জন্য সবচেয়ে বেশি উপযোগী, এই কোর্সের কোনো বিকল্প কোর্স আছে কি না, মেয়াদ ও টিউশন ফি কত, মূলত এসব বিষয়েই চোখ রাখতে হবে।
এই প্রশ্নগুলোর সঠিক উত্তর পাওয়ার জন্য আপনি উন্নত বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তথ্য ও পরামর্শকেন্দ্রের সঙ্গে অথবা ওই কোর্সে পড়াশোনা করেছেন বা করছেন এমন কোনো শিক্ষার্থীর সঙ্গে পরিচয় থাকলে আগে থেকেই আলাপ করে নিতে পারেন।

🔴 প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রস্তুত রাখা:
এইচএসসির পর বিদেশে পড়তে যেতে চাইলে প্রথমেই দেখতে হবে আপনার সব প্রয়োজনীয় একাডেমিক কাগজপত্রসহ যাবতীয় ডকুমেন্টস ঠিকঠাক আছে নাকি। কোনো ডকুমেন্ট বাদ পড়ে গেলে তা বানিয়ে নিতে হবে অথবা সেই সংক্রান্ত অফিস থেকে সংগ্রহ করে নিতে হবে৷ নিজের আপডেটেড সিভি ও কাভার লেটারসহ সব শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্র ইংরেজিতে করিয়ে নিতে হবে। আবেদনের ক্ষেত্রে মূলত:

- পাসপোর্ট
- জম্ম নিবন্ধন সার্টিফিকেট
- জাতীয় পরিচয়পত্র (যদি থাকে)
- এসএসসি-র সার্টিফিকেট, ট্রান্সক্রিপ্ট এবং টেস্টিমোনিয়াল
- এইচএসসি-র ট্রান্সক্রিপ্ট, সার্টিফিকেট ও টেস্টিমোনিয়াল
- পাসপোর্ট সাইজের ছবি
- স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP) লেটার
- লেটার অব মোটিভেশন
- লেটার অব রিকমেন্ডেশন
- IELTS / TOEFL / ভাষাগত দক্ষতার সার্টিফিকেট

আবেদনের সময় অবশ্যই কী কী ডকুমেন্ট চাওয়া হয়েছে তার লিস্ট দেখে নেবেন ।
ছবি এবং প্রয়োজনীয় সকল ফটোকপি অবশ্যই সত্যায়িত করে নিতে হবে। বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি বিশেষ শাখা থেকে সকল কাগজ পত্রের মূলকপি দেখানো সাপেক্ষে বিনামূল্যে সত্যায়িত করা যায়। এছাড়া নোটারি পাবলিক থেকেও সত্যায়িত করা যায়। ভর্তির কাজ অনলাইনে হলেও অনেকক্ষেত্রে কিছু ডকুমেন্টের হার্ডকপি আপনাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে কুরিয়ার করে পাঠাতে হবে।

🔴 স্টেটমেন্ট অব পারপাস (SOP - Statement of Purpose)
এইচএসসি-র পর বাইরে পড়তে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের যেসব বিষয় নিয়ে বেশি চিন্তা করতে হবে তার মধ্যে এসওপি বা স্টেটমেন্ট অব পারপাস অন্যতম। SOP হলো আপনার ব্যক্তিগত গল্প। এখানে অমুক বিষয়টি কেন পড়তে চাচ্ছেন, পূর্ব অভিজ্ঞতা কী, গ্র্যাজুয়েশন শেষে দেশে ফিরে এসে কী করবেন, অন্য দশজনকে বাদ দিয়ে আপনাকে কেন নেওয়া উচিত- ইত্যাদি বিষয়গুলো ধারাবাহিকভাবে গল্পের মতো করে লিখতে হবে।
আপনি মানুষ হিসেবে কেমন, উচ্চশিক্ষার চাপ সামলাতে আপনি কতটুকু প্রস্তুত আছেন, আপনার ব্যাকগ্রাউন্ড, প্রতিভা, অভিজ্ঞতা ও সক্ষমতার একটা প্রতিচ্ছবি অ্যাডমিশন কমিটি এই এসওপি থেকে জেনে নেয়। মিথ্যের আশ্রয় না নিয়ে আপনি যেমন, ঠিক তেমন করেই প্রাসঙ্গিক ও প্রেরণামূলকভাবে নিজেকে নিয়ে ও নিজের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে লিখবেন।

🔴 লেটার অব রেকমেন্ডেশন (Letter of Recommendation)
আবেদনের সময় এক থেকে তিন জনের কাছ থেকে রেকমেন্ডেশন লেটার (LOR) নিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে সহায়তা করতে পারবেন যারা আপনার সম্পর্কে ভালো জানেন, যেমন যারা কিনা আপনাকে চেনেন, আপনার কাজ সম্পর্কে ধারণা রাখেন এবং তাঁরা আপনার পরিবারের কেউ নন। তাই দুজনকে ঠিক করা ভালো।
প্রথমত, আপনার একজন সরাসরি শিক্ষক, দ্বিতীয়ত, আপনি যদি কোনো চাকরি করে থাকেন, তাহলে আপনার সরাসরি ঊর্ধ্বতন কেউ। এমন কারও নাম রেফারেন্সে দিন, যাঁর সঙ্গে আপনার ভালো সম্পর্ক আছে, যিনি আপনার জন্য সময় বের করে রেফারেন্স লিখে দেবেন।

