অনলাইনে যেভাবে সার্টিফিকেটের ভুল সংশোধন করবেন ? জুয়েল আহমেদ বিস্তারিত পড়ুন ।


🚹 নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জুয়েল আহমেদ 
তারিখঃ  ১৮ অক্টোবর ২০২১ ইংরেজি, রোজ সোমবার, সময় ২ঃ১০মিনিট । 

অনলাইনে যেভাবে সার্টিফিকেটের ভুল সংশোধন করবেন ? 


         সনদপত্রের ভুল সংশোধন (ছবি : সংগৃহীত

বিভিন্ন শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষায় পাশের পর প্রাপ্ত সনদপত্রে অনেকেরই নাম ও অন্যান্য তথ্যে ভুল থাকে। সেগুলো সংশোধন করতে শিক্ষাবোর্ডে যাতায়াত করে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। এতে অর্থ এবং শ্রম উভয়ই বেশি খরচ হয়। তবে আপনি চাইলে এখন থেকে অনলাইনেই কাজটি সেরে ফেলতে পারেন। নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে অনলাইন আবেদন করে নামসহ যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে পারেন আপনি নিজেই। প্রশ্ন আসে কীভাবে? তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক।

-----------------------------------------------------------------------

আমাদের অনেকের  সার্টিফিকেটে  নামের বানান ভুল থাকে, পাশাপাশি জন্ম তারিখ বা সাল নিয়েও সমস্যা হয়ে থাকে। যার ফলে বিভিন্ন সমস্যার স্মৃষ্টি হয়।  বিভিন্ন জায়গায় তথ্যের গড় মিলের কারণে সরকারি কার্যক্রম বা চাকুরির ক্ষেত্রে জটিলতা দেখা দেয়। সার্টিফিকেটের তথ্য সংশোধনের ২ টি উপায় রয়েছে। অন লাইন এবং অফলাইন। তবে বর্তমান সময়ে অফলাইন অপেক্ষা অনলাইনে করাই বেশি সুবিধাজনক। তাই আমরা কেবল অনলাইনে সংশোধন প্রক্রিয়া নিয়েই বিস্তারিত আলোচনা করবো।
বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ
সার্টিফিকেট সংশোধন অনলাইন বা অফলাইন দুইভাবে করা যায়। তবে দালাল বা থার্ড পার্টির ঝামেলা এড়াতে অনলাইনে সংশোধন করাটা ভালো একটা উপায় হতে পারে। হাতে ফরম পূরণ করতে গেলে অনেক সময় হাতের লেখায় সমস্যা থাকতে পারে বা বোর্ডের দায়িত্বপ্রাপ্তদের বুঝতে সমস্যা হতে পারে। তাই অনলাইন করাটা সুবিধাজনক।

* নোটারি পাবলিক
আইনজীবীর মাধ্যমে নাম বা জন্মতারিখের ভুল সংশোধনের জন্য প্রথমে নোটারি বা এফিডেভিট করাতে হবে। প্রার্থীর নিজের নাম সংশোধনের ক্ষেত্রে তার বয়স যদি ১৮ বছরের বেশি হয় তাহলে তিনি নিজেই এফিডেভিট করতে পারবেন। প্রার্থীর বয়স যদি ১৮ বছরের কম হয় বা প্রার্থী যদি তার মা-বাবার নাম সংশোধন করতে চান তাহলে নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে প্রার্থীর বাবা কর্তৃক প্রথম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেট বা নোটারি পাবলিকের কাছ থেকে এফিডেভিট করতে হবে।


প্রশ্নঃ নোটারী পাবলিক কি জিনিস ভাই , বুঝলাম নাহ ? 

