IELTS-এর Writing বিষয়ক প্রস্তুতি | Muhammed Juwel Ahmed
অনেকেই জানতে চেয়েছেন Writing-এর ব্যাপারে কীভাবে প্রস্তুতি নেবেন। আসলে একেকজনের জন্য একেক কৌশল কাজ করে। তাই এখানে আমার জন্য যে কৌশলগুলো কাজ করেছে, সেগুলো উল্লেখ করবো।
অনেকে বলেন IELTS, TOEFL আর GRE (AWA)-এর রাইটিং পার্টটা নাকি বাঙালিদের জন্য সবচেয়ে সোজা পার্ট! কারণ আমরা ছোটবেলা থেকে মনের মাধুরী মিশিয়ে রচনা লিখে এসেছি। আর তাই এই অংশে ইচ্ছেমত লিখে ফেলতে পারি। আদৌ কি ব্যাপারটা এরকম সোজা?
না!
আমি রাইটিং পার্টে সবসময় ঝামেলার মুখোমুখি হয়েছি, কারণ এক্ষেত্রে পাতার পর পাতা লিখলেই শুধু হয় না। ভালো স্কোর পাওয়ার জন্য এসব স্ট্যান্ডার্ডাইজিং পরীক্ষার রাইটিং পার্টে অনেক পয়েন্টের দিকে লক্ষ্য রাখতে হয়। আজকের পোস্ট যেহেতু IELTS নিয়ে, তাই আমি IELTS-এ ৭ বা তার বেশি পাওয়ার জন্য কী কী পয়েন্ট অনুসরণ করতে হয়, সেগুলোই লিখবো।
লেখাটা খুব শর্টকাটে লিখেছি। এখানে টাস্ক ১ আর টাস্ক ২ লেখার ব্যাপারে মূল পয়েন্টগুলোই শুধু উল্লেখ করেছি। এছাড়া টাস্ক ১ কিংবা টাস্ক ২ লেখার জন্যে আলাদা আলাদা অনেক কৌশল আছে। সেগুলো মাথায় রেখে তারপর প্র্যাকটিস করতে হবে। কারণ দুটো টাস্ক পুরোপুরি আলাদা ধরনের। আলাদা স্টাইলে লিখতে হয়। যা হোক,
০) প্রথম পয়েন্ট হল, অন্যদের চেয়ে নিজেকে আলাদাভাবে প্রকাশ করতে হবে। ১০০ জন পরীক্ষার্থী যদি পরীক্ষা দেয়, দেখা যাবে অধিকাংশ টেস্ট টেকার লিখবে মোটামুটি একই স্টাইলে। অল্প সংখ্যাক চেষ্টা করবে ভিন্নভাবে লিখতে। আপনাকে শেষোক্তদের একজন হতে হবে।
১) আর্টিকেলের প্রতিটা লাইন গুরুত্বপূর্ণ হতে হবে। অর্থাৎ লেখা বড় করার জন্য মনের মাধুরী মিশিয়ে যা ইচ্ছা তাই লেখা যাবে না। “সে এক লম্বা কাহিনী। ঘরে ছিল না কেরোসিন…” শুরু করলে চলবে না।
২) প্রতিটা লাইন যৌক্তিক হতে হবে।
অর্থাৎ প্রতিটা লাইনের মাধ্যমে টপিকের উপর ফোকাস করতে হবে। টপিকে যা নিয়ে লিখতে বলেছে, সে বিষয়ে আপনার যুক্তি দেখাতে হবে। ধরুন, টাস্ক ১-এর একটা গ্রাফে দেখানো হয়েছে “ঢাকা শহরের মোট জনসংখ্যার (১০০০ জন) মধ্যে ৩০ জন ডাক্তার, ৪০ জন প্রকৌশলী এবং ১০ জন নার্স আছেন। গত ১০ বছরের মধ্যে সবার বেতন কাঠামোর উঠানামা দেখানো হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, ১০ বছর পর ডাক্তারদের বেতন সবচেয়ে বেশি বেড়েছে।” আপনাকে বলা হল, গ্রাফ থেকে কী বুঝতে পারছেন, সেটা লিখতে।
আপনি লেখা শুরু করলেন, “১০ বছর আগে আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন দেখতাম প্রকৌশলীরা সবচেয়ে বেশি বেতন পায়। এখন দেখা যাচ্ছে ডাক্তারদের দাম বেশি বেড়েছে…।” এসব কথা অযৌক্তিক, কারণ গ্রাফ থেকে আপনি এগুলো অনুমান করে নিতে পারেন না। এগুলো লিখলে অবধারিতভাবেই নাম্বার কমে যাবে। কিন্তু গ্রাফে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী যদি লিখেন, “১০ বছর আগে প্রকৌশলীদের বেতন ছিল ক টাকা আর ডাক্তারদের বেতন ছিল খ টাকা। নার্সদের বেতন ছিল সবচেয়ে কম, গ টাকা। কিন্তু ৫ বছর পর দেখা যাচ্ছে, ডাক্তারদের বেতন ঘ% বেড়ে প্রকৌশলীদের বেতনের কাছাকাছি চলে এসেছে, যেখানে প্রকৌশলীদের বেতন মোটামুটি একই রয়েছে। নার্সদের বেতন কিছুটা বাড়লেও তারা তিন পেশার মধ্যে সবচেয়ে কম বেতনভোগী হিসেবেই রয়ে গেছে…”, তাহলে কী দেখা যাচ্ছে? প্রতিটা লাইনই যুক্তিযুক্ত। Right?