১০ স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং:
বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠানো অফার লেটারে উল্লেখিত সময়সীমার মধ্যেই প্রতিষ্ঠানে পৌঁছাতে হবে। অন্যথায় ভর্তি বাতিল বলে ধরা হবে। তাই নির্দিষ্ট তারিখের আগেই আপনাকে সেদেশের ভিসা সংগ্রহ করতে হবে। কোনো দেশে ভিসা পেতে হলে প্রথমে সেদেশের ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করতে হয়।
কোনো কোনো ক্ষেত্রে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই ভিসার আবেদনপত্র সরবরাহ করে থাকে। তা না হলে নির্দিষ্ট দূতাবাস থেকে ভিসার আবেদনপত্র সংগ্রহ করে সঠিক তথ্য দিয়ে নির্ভুলভাবে প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্রসহ দূতাবাসে জমা দিতে হবে এবং নির্দিষ্ট দিনে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ভিসা সংগ্রহ করতে হবে।

ভিসার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সমূহ:
- শিক্ষাগত যোগ্যতা সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র: সনদপত্র, নম্বরপত্র, প্রতিষ্ঠান - প্রধানের প্রশংসাপত্রের সত্যায়িত ফটোকপিসহ মূলকপি।
জন্মসনদ
- বর্তমান ও আগের পাসপোর্টের ব্যবহৃত পাতা। পাসপোর্টের মেয়াদ কমপক্ষে ১ বছর থাকতে হবে এবং পেশা, জন্ম তারিখ ও অন্যান্য সকল তথ্যের সাথে শিক্ষাগত কাগজপত্রের মিল থাকতে হবে। 
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রমাণপত্র বা অফার লেটার।
- আর্থিক সামর্থ্যের প্রমাণপত্র
- ছবি
- পূরণকৃত অর্থনৈতিক সামর্থ্যের (স্পনসর বা গ্যারান্টর) ফরম।
স্পন্সরের সঙ্গে আবেদনকারীর সম্পর্কের প্রমাণ হিসেবে জন্মসনদ, পাসপোর্ট কিংবা স্কুলের কাগজপত্র।
- স্পন্সরের আয়ের উৎসের বিস্তারিত কাগজপত্র।
- সশস্ত্র বাহিনীতে কাজ করার ইতিহাস থাকলে সেখানে কাজের রেকর্ড ও ছাড়পত্র।
- ভাষাগত দক্ষতার প্রমাণপত্র
- স্বাস্থ্যবিমার প্রমাণপত্র
- পুলিশ ছাড়পত্র 

🔴 বিদেশে পড়াশোনার খরচ:
আপনি বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য বৃত্তি পাবেন কিনা এর উপর ভিত্তি করে দেশ নির্বাচন করা উচিত, কেননা বিদেশে পড়ালেখার সাথে ব্যয়ের সম্পর্ক রয়েছে। যদি বৃত্তি পেয়ে যান, তাহলে ওয়ার্ল্ড র‌্যাংকিং-এ থাকা এক নম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যেতেও অসুবিধা নেই। কিন্তু যদি বৃত্তি না পান অথবা আংশিক বৃত্তি পান, সেক্ষেত্রে আপনার সামর্থ্য অনুযায়ী দেশ নির্বাচন করা উচিত।
কারণ, আমেরিকায় সাধারণত গ্রাজুয়েট লেভেলে পড়তে প্রতি বছর বিশ লাখ টাকা লাগে। কানাডায় সেটা পনেরো লাখ টাকা। অস্ট্রেলিয়া ও ইউকেতে পনেরো থেকে আঠারো লাখ টাকা লাগে। মালয়েশিয়া, চীন ও ভারতে মোটামুটি বাংলাদেশের প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মতোই পড়ালেখার খরচ। 
সেই পরিমাণ অর্থ অবশ্যই ব্যাংকে থাকতে হবে। তবে আপনি যদি স্কলারশিপ পান, স্কলারশিপের শতাংশ এই হিসাবের বাইরে রাখতে পারেন। সেই সাথে ওই দেশে গিয়ে পারিপার্শ্বিক যেসব খরচ হবে, যেমন থাকা-খাওয়া, যাতায়াত, পোশাক, হাতখরচ, চিকিৎসা ইত্যাদির জন্যও ব্যাংকে সন্তোষজনক অর্থ দেখাতে হবে। সব মিলিয়ে যদি দেখা যায় যে, টিউশন ফি হিসেবে ১০ লাখ টাকা এবং থাকা-খাওয়ার খরচ হিসেবে ১০ লাখ টাকার প্রয়োজন হবে, তাহলে ব্যাংক স্টেটমেন্ট হিসেবে অন্তত ২৫ লাখ টাকা দেখালে ভালো।
এইচএসসির পর বাইরে স্নাতক করতে যাওয়ার অসংখ্য সুযোগ আছে। একইসাথে আছে স্নাতকোত্তর ও পিএইচডি করার সুযোগও। তাই ভালোমতো প্রস্তুতি নিয়েই বাইরে পড়তে যাওয়া উচিত। এসময় বিভিন্ন দালাল কিংবা ফ্রড এজেন্সির লোকেদের থেকে কয়েক হাত দূরে থাকবেন। তারা যেন আপনাদের অনভিজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মোটা অংকের টাকা দাবি না করে বসে!

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.