১২+ রোমান্টিক কথা বলার কৌশল । কিভাবে রোমান্টিক কথা বলতে হয় |Muhammed Juwel Ahmed |

রোমান্টিক কথা বলার কৌশল: প্রেম করেন আর রোমান্স বোঝেন না ? কিংবা আপনার গার্লফ্রেন্ড মাঝেমাঝেই কমপ্লেইন করে যে রোমান্সের অভাবে আপনি বোরিং হয়ে যাচ্ছেন ? তাহলে, এই আর্টিকেলটি সম্পূর্ণভাবে আপনার জন্যে! 
রোমান্টিক কথা বলার কৌশল
রোমান্টিক ভাবে কথা বলুন এভাবে।

আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা সম্পূর্ণ স্পষ্ট করে জেনেনিব, কিভাবে রোমান্টিক কথা বলতে হয় বা কিভাবে রোমান্টিক হওয়া যায়। মূলত কিছু সেরা রোমান্টিক হওয়ার উপায় গুলো আপনারা আর্টিকেলের মাধ্যমে জানবেন। 

প্রেম-ভালোবাসা অনেকে করলেও, রোম্যান্স ধরে রাখার ক্ষমতা সবার থাকে না।

আর, রোমান্টিক কথা বলার জন্যে যে আপনাকে রোমান্টিক হতেই হবে, তা কিন্তু নয়।

আসলে, নিজেকে রোমান্টিকভাবে প্রেসেন্ট করতে গেলে আপনার প্রয়োজন রোমান্টিক কথা বলার কিছু সেরা কৌশল গুলো জানা। 

আর, এই কৌশলগুলো আমরা বিস্তারে এই আর্টিকলে আলোচনা করলাম, যা আপনাদের প্রেমকে আজীবন এভার-গ্রিন করে রাখবে।

১২টি রোমান্টিক কথা বলার কৌশল / টিপস / উপায়

আপনি যদি ভাবছেন, কিভাবে রোমান্টিক হওয়া যায় তাহলে আপনি আপনার কথার মাধ্যমেই রোমান্টিক হতে পারবেন। 

তবে অনেকেই আছেন যারা এই ধরণের কৌশল গুলো জানেননা, তবে জীবনে কিছুটা রোমান্টিক কিন্তু প্রত্যেকের ক্ষেত্রেই হওয়া জরুরি।

আসুন, তাহলে জেনে নেওয়া যাক, বেশ কয়েকটি কৌশল গুলোর বিষয়ে যেগুলো রোমান্টিক ভাবে কথা বলার ক্ষেত্রে জরুরি।

১. কম্পলিমেন্ট দেওয়া:

মানুষ প্রশংসা পেতে ভীষণ পছন্দ করে। আর রোমান্টিক হতে গেলে, আপনার দরকার প্রশংসা / কম্পলিমেন্ট করার দারুন একটা রাস্তা জানার।

আপনার গার্লফ্রেন্ড হোক, বয়ফ্রেন্ড, বৌ কিংবা বর, কমপ্লিমেন্ট ইস আ মাস্ট।

দিন শুরু করুন কিছু বেসিক কমপ্লিমেন্ট দিয়ে, যেমন , ‘ওয়াও! এই পিঙ্ক ড্রেসটা পরে তোমাকে জাস্ট ফাটাফাটি লাগছে।’,

কিংবা “বাহ! আজকের মর্নিং টি-টা (tea) খুব ভালো হয়েছে।”

জাস্ট ক্যাজুয়াল কতগুলো কম্প্লিমেন্টই কিন্তু আপনাকে আপনার সঙ্গীর কাছে রোমান্টিক করে তুলতে পারেন । 

২. ক্রিয়েটিভ হন:

কথার মধ্যে রোমান্টিকভাব ফুটিয়ে তুলতে আপনাকে একটু ক্রিয়েটিভ হতে হবে।

তার জন্যে নির্দিদ্ধায় গুগল বাবাজির থেকে কোটস বা পংক্তি ধারও করতে পারেন।

নাহলে, আপনি নিজেও আপনার মস্তিষ্ক প্রসূত প্রেমবাণী আওড়াতে পারেন, আপনার ভালোবাসার মানুষের সামনে।

