মাউস কী ? মাউস কত প্রকার ও কি কি – (মাউস পরিচিতি) Muhammed Juwel Ahmed


আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানবো, মাউস কী (What is mouse in Bangla)মাউস কত প্রকার ও কি কি ? (types of computer mouse) এবং সম্পূর্ণ কম্পিউটার মাউস পরিচিতি বাংলাতে। 

মাউস কী, মাউস কত প্রকার
About computer mouse

আজকাল আমাদের প্রত্যেকের ঘরে বা দপ্তরে কম্পিউটার বা ল্যাপটপ রয়েছে, আর কম্পিউটার বা ল্যাপটপ ব্যবহার করার ক্ষেত্রে একটি মাউস এর ব্যবহার অবশই করতে হয়।

এক্ষেত্রে, আপনার মনে একবার হলেও কম্পিউটার মাউস এর বিষয়ে অধিক বিস্তারিত ভাবে জানার ইচ্ছে অবশই হয়েছে হয়তো।

অন্যান্য প্রত্যেকটি device গুলো যেমন, monitor, keyboard, speaker ইত্যাদি গুলোর মতোই মাউসের গুরুত্ব অবশই প্রচুর রয়েছে।

কেননা, একটি মাউস ছাড়া আপনি নিজের Personal Computer (PC) সঠিক এবং সুবিধাজনক ভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেননা।

মাউস হলো কম্পিউটারের হাতের মতোই যেটার মাধ্যমে একটি কম্পিউটার বিভিন্ন ধরণের কাজ গুলো করতে পারে।

আমরা সাধারণত, যেকোনো জিনিস ওঠাতে, ধরতে, বা স্থানান্তর করার ক্ষেত্রে নিজের হাতের ব্যবহার করে থাকি।

তবে যদি এই কাজ গুলোকে একটি কম্পিউটাররের মাধ্যমে করতে বলা হয় তখন আপনি কিভাবে করবেন ? কম্পিউটারের কাছে তো হাত নেই, তাহলে কম্পিউটার কিভাবে এই কাজ গুলো করতে পারবে ?

দেখতে গেলে, কম্পিউটারের কাছেও এই ধরণের কাজ গুলো করার ক্ষেত্রে একটি আলাদা রকমের হাত রয়েছে।

আর এই হাত টিকে আমরা মাউসের (mouse) এর নামেও জেনে থাকি।

তাহলে চলুন, নিচে আমরা বিস্তারিত ভাবে জেনেনেই, কম্পিউটার মাউস কাকে বলে (what is a computer mouse) এবং মাউস এর আলাদা আলাদা প্রকার গুলোর বিষয়ে।

মাউস কী ? ( What Is Mouse in Bangla)

সরাসরি বললে, মাউস হলো একটি ইনপুট ডিভাইস (input device), যেটার আসল বা মূল নাম হলো pointing device.

মাউস এর মূল কাজ হলো ইউসার দ্বারা কম্পিউটারে ইনপুট প্রদান করা বা ইউসার দ্বারা কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়া।

এর ব্যবহার করা হয়, “কম্পিউটার স্ক্রিনে আইটেম এর নির্বাচন করা”, “আইটেম গুলোকে খোলা বা বন্ধ করা”, “কপি – পেস্ট করা” ইত্যাদির ক্ষেত্রে।

সোজা ভাবে বললে, একটি মাউস এর ব্যবহার করে একজন ইউসার কম্পিউটারের স্ক্রিনে যেকোনো জায়গাতে পোঃচাতে পারবেন।

এখন এতটা কাজের একটি কম্পিউটার ডিভাইস এর আবিষ্কার কে করেছেন সেটাও হয়তো আপনার জানতে ইচ্ছে করছে, তাই তো।

জেনেরাখুন, কম্পিউটার মাউস এর আবিষ্কার করেছিলেন Douglas C. Engelbart নামের একজন electrical engineer দ্বারা 1963 সালে করা হয়েছিল।

Mouse এর প্রচুর আলাদা আলাদা মডেল (model) রয়েছে এবং মডেল হিসেবেই আলাদা আলাদা features এবং connectivity options আমরা পেয়ে থাকি।

কিন্তু সাধারণত, প্রায় প্রত্যেক মাউস গুলোতে দুটো mouse button এবং একটি scroll wheel দেখা যায়।

মাউস এর মধ্যে থাকা মুখ্য বাটন গুলোকে বলা হয় “Primary Button (Left Button)” এবং “Secondary Button (Right Button)“.