উত্তরঃ কোনো গুরুত্বপূর্ণ দলিল বা ডকুমেন্টকে সত্যায়িত করতে গেলেই নোটারি পাবলিকের প্রয়োজন পড়ে। আমাদের দেশে সাধারণত নোটারি পাবলিকের কাজ অনুমোদিত আইনজীবীরাই করে থাকেন। নোটারি পাবলিককে সংক্ষেপে নোটারি বলা হয়ে থাকে।নোটারি শব্দের মূল নামপদ 'note' এবং 'ary' অনুসর্গ নিয়ে গঠিত।



           

*প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন

আপনি যদি আপনার সার্টিফিকেটে কোন ধরনের ভুল খুঁজে পান তাহলে আপনাকে প্রথমে নোটারি পাবলিকের এফিডেভিট করার পরে পত্রিকা বিজ্ঞাপন দিতে হবে। পত্রিকায় বিজ্ঞাপন আপনি যেকোন ধরনের পত্রিকায় দিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে অনেকেই বা বেশিরভাগ মানুষই তাদের লোকাল পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেয়। এ বিজ্ঞাপনে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে আপনার বর্তমান সার্টিফিকেটের নাম সার্টিফিকেটে জন্ম তারিখ দেওয়া আছে সে জন্ম তারিখ সার্টিফিকেটে আপনার পিতামাতার যে নাম দেওয়া আছে সেই সকল বিস্তারিত। আপনাকে সার্টিফিকেটের রোল নাম্বার সার্টিফিকেট এর রেজিস্ট্রেশন নম্বর ইত্যাদি উল্লেখ করতে হবে।এরপরে আপনাকে আরও কিছু উল্লেখ করতে হবে সেটি হলো আপনি সংশোধিত কোন তথ্যগুলো চাচ্ছেন। যেগুলো ভুল হয়েছে সেগুলো সংশোধন হয়ে কি হবে সেগুলো আপনাকে এই পত্রিকায় উল্লেখ করে বিজ্ঞাপন করতে হবে। অবশ্যই পত্রিকায় বিজ্ঞাপনের সময় আপনাকে সতর্কতার সহিত সকল তথ্য দিয়ে বিজ্ঞাপন করতে হবে এতে কোনো ভুল হলে আপনার কাজটি সম্পাদন হবে না।





প্রশ্নঃ আমি কোন প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিবো ? 

উত্তরঃ যেকোনো জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে পারেন । 

প্রশ্নঃ আমার তো আশে পাশে কোনো পত্রিকা প্রতিষ্টান নেই, আমি কি করবো ? 

উত্তরঃ আপনি চাইলে অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসে বিজ্ঞাপন দিতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে মাধ্যমে  । 

প্রশ্নঃ পত্রিকায় বিজ্ঞান দিবো আমাকে এই ব্যাপারে সাহায্য করেন ? 

উত্তরঃ আপনি চাইলে ইউটিউব এর ভিডিও দেখে প্রত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিতে পারেন৷ 

নিচের লিংক ক্লিক করে দেখতে পারেন কিভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিবেন, তাহলে সহযেই বুঝতে পারবেন৷। 

Youtube click here # ঘরে বসে কিভাবে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিবেন ?


আবেদন প্রক্রিয়াঃ

বিজ্ঞাপন দেওয়ার পর আপনাকে প্রতিষ্ঠান (স্কুল/কলেজ) প্রধানের সাথে কথা বলতে হবে, কারণ আবেদনটি আপনার স্কুল/কলেজ থেকে করতে হবে। তিনি কম্পিউটার অপারেটরকে আবেদন করতে বলবেন। তখন আপনার কাছে ডকুমেন্টস চাওয়া হবে। যেসকল ডকুমেন্টস নিয়ে যাবেন –

এখনঃ আপনি চাইলে ও করতে পারেন, তবে স্কুল কলেজ থেকে করলে ভালো হবে, এবং তাড়াতাড়ি কাজ হবে৷। 
  1. হলফনামা/এফিডেভিটের কাগজ-পত্র
  2. বিজ্ঞাপনের পেপার কাটিং
  3. আবেদনকারীর জন্মসনদ (যদি আপনার নামের বানান ভুল থাকে)
  4. মা/বাবার সার্টিফিকেট / NID Card (যদি মা-বাবার নামে ভুল থাকে)


