সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ৭ টি উপায় | 7 ways to take right decision লেখক- মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ,
নিজেকে প্রশ্ন করুন
কোন বিষয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে নিজেকে বার বার প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করুন। নিজের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া পেলে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।
ভয় পেয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন না
ভয়কে যেমন কখনই অবহেলা করা ঠিক নয়। আবার ভয়ের কারণে বা ভয় পেয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়াও ঠিক নয়। এতে হিতে বিপরীত হওয়ার আশঙ্কা বেশি।
বিকল্প উপায় খুঁজুন
সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে বিকল্প উপায়গুলোও ভেবে রাখুন। এতে পরবর্তীতে কোন সমস্যা হলে বিকল্প পথগুলো আপনাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করবে।
সমাধান খুঁজুন
কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার বা মনস্থির করার জন্য প্রতিটি মানুষেরই নিজের একটা পদ্ধতি থাকে। কাজেই বেশি সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে আপনি নিজের চেনা পথটাই বেছে নিন। তাহলে আপনার জন্য সঠিক সিদ্ধান্তে আসা অনেক সহজ হবে।
কঠিন সিদ্ধান্ত দেরিতে নিন
কঠিন সিদ্ধান্ত হুট করেই নেয়া উচিত নয়। বরং কঠিন সিদ্ধান্ত মনে হলে বিষয়টা নিয়ে ভাবা একেবারেই ছেড়ে দিন। তাহলে কিছুদিন পর নিজ থেকেই বুঝতে পারবেন যে আপনাকে কী করতে হবে।
একাধিক অপশন বেছে নিন
প্রত্যেক সিদ্ধান্তেই একাধিক জায়গা থাকে। সম্ভব হলে প্রতিটি অংশই চেষ্টা করে দেখুন। যেটি ভাললাগে সেটিই বেছে নিন।
ভবিষ্যতের কথা মাথায় রাখুন
কেবল বর্তমানকে ভেবে সিদ্ধান্ত নেবেন না। এতে বিপদ হতে পারে। বরং ভবিষ্যতের হিসাব করে তবেই সিদ্ধান্ত নিন।
সিদ্ধান্ত কখনই সঠিক হয় না
যে কোন সিদ্ধান্ত কখনও সঠিক হয় না। এই সত্যটা মেনে নিলে দেখবেন মনের ওপর থেকে চাপ অনেকটাই কমে গেছে। সেই সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেয়াও আপনার জন্য সহজ হচ্ছে।
অভিজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলুন
একই পরিস্থিতিতে পড়েছেন কিংবা যার জীবনে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তাদের সঙ্গে কথা বলুন। দেখবেন সমাধানের পথ ঠিকই বেরিয়ে আসবে। কেননা একই পরিস্থিতিতে ভিন্ন ভিন্ন মানুষের অভিজ্ঞতা আপনাকে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রচ সহায়তা করবে।
সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার ৭ টি উপায় :
সঠিক সিদ্ধান্ত এর ওপর জীবনের বাঁচার আনন্দ নির্ভর করে । না জানি আমরা জীবনে চলার পথে
কত ভুল সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি আর তার মাসুল সারা জীবন দিতে হয় । যদি নিজের নেওয়া সিদ্ধান্ত দ্বারা নিজের জীবনে ভয়াবহ পরিস্থিতি ডেকে আনি তাহলে হয়তো কখনো আমরা কাউকে দোষ দিতে পারি না । কিন্তু যখন অন্যের সিদ্ধান্তের ওপর আমরা আমাদের জীবনে অতিবাহিত করি…….. তখন আমরা না পারি নিজেকে দুষতে না পারি অন্যকে ।
সব থেকে বড় সমস্যা হলো ছোটো থেকে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়া শেখানো হয় না, না স্কুলে -না বাড়িতে। সর্বদা পরের নেওয়া সিদ্ধান্তের উপর আমাদের চলতে হয় । ভুল করে যদি কেউ একটু সাহস করে সেই ক্ষমতা দেখায় তখনই শুরু হয় নানা সমস্যা ।