সাধারণত এই বাটন গুলোকে আমরা, Right Click এবং Left Click হিসেবে বলে থাকি।

তবে, বর্তমানের আধুনিক mouse গুলোতে ৩ টির থেকেও অধিক buttons দেওয়া দেখা যাচ্ছে যেগুলোর কিছু অন্যান্য কাজ রয়েছে।

মাউস এর ফুল ফর্ম (full form) কি ?

Mouse শব্দের একটি full-form রয়েছে যেটা হলো, “Manually Operated Utility For Selecting Equipment”.

আমাদের মধ্যে অনেকেই এই বিষিয়ে জানিনা যে মাউস এর একটি পূর্ণরুন বা ফুল-ফর্ম রয়েছে।

মাউস এর সংজ্ঞা – (Definition of mouse in Bangla)

Mouse হলো একটি ছোট pointing device যেটাকে desk surface এর মধ্যে রেখে একজন computer user দ্বারা ব্যবহার করা হয়।

এর মাধ্যমে display screen এর মধ্যে point, select, click, drag, drop এবং scroll ইত্যাদির করা হয়।  এছাড়া, text selection, copy, paste ইত্যাদি বিভিন্ন actions গুলোকে mouse এর দ্বারা করা সম্ভব।

মাউসকে আবার “pointer” এর নাম দিয়েও বলা হয়।

কম্পিউটার মাউস এর জনক কে ছিলেন ?

Mouse বলতে মূলত X-Y Position Indicator হিসেবে বলা হয় যেটাকে বিভিন্ন display system গুলোতে ব্যবহার করা হয়।

১৯৬৩ সালে Douglas Engelbart দ্বারা mouse এর আবিষ্কার (invention) করা হয়।

সেই সময় Douglas কাজ করছিলেন Xerox PARC এর সাথে।

এটা এতটা বিখ্যাত হয়ে দাঁড়ালো যে, এই pointing device টিকে আজ আমরা প্রত্যেকটি কম্পিউটারের সাথে দেখতে পারছেন।

মাউস এর কাজ কি ? (Function of mouse)

এখন নিচে আমরা এক এক করে মাউস এর কাজ বা ফাঙ্কশন গুলোর বিষয়ে জানবো।

১. Mouse cursor সরানো: এটা হলো একটি mouse এর primary function যেখানে mouse cursor টিকে স্ক্রিনে move করা হয়।

২. Open or execute a program: মাউস এর ব্যবহার করে ইউসার যেকোনো icon, folder,বা যেকোনো অন্যান্য program গুলোতে click করে সেগুলোকে open বা execute করে থাকেন।

৩. Select: Mouse এর ব্যবহার text গুলোকে select করার জন্য এবং সেগুলোকে highlight করার জন্য করা যেতে পারে।

৪. Drag-and-drop: Mouse এর ব্যবহার করে একজন user অনেক সহজে documents গুলোকে drag-and-drop করতে পারবেন।

৫. Hover: মাউস এর ব্যবহার করে যেকোনো object এর ওপরে hover করা যেতে পারে। Hover সেই প্রক্রিয়া বা সময়টিকে বলা হয় যখন আপনি মাউসের কার্সরটিকে যেকোনো object এর ওপরে নিয়ে যাবেন এবং তার মাদ্ধমে আপনাকে কিছু তথ্য প্রদান করা হয়।

৬. Scroll: মাউস এর মাধ্যমে আমরা স্ক্রিনের থেকে বড় বা লম্বা documents বা page গুলোকে দেখার জন্য নিচে এবং ওপরে স্ক্রল (scroll) করতে পারি।

কম্পিউটার মাউস কত প্রকার ও কি কি ?

একটি মাউস অনেক আলাদা আলাদা রকমের হতে পারে। তবে, মূলত ৫ টি আলাদা আলাদা প্রকারভেদ হিসেবে মাউসের প্রকার গুলোকে তুলে ধরা যেতে পারে।

  • Mechanical Mouse
  • Optical Mouse
  • Wireless Mouse
  • Trackball Mouse
  • Stylus Mouse

চলুন, নিচে আমরা প্রত্যেকটি প্রকার গুলোর বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করে নেই।

Mechanical Mouse

এই ধরণের মাউস এর আবিষ্কার করা হয়েছিল 1972 সালে Bill English এর দ্বারা।

ম্যাকানিক্যাল মাউস নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে এক ধরণের ছোট বল (ball) এর ব্যবহার করে থাকে।