• আপনি অথবা কম্পিউটার অপারেটর ডকুমেন্টস স্ক্যান করে আবেদন করবে, আবেদনের সাথে সাথেই আপনার প্রদত্ত ফোন নাম্বারে মেসেজ চলে আসবে। আবেদনের পর সোনালী ব্যাংকে ৫৮৮ টাকা আবেদন ফি জমা দিতে হবে। আবেদন ফি জমা হলেই আপনার আবেদন গ্রহণ করবে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ফি প্রদানের রশিদ যত্ন করে সংরক্ষণ করুন। ফি প্রদানের পর বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপনার প্রোফাইল ক্রিয়েট হবে। সেখানে লগিন করে আপনি কাজের অগ্রগতি সম্পর্কিত তথ্য জানতে পাবেন।

• আবেদন সম্পন্ন করার পর বাকি কাজ সম্পন্ন হতে প্রায় ১/২ মাস সময় লেগে থাকে। কাজ শেষে আপনার ফোনে বোর্ড থেকে মেসেজ পাঠানো হবে। বোর্ডের ওয়েবসাইটে আপনার প্রোফাইলে নতুন অপশন “ডকুমেন্টস উত্তোলন” যোগ হবে। এবার ডকুমেন্টস উত্তোলনে ক্লিক করে ডকুমেন্টস উত্তোলনের আবেদন করুন। (স্কুল/কলেজে যাওয়ার প্রয়োজন নেই, একাউন্টে লগিন করে নিজেই করতে পারবেন) আবেদনের পর উত্তোলন ফি বাবদ ৫৫৮ টাকার (ঢাকা বোর্ড হলে) সোনালী ব্যাংকে পে করার জন্য একটা ডকুমেন্টস পেয়ে যাবেন। সেটা নিয়ে ব্যাংকে যান। আগের মতোই ফি জমা দিন।

• ফি জমাদানের ৭ দিনের মধ্যেই ফোনে মেসেজ আসবে আপনার ডকুমেন্টস রেডি। প্রোফাইলে লগিন করে উত্তোলনের জন্য একটা PDF Document (স্লিপ) পেয়ে যাবেন। এটা ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে নিন। এবার শিক্ষা বোর্ডে গিয়ে প্রিন্ট করা ডকুমেন্টের (স্লিপ) ফটোকপি এবং আসল সার্টিফিকেট জমা দিন। এবার ১/২ দিন অপেক্ষা করতে বলা হবে বোর্ড থেকে। দুদিন পর প্রিন্ট করা ডকুমেন্ট (স্লিপ), ব্যাংকের রশিদের মূল কপি নিয়ে গিয়ে সংশোধিত সার্টিফিকেট উত্তোলন করুন।


সিলেট বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক

কুমিল্লা বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক

রাজশাহী বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক

দিনাজপুর বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক

মাদ্রাসা বোর্ড সার্টিফিকেট সংশোধনের লিংক


  • আনুমানিক খরচ

  1. পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ৫০০ টাকা (কম বেশি লাগতে পারে)
  2. নোটারি পাবলিক ৫০০ টাকা (কম বেশি লাগতে পারে)
  3. আবেদেন ফি ৫৫৮×২= ১১১৬ টাকা (এসএসসি ও এইচএসসি) বিভিন্ন বোর্ডের ফি অবশ্য বিভিন্ন রকমের।  যেমন ঢাকা বোর্ডের ৫৫৮, দিনাজপুর বোর্ডের ১০৩৮, রাজশাহীর ১০২৮। বোর্ডগুলো তাদের ফি নির্ধারণ করে থাকে।
  4. সার্টিফিকেট উত্তোলন ফি ৫৫৮×২= ১১১৬ টাকা (২টি)



আপনি বিস্তারিত ফিডব্যাক পেতে নিচের ভিডিও গুলো দেখে পারেন, তাহলে সার্টিফিকেট সংশোধন নিয়ে আর কোনো প্রশ্ন থাকবেন না । 




আশা করি আপনি বিষয় টা বুঝতে পেরেছেন । 
এর পর ও বুঝতে কোনো অসুবিধা হলে, আমাকে কল করুন, মোবাইল ০১৭৯৮৫১৩৪৪১ । 