আমাদের মধ্যবিত্ত পরিবারে আমরা যখন সবার থেকে আলাদা করে একটা নতুন কিছু করার কথা ভাবি সঙ্গে সঙ্গে সেটাকে’ অসত্য’,’ অবাস্তব’, ‘অসম্ভব’, প্রমাণ করার জন্য সবাই উঠে পড়ে লেগে যায়। আর আমাদের মধ্যে যদি কেউ দুর্বল চিত্তের হয়ে থাকি তাহলে সেই কথাগুলি কে সত্য বলে মনে করে আমরা আমাদের স্বপ্নকে পায়ে মাড়িয়ে দি। বিশাল ও বিপুল সাফল্যের পথে প্রধান বাঁধাই হলো _ বড় কিছু কৃতিত্ব অর্জন করা আমার পক্ষে অসম্ভব এই অনুভূতি ।
ভাবো ছোট্ট বেলায় আমাদের সবারই উঁচু লক্ষ্য ও মহান উদ্দেশ্য থাকত। সবকিছু জয় করার সবচেয়ে বড়, সবার থেকে সেরা হয়ে ওঠার স্বপ্ন দেখতাম আমরা । কিন্তু বড় হওয়ার সাথে সাথে আমাদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার , স্বপ্ন দেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি আমরা ।
‘ চেষ্টা করে লাভ নেই, সফল হওয়া তত সহজ নয় , তোমার মতো অনেকেই চেষ্টা করে আজ বিফল , তুমিও সেই পথে এগোচ্ছো । — এই হতাশা ব্যঞ্জক শব্দ ও নিরাশাবাদী চিন্তা -আমাদের গ্রাস করে , আমরা আর এগোতে পারি না ।
তারপর পরিবার যা আমাদের জন্য ঠিক করে দেয় আমরা সেই পথেই এগোই । আমি এটা বলছি না যে পরিবার আমাদের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেয় না , তারা আমাদের জন্য তাদের মতো করে আমাদের মঙ্গল কামনা করে । কিন্তু তারা বেশিরভাগ সময় সমাজের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের সিদ্ধান্ত গুলো আমাদের উপর চাপায় । আর আমরা তাদের স্বপ্ন গুলো পূরণের জন্য নিজেকে সেই পথে নিমজ্জিত করি । যদি তাদের স্বপ্ন আর আমাদের স্বপ্ন এক হয় তাহলে কোনো কথাই নেই, আমরা জীবনে সফলতার চূড়ায় পৌঁছাবো। কিন্তু যদি তাদের স্বপ্ন , আমাদের স্বপ্নের বিপরীত হয়, আর আমরা তাদের স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজের সবকিছু ত্যাগ করি সেখানে আর আনন্দ থাকে না । আমরা কোনোরকম হামাগুড়ি দিয়ে , চাপা যন্ত্রণা নিয়ে জীবন কাটাই । যার ছাপ আমাদের প্রতিটা কাজে পড়ে । কারন নিজে খুশি না থাকলে কখনো অন্যকে খুশি করা যায় না । তাহলে এখন প্রশ্ন হলো কী করে আমরা নিজের জীবনের সিদ্ধান্ত নেব ? কী করে তাদের মধ্যে সেই বিশ্বাসটা জাগাবো যে আমরা যা করছি সেটাতে আমরা খুশি থাকবো আর সফলতা পাবোই । তাহলে চলো আমরা সেটা বের করি , কী করা যায়-
১) আমরা কি চাই তা নিজেকে প্রশ্ন করা :-
আমরা সর্বক্ষণ বাইরের লোকেদের জিজ্ঞেস করি আমাদের কী করা উচিত? কোনটা অনুচিত? এখন থেকে আমাদের নিজেদের প্রশ্ন করা উচিত আমরা কী চাই ? কোনটা আমার পক্ষে ভালো? কোন কাজটা আমি সবচেয়ে ভালো পারবো ! তুমি যা পছন্দ কর- সর্বপ্রথম সেটা আবিষ্কার কর তোমার ভিতরে ।
আমার মনে হয় নিজেকে প্রশ্ন করলে আমরা ঠিক উত্তর পেয়ে যাবে।
২) বল কম, কর বেশী :-
আমরা অনেক সময় শুধু বলেই যাই এটা করবো ওটা করবো …। কিন্তু করার সময় এলে করি না । একটা সঠিক চিন্তা , একটা লক্ষ্য তো বানিয়ে ফেলি কিন্তু যখন সেটা করার সময় আসে তখন আমাদের activeness কমে যায় । আর আমাদের যারা দেখে বুঝে যায় যে এর দ্বারা সম্ভব নয় । কারন আমরা আমাদের যা audio play করি আর যা video দেখাই তার মধ্যে অনেক পার্থক্য থাকে । তাই যদি আমরা কম বলে, কাজটার প্রতি বেশি focus করি তাহলে আমাদের সিদ্ধান্তের ওপর পরিবারের লোকেদেরও বিশ্বাস বাড়বে ।
” কারন কোনো আইডিয়াই কাজ করবে না , যতক্ষণ না তুমি সেটার ওপর কাজ করেছ ।”
৩) নিজেকে অসহায় ভাবা বন্ধ করা :-