আর এটাই কারণ যার জন্যে একে Ball Mouse বলেও বলা হয়।

এই মাউসে থাকা বল টিকে ডানদিকে, বামদিকে বা উপর এবং নিচে ঘুরানো সম্ভব।

এই ধরণের মাউস গুলো আগেকার পুরোনো সময়ের কম্পিউটার গুলোর সাথে অধিক ব্যবহার করা হতো।

Optical Mouse

এই ধরণের মাউস গুলো আধুনিক কম্পিউটার সিস্টেম গুলোতে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয়।

এই মাউস LED – Light Emitting Diode এবং DSP – Digital Signal Processing প্রযুক্তির সাথে কাজ করে থাকে।

Optical Mouse এর মধ্যে কোনো ধরণের ball ব্যবহার করা হয়না।

তবে, বল (ball) এর জায়গাতে একটি ছোট বাল্ব লাইট লাগানো থাকে।

আর তাই, মাউসটি নড়াচড়া করলেই মাউস এর পয়েন্টার হিলতে শুরু করে।

Optical mouse গুলোকে একটি তারের (wire) মাধ্যমে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করা হয়।

এই ধরণের আধুনিক মাউস গুলো ইউসার এর জন্য প্রচুর সুবিধাজনক হয়ে থাকে।

Wireless Mouse

যেগুলো mouse কত তার ছাড়া বেতার মাধ্যমে কম্পিউটার এর সাথে সংযুক্ত হয়ে থাকে, সেগুলোকে বলা হয় wireless mouse.

Wireless mouse গুলো বর্তমান সময়ে প্রচুর পরিমানে ব্যবহার করা হয় যেকোনো desktop computer বা laptop এর সাথে।

এই ধরণের mouse গুলোকে Cordless Mouse বলেও বলা হয়।

Wireless mouse গুলো মূলত Radiofrequency (RF) প্রযুক্তির সাথে কাজ করে থাকে, তবে এদেরকে Optical Mouse এর মতোই বানানো হয়।

ওয়্যারলেস মাউস গুলোকে কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত করে ব্যবহার করার জন্য একটি Transmitter বা Receiver এর প্রয়োজন হয়ে থাকে।

Transmitter টি mouse এর মধ্যেই লাগানো থাকে এবং Receiver টিকে আলাদা ভাবে তৈরি করা হয় যেটাকে কম্পিউটারের মধ্যে লাগাতে হয়।

এই ধরণের মাউস গুলো ব্যবহার করার জন্য মাউসে আলাদা ভাবে ব্যাটারী সংযোক করতে হয়।

Trackball Mouse

এই ধরণের mouse গুলোকেও দেখতে প্রায় Optical Mouse এর মতোই লেগে থাকে।

তবে, অপটিক্যাল মাউসের মতো দেখতে হলেও এগুলোতে নিয়ন্ত্রণের কাজের ক্ষেত্রে Trackball ব্যবহার করা হয়।

কম্পিউটারকে নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে, ইউসারকে নিজের আঙুলের বা থাম্ব এর ব্যবহার করে বল টিকে ঘুরাতে হয়।

এই ধরণের মাউস ব্যবহার করাটা তেমন সুবিধাজনক হয়ে থাকেনা।

Stylus Mouse

এই ধরণের মাউস গুলোকে gStick Mouse বলেও বলা হয়।

কারণ Stylus Mouse এর আবিষ্কার করা হয়েছিল Gordon Stewart এর দ্বারা।

আর তাই, বলা যেতে পারে যে gStick এর “G” মানে হলো “Gordan”.

এই ধরণের মাউস দেখতে একটি কলমের মতো হয়ে থাকে যেখানে একটি চাকার মতো (wheel) অংশ রয়েছে।

এই মাউস টিকে কলমের মতো ধরে চাকাটিকে ওপর নিচে করে কার্সর টি নিয়ন্ত্রণ করা বা হেলানো সম্ভব।

এর ব্যবহার মূলত Touchscreen Devices গুলোতে করা দেখা যায়।

 

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বন্ধুরা, আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা, মাউস কী”, “মাউস এর পরিচিতি”, “মাউস কত প্রকার ও কি কি” ইত্যাদি কম্পিউটার মাউস নিয়ে সমস্ত বিষয় গুলো জানতে পারলাম। 

আমাদের আজকের আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে আর্টিকেলটি অবশই সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.