কারণ, জিগার মোরাদাবাদী তাঁর একটি অতি জনপ্রিয় হিন্দি শের বা পংক্তিতে বলেছেন,

“ইয়ে ইশ্ক নেহি আসান, বাস্ ইতনা সমাঝ লিজিয়ে, ইয়ে এক আগকা দরিয়া হ্যায়, অউর ডুবকে জানা হ্য়ায়।”

অর্থাৎ, ভালোবাসা সহজ মোটেও নয়। শুধু জেনে নিন, প্রেম হল এক আগুনের সমুদ্রের মতো, আর আপনাকে এই সাগরে ডুব দিয়ে এগোতে হবে।

না না! ভয় পাবেন না, আপনাকে সত্যি-সত্যিই আগুনের সাগরে ঝাঁপ দিতে হবে না।

এটা আসলে, একটা আদ্যোপান্ত রোমান্টিক সের’ও’শায়েরি।

এই ধরণের সের আপনার মেহেবুবা বা জানেমনকে দু’একটা মাঝে মাঝে শুনিয়ে দিতে পারেন।

তাতে, আপনার প্রেমিকাও খুশি, আর আপনিও খুশি।    

৩. লেইম জোক বলুন:

আসলে কি জানেন, যে অনেক মেয়েরাই একটু কিউট বা বোকা-বোকা হাস্যকর কথা বলা ছেলেদের বেশ পছন্দ করে কিংবা তাদের রোমান্টিকও ভেবে থাকে ? না জেনে থাকলে, এক্ষুনি জানুন! কারণ এইটা কিন্তু ,মেয়েদের মন জয় করার একটা নিনজা টেকনিক। 

আগে যখন এসএমএসের সময় ছিল, তখনকার ছেলে-মেয়েরা অনেক লেম জোক শেয়ার করতো, তবে এখন তো মিম শেয়ারের জমানা।

ভাবুন তো একবার, যার উপর আপনি একদম ক্রাশ খেয়ে বসে আছেন, যে আপনার লেইম জোক শুনে আপনারই প্রেমে পড়ে গেল।

এর থেকে রোমান্টিক আর কিছু হতে পারে নাকি!

কথায় কথায় ধরুন, আপনি বললেন, ‘যে আজকাল আমি আর চাঁদ দেখি না!’ উল্টে আপনার ক্রাশ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করতেই পারে, “কেন?’ তখন আপনি বলতেই পারেন, “চাঁদ দেখার দরকার হলে, আমি তোমার ফেইসবুক প্রোফাইলের ছবিগুলো দেখেনি, তাহলেই চাঁদ দেখা হয়ে যায়!”

শুনতে বোকা বোকা লাগলেও, এটা কিন্তু বেশ রোমান্টিক আর একটি হেলথি ফ্লার্টিং টিপসও বটে!

এরকম অনেক ইউনিক আইডিয়া আপনি সহজেই নেট থেকে পেয়ে যাবেন কিংবা নিজেও মাথা থেকেও বের করতে পারবেন এইরকম সিলি জোকস।

৪. মনের ভাব সম্পূর্ণভাবে এক্সপ্রেস করতে শিখুন:

আপনার রোমান্টিক চিন্তাভাবনা গুলো আপনার প্রিয় মানুষের সামনে বলতে শিখুন।

মাঝে মাঝে আপনার ফ্যান্টাসির কথাগুলোও তাদের সাথে বলতে পারেন। এতে আপনাদের সম্পর্কের গভীরতা বাড়বে। 

আপনার ইমাজিনেশনের কথা ভেবে আপনার প্রেমিকা আপনাকে রোমান্টিকও ভেবে ফেলতে পারেন।

যেমন, আপনার হয়তো ইচ্ছে রয়েছে গভীররাতে পূর্ণিমার চাঁদকে সঙ্গে করে শুনশান বিচে আপনি আপনার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে সমুদ্রের ধার বরাবর হাঁটবেন।

তাকে গিয়ে আপনার এই মনের ইচ্ছের কথা বলুন, দেখবেন আপনার প্রেমিকাও এটা শোনার পর খুশি হয়ে যাবেন।

৫. কেমিস্ট্রি জমাতে শিখুন:

আপনার ভালোবাসার মানুষকে আপনার থেকে বেশি আর কেউ চিনতেই পারেনা।

তাই বলিউডের রোমান্টিক সিনেমার নায়ক-নায়িকার মত কেমিস্ট্রি তৈরি করুন। 

প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে রোমান্সের সংজ্ঞা আলাদা হতেই পারে। 

