কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়া ফ্রিল্যান্সিং কি ভাবে শুরু করবো 2023 | How to start Freelancing with NO Experience
ফ্রিল্যান্সিং কি (What is Freelancing):
বর্তমান যুগে যারা ইন্টারনেট জগতে কাজ কর্ম করেন তারা কম বেশি সবাই ফ্রিল্যান্সিং শব্দটির সঙ্গে পরিচিত। এখন কথা হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং কি এবং একজন নতুন হিসেবে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?
ফ্রিল্যান্সিং হলো আপনি যদি আপনার নিজের স্কিল কে কাজে লাগিয়ে অন্য কোনো লোকের কাজ করে দেন তাহলে তাকে সহজ ভাষায় ফ্রিল্যান্সিং বলতে পারি।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো (How to start Freelancing) এবং ফ্রিল্যান্সিং থেকে কি করে আয় করবো (How to earn from Freelancing)।
যে কোনো বিষয় ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার জন্য আপনাকে কোনো একটি বিষয় দক্ষতা অর্জন করতে হবে।
ধরা যাক আপনার ছোটবেলা থেকে আঁকার ওপর ভালো দক্ষতা আছে। তাহলে আপনি একজন গ্রাফিক্স ডিসাইনার হিসেবে কাজ শুরু করতে পারেন।
প্রথমে আপনাকে গ্রাফিক্স ডিসাইন বিষয়টি ভালো ভাবে শিখতে হবে। আপনি দুভাবে গ্রাফিক্স ডিসাইন শিখতে পারেন।
প্রথমত কোনো ইনস্টিটিউট এ কোনো কোর্স করে।
দ্বিতীয়ত কিছু ফ্রি রিসোর্স ব্যবহার করে।
যদি আপনি কোর্স ফী দিতে পারেন তাহলে অবশ্যৈই কোনো ভালো ইনস্টিটিউট ভর্তি হতে পারেন।
এক্ষেত্রে আরেকটি সুবিধা হচ্ছে কোর্স শেষে সেই ইনস্টিটিউট আপনাকে চাকরি দিতে পারে। যদি আপনি ইচ্ছুক হন তো কয়েক দিন চাকরটি করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারেন। তার পর আপনি আস্তে আস্তে ফ্রীল্যানসিং পেশায় প্রবেশ করতে পারেন।
ফ্রি রিসোর্সে ব্যবহার করেও আপনি আপনার স্কিল বা দক্ষতা তৈরী করতে পারেন।
আপনি যে বিষয় দক্ষতা অর্জন করতে চান সেই বিষয় Youtube থেকে বিভিন্ন ভিডিও দেখতে পারেন।
যদি আপনি অনলাইনে কোনো কোর্স করতে চান তাহলে udemy, skillshare থেকে সেই বিষয় কোর্স কিনে বিষয়টি শিখতে পারেন।
এক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করবো আপনি Hostinger থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি ওদের ১৩৯ টাকার প্ল্যানটি নেন তাহলে এর সাথে একটি ফ্রি ডোমেন পেয়ে যাবেন। তবে মনে রাখবেন এই ১৩৯ টাকার প্ল্যানটি কিন্তু ৪৮ মাসের জন্য নিতে হবে।
এর পর আপনি একটি ওয়েবসাইট বানান। যদি আপনার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে নিজেই একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। নতুবা কাউকে দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন।
কিন্তু আপনি যতক্ষণ না কাজের জগতে প্রবেশ করছেন ততক্ষন আপনার শেখা সম্পূর্ণ হবে না।
সেক্ষেত্রে আপনি যদি কোনো প্রতিষ্ঠানে যোগ দিয়ে কাজ করে সেই স্কিলটির ওপর বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কি ভাবে শুরু করবো ? (How to start Freelancing)
আপনি যে বিষয় নিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে চান সে বিষয় ভালোভাবে দক্ষতা অর্জন করা হয়ে গেলে আপনি আপনার ফ্রিল্যান্সিং ক্যরিয়ার শুরু করতে পারেন।