                                                MUHAMMED JUWEL AHMED
মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ,  আমি একজন ক্ষুদ্র ব্লগার। লিখতে খুব ভালােবাসি, তাই লিখালিখি করি । অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে আমি  ২০১২ সালের থেকেই  লিখালিখি করছি । আমি বিয়ানিবাজার সরকারি কলেজে লেখা পড়া করছি । অনার্স ফাইনাল বর্ষের ছাত্র সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন , যাতে আমি বড় হয়ে একজন আদর্শ বান মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়তে পারি । ভালো থাকুন । আজ এই পর্যন্ত ।


Copyright By: Muhammed Juwel Ahmed 


আরো তথ্য জানতে নিচের আর্টিকেল গুলো পড়ুন । 


**********************************************
সার্টিফিকেট+মার্কসীট-এ নাম পরিবর্তন সহ
যেকোন কিছু সংশোধন করতে হলে কি করবেন ?
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
১। নাম পরিবর্তনের হলফনামা করতে হবে।
২। পত্রিকায় নাম পরিবর্তনের বিজ্ঞাপণ দিতে
হবে (SSC কিংবা HSC-এর সার্টিফিকেটে+মা
র্কশিট -এ নাম পরিবর্তন করতে হবে)।
৩। শিক্ষা বোর্ড থেকে নাম পরিবর্তনের ফরম
সংগ্রহ করতে হবে।
৪। ঐ ফরমে স্কুল কিংবা কলেজের প্রিন্সিপাল
দ্বারা অনুমোদন এবং সত্যায়িত করতে হবে।
৫।শিক্ষা বোর্ডের ব্যাংকে নাম পরিবর্তনের
ফি ড্রাফট আকারে জমা দিতে হবে।
৬। পত্রিকায় বিজ্ঞাপণের কাটিং, এফিডেভিট,
সার্টিফিকেট, মার্ক্শিটের মূল কপি, আর নাম
পরিবর্তনের ফরম শিক্ষা বোর্ড অফিসে জমা
দিতে হবে। ( প্রতি মাসে একবার শিক্ষা বোর্ড
নাম পরিবর্তনের আবেদনগুলো নিয়ে সভা হয়, ঐ
সভায় নাম পরিবর্তনে যারা অনুমোদন পায়,
তাদের বাসায় চিঠি দিয়ে জানানো হয়।)
৭। ঐ চিঠি নিয়ে শিক্ষা বোর্ডের আরেক
অফিসে যেতে হবে, সেখানে চিঠি-এর
ফটোকপি, সার্টিফিকেট, মার্কশিট জমা দিয়ে
আসতে হবে।
৮। ঐ অফিস থেকে ২ সপ্তাহ পরে যাওয়ার
একটা ডেট দিবে, ঐ তারিখে গিয়ে আরেক
অফিস থেকে নতুন সার্টিফিকেট+মার্ক্শিট
সংগ্রহ করতে হবে।
৯। নতুন সার্টিফিকেট নিয়ে ইউনিভার্সিটিতে
রেজিস্ট্রারের কাছে নাম পরিবর্তনের আবেদন
করতে হবে।
১০। ঐ আবেদন পত্রে প্রথমে বিভাগীয়
প্রাধানের অনুমোদন/সুপারিশ নিতে হবে।
১১। রেজিস্ট্রার ৩/৪ দিন পর নাম পরিবর্তনের
অনুমোদন ক্রমে একটা আদেশ জারি করবেন,
আদেশের ঐ কপি টা সংগ্রহ করতে হবে
১২। আদেশ কপি সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের আই সি
টি ডিপার্টমেণ্টে গিয়ে, ডাটাবেজ
এডমিনিস্ট্রেট্রের কাছে ডাটাবেজে নাম
পরিবর্তনের জন্য অনুরোধ করতে হবে।
১৩। প্রধন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের অফিসে আদেশ
কপি, নাম পরিবর্তনের ফি এর ব্যাংক কপি,
অরিজিনাল সার্টিফীকেট+মার্কশিট জমা দিতে
হবে।
১৪। ৪-৫ দিন পর ঐ অফিস থেকে নতুন
সার্টিফিকেট, মার্কশিট সংগ্রহ করতে হবে।।
(ভালো লাগলে বলবেন।আর কিছু ভুল হলেও
বলবেন এবং বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে
বুলবেন না)

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.