তাই, কোন সময়ে কোন কথাটা বললে আপনার প্রেমিকার বা প্রেমিকের মন গলবে, সেটা টোটালই আপনাদের কেমিস্ট্রির উপর নির্ভর করছে।

ধরুন, আপনি দেরি করে পৌঁছনোর কারণে আপনার প্রেমিকা আপনার ওপরে রেগে এক্কেবারে বোম হয়ে আছে,

সেক্ষেত্রে, আপনি নিজেকে বাঁচানোর জন্যে বলে উঠতেই পারেন, ‘ যাই গে, একটা ডিম নিয়ে আসি, মহারাণীর মাথা এমন গরম হয়ে আছে, যাতে একটা ডিমের অমলেট তো আরামসে হয়ে যাবে মাথার গরমে!’ 

এটা শুনতেও অনেকটা রোমান্টিক আবার তার গোঁসার হাত থেকে বাঁচানোরও একটা দুর্দান্ত টেকনিক।

৬. নিজের বাচনভঙ্গির উপর আত্মবিশ্বাসী হন:

রোমান্টিক মানুষেরা খুব বেশি ডেসপারেট হয়ে থাকে। যাতে, তাদের কথাবার্তায় আত্মবিশ্বাস ফুটে ওঠে। 

তাই, আপনার সামনের মানুষটিকে যে কথাই বলুন না কেন, আপনার গলায় যদি আত্মবিশ্বাস থাকে, তবে এমনিই আপনাকে রোমান্টিক শোনাবে।

৭. আবেগ প্রবণ হন:

প্রেম করলেন, তবে আবেগে ভাসলেন না! তাহলে আপনি ক্যামনে রোমান্টিক হলেন ? রোমান্টিক বুলি আওড়াতে গেলে একটু-আধটু আবেগী হতে হয় বৈকি! 

প্রেম মাঝে মাঝে মুখে বলেও যে প্রকাশ করতে হয়, তাই নিজের অভিব্যক্তির উপর একটু কাজ করুন।

আপনার সামনের মানুষকে বোঝান, তাকে ছাড়া আপনার জীবন কতটা অসম্পূর্ণ। 

যেটা আপনি মুখে বলতে চান, সেটা যেন আপনার চোখে-মুখেও ফুটে ওঠে সেই বিষয়েও খেয়াল রাখুন। 

৮. ভালোবাসার মানুষকে রাজা-রানীর মত ট্রিট করুন:

কথায় শুধুমাত্র রোমান্টিক হলে কিন্তু সবসময় চিঁড়ে ভেজে না। আপনার হাবভাবেও কিন্তু রোমান্টিকতা ফুটিয়ে তুলতে হবে।

ধরুন, তার সাথে দেখা করার সময় তার জন্যে ফুল নিয়ে গেলেন, বা সে যা ভালোবাসে তাকে সেটা গিফট করলেন।

এগুলোর মাধ্যমেও কিন্তু রোমান্টিকতা প্রকাশ করা যায়। আসলে, একটু-আধটু স্পইলড হতে কে না চায়!

৯. রোমান্টিক নভেল বা সিনেমা থেকে ইন্সপায়ারড হন:

টাইটানিকের জ্যাক নাইবা হলেন, তবে রোমান্টিক সিনেমা বা নভেল থেকে রোমান্টিক পাঠ কিন্তু দিব্যি পাওয়া যায়।

সবাই তো আর সর্ষে ক্ষেতে গিয়ে ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গের’ শাহরুখের মত গান গাওয়ার মত রোমান্টিক কাজ করতে পারে না। 

তবে, হোয়াটসঅ্যাপ ভয়েস রেকর্ড ব্যবহার করে একটা গান, কবিতা বা ভয়েস নোট তো শেয়ার আমরা করতেই পারি কিছুটা রোমান্টিক হওয়ার ক্ষেত্রে। 

১০. ফোন রোমান্স:

আভিজাত্যময় ইটালিয়ান হোয়াইট টেলিফোনিক জমানা না থাকলেও, এটা মানতেই হবে যে, ফোনের মাধ্যমে রোমান্স করার মজাই কিন্তু আলাদা।

রাত জেগে ফোনে নিজের ভালোবাসার মানুষের সাথে একদিনও কথা বলেননি এরকম মানুষ মনে হয় আজকের দিনে খুঁজে পাওয়া অসম্ভব।

তাই, রাত জেগে ফোন করে কথা বলাটাও কিন্তু অনেক মানুষের কাছে বেশ একটা রোমান্টিক ব্যাপার। কারণ, ‘A lot can happen over a phone call!