৩) বিকল্প ভোকাবুলারি ব্যবহার করতে হবে।
সবাই যে শব্দটা লিখবে, আপনি সেটার বদলে বিকল্প শব্দ ব্যবহার করলে অবশ্যই পরীক্ষকের মনে দাগ কাটতে পারবেন। যেমন: সবাই খাওয়ার ইংরেজি eat লিখল, আর আপনি লিখলেন consume; সবাই গাড়িকে car লিখল, আর আপনি লিখলেন motor vehicle, automobile । এছাড়া প্রশ্নে যে ভোকাবুলারি ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলোও লেখা উচিত নয়। এতে নাম্বার কমে যায়। সেগুলোর বদলে সমার্থক শব্দ (Synonym) ব্যবহার করুন।
৪) জটিল বাক্য, খণ্ড বাক্য ইত্যাদি ব্যবহার করতে হবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মনের ভাব প্রকাশ করার জন্য আমরা সরল বাক্য ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু ভালো স্কোরের জন্য কষ্ট করতে হয়। যেমন, “Everyday I go to school by school bus. After coming back to home, I take my lunch. In the evening time, I go to play” না লিখে যদি একটু ঘুরিয়ে লিখেন “My school bus picks me up on a daily basis. After returning home, I usually have my lunch around 2 pm and go for playing with friends on the evening”, তাহলেই অন্যদের চেয়ে আলাদা হয়ে গেলেন।
৫) টাস্ক ১-এ শতকরা ব্যবহার করতে হবে।
টাস্ক ১-এর রাইটিংয়ে ভালো স্কোর তোলার আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট হল, প্রশ্নে যা লেখা থাকে, সেটাকে শতকরা বা percentage-এ প্রকাশ করা। যেমন, প্রশ্নে উল্লেখ আছে “ঢাকা শহরের মোট জনসংখ্যার (১০০০ জন) মধ্যে ৩০ জন ডাক্তার, ৪০ জন প্রকৌশলী এবং ১০ জন নার্স আছেন। এদের মধ্যে ডাক্তারদের বেতন সবচেয়ে বেশি।” রচনা লেখার সময় এই সংখ্যাগুলোকে আপনি শতকরায় প্রকাশ করে বাক্য গঠন করুন। যেমন, Total 3% of the population is medical doctors in Dhaka city and they enjoy the highest salary if compared with other professions.”
প্রশ্ন আসতে পারে, কেন শতকরায় প্রকাশ করতেই হবে? করতে হবে কারণ প্রশ্নে যেভাবে তথ্য উল্লখে করা থাকে, তাকে সরাসরি উঠিয়ে দিলে মার্কস ভালো আসবে না। ঐ তথ্যকে নতুনভাবে প্রকাশ করতে হবে।
একইভাবে, প্রশ্নে কোনো তথ্য শতকরায় উল্লেখ করা থাকলে আপনি সেটাকে পূর্ণ সংখ্যায় প্রকাশ করে লিখুন।
৬) Phrase ব্যবহার করতে হবে।
বিভিন্ন ডাইরেকশন বুঝাতে অবশ্যই Phrase ব্যবহার করবেন। যেমন: রাইটিং টাস্ক ১-এর গ্রাফে যদি দেখা যায় কোনোকিছু দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে, তাহলে increase, rise up-এর বদলে লিখতে পারেন uplifted, rocketed, upsurged; খুবই দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পেলে ভার্বের আগে sharply, dramatically ইত্যাদি adjective বসান; ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেলে gradually, slowly ইত্যাদি adjective বসান; যদি সাম্যাবস্থায় চলে আসে তাহলে stabilized, leveled off ইত্যাদি; কমলে/হ্রাস পেলে decrease/fell down-এর পরিবর্তে dropped, plummeted ইত্যাদি লিখতে পারেন।
এরকম আরও অনেক প্রতিশব্দ (synonyms) আছে, যেগুলো আপনাকে মনে রাখতে হবে। এগুলো টাস্ক ১ আর টাস্ক ২ – দুটোর জন্যেই জরুরি। আর প্র্যাকটিস হল মনে রাখার সবচেয়ে সহজ উপায়। আমি এসব শব্দ ঝাড়া মুখস্ত করিনি। বরং বিভিন্ন বিষয়ের উপর যখন আর্টিকেল লেখা প্র্যাকটিস করতাম, তখন একেক আর্টিকেলে একেক ধরনের শব্দ ব্যবহার করতাম। এভাবে অনেক শব্দ মাথায় গেঁথে গিয়েছিলো। আর পরীক্ষায় যেহেতু মাত্র দুটো আর্টিকেল লিখতে হয়, তাই আমার মাথায় জমা হওয়া অনেকগুলো Phrase থেকে সুযোগ বুঝে বেস্ট Phrase-টা ব্যবহার করতে পেরেছিলাম।
৭) রাইটিং টাস্ক ২-তে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ টানতে হবে।
ধরুন, আপনাকে টপিক দেওয়া হল “Now a days internet is helpful to store huge amount of information”। এই স্টেটমেন্টের ব্যাপারে আপনার মতামত জানতে চাওয়া হল। আপনি এর পক্ষে, বিপক্ষে কিংবা নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে আপনার মতামত দিতে পারেন। তো, আপনি পক্ষে লিখতে চাচ্ছেন। এজন্য একটা উদাহরণ টানলেন এভাবে, “Even before the 90’s, when internet was not so available to the populous, paper was the only way for the multitude to store information. But as the technology develops/prospers, many divergent devices are seen to be used as a storage of information, such as compact disc, floppy disc, pen drive, hard disc etc. However, these gadgets have their limits. Some have only 64 gigabyte memory, some up-to 2 terabyte. But internet, literally, knows no boundary. We can stock limitless data here.”