প্রথমে আপনাকে নিজের নাম বা কোনো ব্র্যান্ড নাম ঠিক করে সেই নামে একটি ওয়েবসাইট বানাতে হবে।
দ আপনি খরচ করতে পারেন তাহলে অবশ্যৈই কোনো ভালো হোস্টিং কিনে একটি ভালো পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট বানান।
এক্ষেত্রে আমি সাজেস্ট করবো আপনি Hostinger থেকে হোস্টিং কিনতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি ওদের ১৩৯ টাকার প্ল্যানটি নেন তাহলে এর সাথে একটি ফ্রি ডোমেন পেয়ে যাবেন। তবে মনে রাখবেন এই ১৩৯ টাকার প্ল্যানটি কিন্তু ৪৮ মাসের জন্য নিতে হবে।
এর পর আপনি একটি ওয়েবসাইট বানান। যদি আপনার ওয়েব ডেভেলপমেন্ট অভিজ্ঞতা থাকে তাহলে নিজেই একটি ওয়েবসাইট বানাতে পারেন। নতুবা কাউকে দিয়ে ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারেন।
আমি এক্ষেত্রে পরামর্শ দেব যে আপনি ডাইনামিক ওয়েবসাইট (Dynamic Website) বানান এবং তা ওয়ার্ডপ্রেস (WordPress) এ বানান।
ডাইনামিক ওয়েবসাইট হলো সেই সব ওয়েবসাইট যে গুলো আপনি নিজেই ব্যবহার করতে পারবেন কোনো কারো সাহায্য ছাড়া।
এর ওয়ার্ডপ্রেস একটি সিস্টেম যা আপনাকে ফ্রি তে ডাইনামিক ওয়েবসাইট বানাতে সাহায্য করবে এবং এটি ব্যাবহার করা খুবই সহজ।
যদি আপনি ওয়েবসাইট বানানোয় এই খরচা করতে না পারেন তাহলে গুগল সাইট দিয়েও নিজের একটি পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট আপাতত বানিয়ে নিয়ে কাজ শুরু করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এ কি থাকবে ? (What should be included in Freelancing Portfolio Website)
প্রথমেই থাকবে আপনার একটি প্রফেশনাল ছবি। তার সাথে আপনার সম্বন্ধে বিবরণ।
দ্বিতীয়ত থাকে আপনি যে যে সার্ভিস গুলো দিয়ে থাকেন তার সম্পূর্ণ বিবরণ।
তৃতীয়ত থাকবে আপনার করা কাজের কিছু নমুনা।
চতুর্থত থাকবে আপনার সম্বন্ধে আপনার ক্লায়েন্টরা কি বলছে।
পঞ্চমততো একটি কন্টাক্ট ফর্ম (contact form) এবং আপনার অফিসের নাম, এড্রেস, ফোন নম্বর ইত্যাদি।
ওয়েবসাইট টি অবশৈই ইংলিশ ভাষায় তৈরী করবেন।
যদি আপনি seo জানেন তাহলে সেই মতো কীওয়ার্ড রিসার্চ করে কনটেন্ট বানাবেন।
যদি আপনি লোকাল ক্লায়েন্ট দের টার্গেট করেন তাহলে Google My Business লিস্টিং করবেন আপনার বিজনেস টিকে। এটি আপনার লোকাল ক্লায়েন্ট পেতে খুব সাহায্য করবে।
এর পর আপনি ফ্রিল্যান্স মার্কেট প্লেস এ একাউন্ট খুলবেন।
এক্ষেত্রে আপনি প্রথমেই Fiverr, Freelancer এবং upwork এ একাউন্ট খুলবেন। সেখানে আপনার একটি প্রফেশনাল ছবি দেবেন এবং একটি প্রফেশনাল ইমেইল দিয়ে একাউন্ট তৈরী করবেন।
এর পর ইমেইল ইডি তা ভেরিফাই করবেন। আস্তে আস্তে প্রোফাইল টি কমপ্লিট করে ওই সব প্লাটফর্মে কাজ শুরু করবেন।
ফ্রীল্যানসিং এর ক্ষেত্রে ধৈয্য ধরা এবং ধারাবাহিকতা বজায় রাখাটা ভীষণ ভাবে জরুরি।
ফ্রিল্যান্সিং থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায় ?
এর কোনো নির্দিষ্ট সীমা নেই। আপনি আপনার স্কিল মতো আনলিমিটেড ইনকাম করতে পারেন।
আপনি যদি সময় মতো ক্লায়েন্টদের প্রজেক্ট ডেলিভারি দেন , ক্লায়েন্ট রা যদি আপনার কাজে খুশি হয় তাহলে তাহলে আপনি আরো অনেক প্রজেক্ট পাবেন এবং অনেক টাকা আয় করতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং উপকারিতা কি ?