১১. সময়-জ্ঞান থাকাটা জরুরি:

এটা সবসময় জানবেন, সব মানুষ সবসময় রোমান্টিক মুডে থাকবে এমনটা হয় না। তাই, চেষ্টা করবেন সময় বুঝে রোমান্টিক কথা বলতে।

ধরুন, আপনার প্রেমিকের মন খারাপ, এমন সময় আপনি রোমান্টিক কথা বলা শুরু করলে কিন্তু আসলেই বিপদ।

আপনাকে সে তখন ইন্সেনসিটিভ ভেবে বসতে পারে। সেক্ষেত্রে, অবস্থা বুঝে রোমান্টিক হওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

১২. রোমান্টিকতা আপনার ব্যক্তিত্বের মধ্যে ফুটিয়ে তুলুন:

মনে রাখবেন, আপনার ব্যক্তিত্বই কিন্তু আপনার মনের আয়না। তাই, যথাসম্ভব চেষ্টা করবেন আপনার চেহারায় রোমান্টিকতা ফুটিয়ে তুলতে।

এর জন্যে আপনাকে অভিনয় করতে হবে না।

শুধু ভালো ভালো প্রেমের গল্প পড়ুন, দেখুন ও নিজের জীবনের সাথে কিভাবে সেগুলোকে মেলাতে পারেন, সেই কথা ভাবুন।

দেখবেন, আসলেই আপনি রোমান্টিক হয়ে উঠেছেন আর রোমান্টিক কথা নিজের থেকেই আপনার মুখ থেকে বেরোচ্ছে।

১৩. ডেট প্ল্যান করুন

নিজের প্রিয়জনের সাথে হটাৎ ডেট প্ল্যান করাটা কিন্তু সাংঘাতিক রোমান্টিক একটি বিষয়।

চলোনা আজকে দুপুরের খাবারটা কোনো রেস্টুরেন্টে গিয়ে খেয়ে আসি, এতটুকু বললেই আপনার প্রিয়জন মনে মনে অনেক খুশি হয়ে যাবেন।

এবং রেস্টুরেন্টের মধ্যে বসে আপনারা ভালো ভালো কথা বলতে পারেন যেমন, আপনাদের বিয়ের পরিকল্পনা বা প্লানিং করা, বিয়ের পর কোথায় ঘুরতে যাবেন বা প্রিয়জনের কিছু সাধারণ প্রশংসাই করতে পারেন।

এভাবে কিছু সাধারণ কথা গুলোর মাধ্যমে আপনাদের মধ্যে একটি রোমান্টিক ভাব তৈরি হবে।

পরিশেষে

আসলে, রোমান্টিকতা কিন্তু কেউই শিখে আসেনা। মানুষের মেলামেশা, তার আশপাশের পরিবেশ আর তার যেদিকে ঝোঁক থাকে, সে সেখান থেকেই তার আচার-ব্যবহার কিংবা ব্যক্তিত্বকে গ্রহণ করতে শেখে। 

আর, রোমান্টিক হয়ে ওঠা বা রোমান্টিক কথা বলাটা পুরোটাই প্রতিটা ব্যক্তি বিশেষের উপর নির্ভর করে।

ঠিক এই কারণেই, রোমান্টিক হয়ে ওঠা একধরনের প্রক্রিয়ার মত, যা অনেক ভেবেচিন্তে মানুষ নিজের মধ্যে ধারণ করে।

তাই, একটা সুন্দর, পরিষ্কার মন থেকেই সৃষ্টি হয় রোমান্টিকতার।

এই কারণেই রোমান্টিক কথা বলার কৌশল রপ্ত করতে গেলে প্রথমে নিজের মনটা পরিষ্কার রাখা একান্ত জরুরি।

আজকের আমাদের এই রোমান্টিকতা বিষয়ক আর্টকলটি এখানেই শেষ হল।

আর্টিকেলটি পড়ে ভালো লাগলে তা আপনারা কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই জানাবেন।

এছাড়া, কিভাবে রোমান্টিক কথা বলতে হয় এই বিষয় নিয়ে কোনো অন্যান্য প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে সেটাও কমেন্টের মাধ্যমে অবশই জানাবেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.