আমরা অনেক সময় আমাদের লক্ষ্যের পিছনে ছুটতে গিয়ে নিজেকে খুব অসহায় মনে করি । কোথাও একটু হোঁচট খেলে ভাবি আর হবে না আমার দ্বারা । ওরাই ঠিক , ওরা বলেছিলো -আমি পারবো না । আমি ভুল করলাম এই পথে হেঁটে ইত্যাদি। ব্যর্থতার ভয় আমাদের আঁকড়ে ধরে । মনে রেখো – যখন তুমি কোনো স্বপ্ন দেখবে , সেট পূরণ করার পথে তুমি কাউকে পাবে না । স্বপ্ন যখন একাই দেখেছো সেটা পূরণ করার দায়িত্ব তোমার নিজের । সেই পথটা তোমার একার পথ । তোমার নিজেকেই হাঁটতে হবে । স্বপ্ন পূরণ হলে সবাই তখন তোমার পাশে এসে দাঁড়াবে । তাই নিজেকে অসহায় মনে না করে একটু একটু করে এগোও । ব্যর্থতা বলে কিছু হয় না জীবনে সম্পূর্ণটাই শুধু শিক্ষা দেয়।
তুমি নিজেকে অসহায় ভাবলে গোটা পৃথিবী তোমাকে অসহায় ভাববে | সময় পরিস্থিতি যতই কঠিন হোক না কেন , নিজের মানসিক শক্তিকে এতটাই শক্তিশালী করা প্রয়োজন যাতে ভেতরের শান্তি ও আনন্দ কেউ কেড়ে নিতে না পারে ।
৪) দায়িত্ব নিতে শেখা :-
আমাদের নিজেদের জীবনের দায়িত্ব নিজে নেওয়া উচিত । আমরা যেন আমাদের জীবনের ভুলের জন্য অন্যদের দায়ী না করি । ভুল ঠিক যাই হোক জীবনে আমরা যেন নতুন কিছু শিখতে পারি । আমরা যদি কোনো বিষয় ভুল করে সেটা ঠিক করার দায়িত্ব নিজে নেই, প্রতিটা পদক্ষেপে যদি আমরা নতুন কিছু শেখার জন্য আগ্রহী হই , তাহলে আমাদের প্রিয়জনেরা আমাদের প্রতি ধীরে ধীরে বিশ্বাস করতে শুরু করবে এবং আমাদের সিদ্ধান্তগুলিকে মর্যাদা দেবে ।
৫) ব্যর্থতার ভয় :-
৬) সঠিক সময় সঠিক সিদ্ধান্ত :-
একথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, সময় অনুসারে ভাবনা চিন্তা পাল্টে যায় । এক্ষেত্রে সুবিধার জন্য দুটি ভাগে সিদ্ধান্তের বিষয়টিকে ভাগ করা উচিত ।
ক) তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত
খ) দীর্ঘমেয়াদি সিদ্ধান্ত
তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তের ক্ষমতা নিয়ে আমাদের সর্বদা চলতে হয় । কোন জিনিস কিনবো , আজ কি পারব , কি বলবো ইত্যাদি ।
আর দীর্ঘ মেয়াদী সিদ্ধান্ত হলো – পেশা , বিবাহ সহ জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি সব-ই হতে পারে ।
দুটো ক্ষেত্রেই একটি কথা মাথায় রাখা দরকার ভবিষ্যত পরিকল্পনা । আমি আগামী বছর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই , আর আগামী পাঁচ বছর পর নিজেকে কোথায় দেখতে চাই দুটি প্রশ্নের দ্বারা সিদ্ধান্তকে যাচাই করা প্রয়োজন ।
৭) সাফল্যের সংজ্ঞা:-
আমাদের প্রত্যেকের কাছে সফলতার সংজ্ঞা ভিন্ন। সফলতার বহিরঙ্গ দেখলে দেখা যায় কার ব্যাঙ্ক একাউন্ট-এ কত টাকা আছে , কে কতবড় সংস্থায় চাকরি করে , কার কলেজের ডিগ্রি বা পারিবারিক ঐতিহ্য আছে তার ওপর আমরা সাফল্যের মুকুট পরাই । অর্থাৎ মানুষের চিন্তার পরিমাপই তার সাফল্যের পরিমাপ নির্ধারণ করে ।
কিন্তু আমার মতে নিজেদের creativity প্রকাশ করা , বা যে যেটা মন থেকে করতে ভালোবাসে সেটা করে যদি সে খুুশি থাকে – সেটাই তার কাছে আসল সফলতা ।দুনিয়ার নজরে সফল হওয়ার আগে আমাদের নিজেদের জীবনে প্রত্যেকটা পিলারে সফলতা অর্জন করা উচিত। শারীরিক, আধ্যাত্মিক , মানষিক , পারিবারিক , অর্থনৈতিক সফলতা ।
মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ
________________________________________________________________________________________
মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্লগার। লিখতে খুব ভালােবাসি, তাই লিখালিখি করি ।অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে আমি ২০১৪ সালের থেকেই লিখালিখি করছি । আমি বিয়ানিবাজার সরকারি কলেজে লেখা পড়া করতেছি । সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন , যাতে আমি বড় হয়ে একজন আদর্শ বান মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়তে পারি ।
ভালো থাকুন । আজ এই পর্যন্ত ।
কোন মন্তব্য নেই