এই উদাহরণ দিয়ে কি আপনার পক্ষকে আরও শক্তিশালী করলেন না? এভাবে দৈনন্দিন জীবন থেকে প্রাসঙ্গিক উদাহরণ দিতে হবে। তিনটা, চারটা উদাহরণ দিলে ভালো।
উদাহরণটির মাধ্যমে আমি বেশ কিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছি। যেমন, প্রথম লাইনে দেখুন কমার মাঝখানে একটা খণ্ড বাক্য জুড়ে দিয়ে পুরো বাক্যকে জটিল বানিয়েছি। People-এর পরিবর্তে populous আর multitude বসিয়েছি। Different-এর বদলে divergent, store-এর বদলে stock, information-এর বদলে data বসিয়েছি। এছাড়া However আর knows no boundary বসিয়ে বাক্যকে সুন্দর করেছি। এভাবে সুযোগ বুঝে বিভিন্ন phrase; nevertheless, nonetheless, although ইত্যাদি শব্দ ব্যবহার করবেন।
৮) গ্রামার ১০০% ঠিক রেখে লিখতে হবে।
একটা বাক্য লিখতে গিয়ে যদি verb-এ গণ্ডগোল করেন, বা gerund/tense ইত্যাদিতে ভুল করেন, স্বাভাবিকভাবেই স্কোর কমে যাবে। তাই যখন বাসায় প্র্যাকটিস করবেন, চেষ্টা করবেন ইংরেজি গ্রামারে দক্ষ কাউকে দিয়ে লেখাগুলো চেক করিয়ে নিতে।
৯) বানান ঠিক রাখতে হবে।
এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটা ভালো লেখা মুহূর্তে নষ্ট হয়ে যেতে পারে বানান ভুলের কারণে।
১০) শব্দ সংখ্যা সঠিক রাখতে হবে।
IELTS-এর টাস্ক ১-এর জন্য মিনিমাম রেঞ্জ দেওয়া থাকে ১৫০ শব্দ, আর টাস্ক ২-এর জন্য ২৫০ শব্দ। অবশ্যই এর চেয়ে বেশি লিখুন, সমস্যা হবে না কোনো। কিন্তু কম লেখা যাবে না, নাম্বার কাটা যাবে।
১১) ক্ষেত্রবিশেষে Passive voice ব্যবহার করতে হবে।
সবসময় “I did this job, He introduces his mother to me” ধরনের Active voice না লিখে “That job was done by me, His mother was introduced by him” ধরনের Passive voice লেখা দরকার। এতে লেখায় বৈচিত্র্য আসে, আর বৈচিত্র্য মানেই বেশি নাম্বার পাওয়ার সুযোগ!
১২) প্রবাদ/উক্তি ব্যবহার করতে হবে।
এই পয়েন্টটা অপশনাল। চাইলে প্রয়োগ ঘটাতে পারেন, না চাইলে নাই। সবসময় প্রবাদ, প্রবচন, উক্তি লেখার মত পরিস্থিতি তৈরি হয় না। সুযোগ আসলে যদি একটা দুটো লিখতে পারেন, বেস্ট! যেমনঃ Necessity is the mother of invention, আইনস্টাইনের উক্তি ‘Imagination is more important than knowledge’ ইত্যাদি হরেক রকমের বাক্য আপনি অলংকার হিসেবে রচনায় ঢুকাতে পারেন।
আজ এ পর্যন্তই, পরবর্তী পোস্ট আসবে রিডিং সেকশন নিয়ে। সবাইকে ধন্যবাদ
কোন মন্তব্য নেই