ফ্রিল্যান্সিং করার অনেক সুবিধা আছে।
১. আপনি আপনার নিজের সময় মতো, সুবিধা মতো কাজ করুন। আপনার ওপর কথা বলার কেউ থাকবে না। আপনি আপনার নিজের বস অন্য কেউ নয়।
২. এখানে আপনি অনেক রোজগার করতে পারবেন। রোজগার করার কোনো সীমা নেই।
২. এখানে আপনি অনেক রোজগার করতে পারবেন। রোজগার করার কোনো সীমা নেই।
৩. আপনি যেহেতু একটি মার্কেট প্লেস এ সরাসরি ক্লায়েন্টদের সাথে কাজ করবেন সেক্ষেত্রে আপনি অনেক শিখতে পারবেন। যেটা সাধারণত চাকরির ক্ষেত্রে হয় না।
৪. আপনি ধীরে ধীরে ফ্রীল্যানসিং থেকে নিজের একটি এজেন্সী তৈরী করে কাজ করতে পারবেন। আপনাকে আর ওই সব অনলাইন মার্কেট প্লেসের ওপর ভরসা করতে হবে না।
৫. আপনি ধীরে ধীরে নিজের একটি ইনস্টিটিউট তৈরী করতে পারবেন যেখানে আপনি ফ্রীল্যানসিং, আপনার নিজের বিষয় অন্যদের শেখাতে পারবেন। এর দ্বারা আপনার ব্র্যান্ড প্রমোশন হবে এবং আপনি এদের মধ্যে থেকে দক্ষ কর্মচারী গড়ে তুলতে পারবেন।
৬. আপনি Youtube আপনার কোর্স শেখাতে পারবেন। Youtube এডসেন্স থেকে ভালো রোজগার করার সুযোগ আছে।
ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার?
ফ্রিল্যান্সিং বিভিন্ন প্রকার। সেগুলো হলো :
১. গ্রাফিক্স ডিসাইন
২. ডিজিটাল মার্কেটিং
৩.রাইটিং
৪. ভিডিও অ্যানিমেশন
৫. মিউজিক ও অডিও
৬. প্রোগ্রামিং টেক
৭. ডাটা
৮. বিজনেস
৯. লাইফস্টাইল
উপসংহার ,তাহলে বন্ধুরা এই পোস্টটি পড়ে আপনারা জানলেন ফ্রিল্যান্সিং কি , কি করে ফ্রিল্যান্সিং থেকে আয় করবো, ফ্রিল্যান্সিং কি ভাবে শুরু করবো, ফ্রিল্যান্সিং পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট এ কি থাকবে, ফ্রিল্যান্সিং থেকে কত টাকা ইনকাম করা যায়, ফ্রিল্যান্সিং উপকারিতা কি কি, ফ্রিল্যান্সিং কত প্রকার, ফ্রিল্যান্সিং এর ভবিষ্যৎ কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো 2023 এ , এবং ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব।
কিন্তু সব থেকে আগে দরকার নিজের দক্ষতা বাড়ানো , প্রচন্ড শেখার ইচ্ছে, আয় করার ইচ্ছে এবং সর্বোপরি ধারাবাহিকতা। যদি আপনি এ গুলো মেনে চলেন তাহলে ফ্রিল্যান্সিং একদিন না একদিন নিশ্চয়ই সফলতা পাবেন।
আর্টিকেল টি পরে কেমন লাগলো অবশই কমেন্ট এ জানাবেন। আপনাদের মতামত জানতে আমি ভীষণ ভাবে আগ্রহী।
ঘরে বসে ফ্রিল্যান্সিং করা সম্ভব ?
নিশ্চয়ই সম্ভব। এর জন্য আপনার লাগবে একটি ল্যাপটপ বা ডেস্কটপ কম্পিউটার , ইন্টারনেট কানেকশন এবং প্রচুর শেখার ইচ্ছে।
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখব ?
ফ্রিল্যান্সিং কোনো কোর্স হয় না। বেশির ভাগ কোর্স হয় চাকরি ভিত্তিক। তাই যদি ফ্রিল্যান্সিং শিখতেই হয় তাহলে যে কোনো বিষয় দক্ষতা অর্জন করা তার পর শুরু করুন এবং নিজের অভিজ্ঞতার মাধ্যমেই শিখতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো 2023?
ফ্রিল্যান্সিং আপনি দু ভাবে শিখতে পারেন। কোনো কোর্স করে তারপর কোনো সংস্থায় চাকরি করে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে তার পর ফ্রীল্যানসিং শুরু করুন। নতুবা ফ্রি রিসোর্সে যেমন youtube ভিডিও দেখে , ব্লগ পরে , udemy থেকে কোর্স কিনে বিষয়ের ওপর দক্ষতা অর্জন করে তার পর ফ্রিল্যান্সিং শুরু করুন।
কোন মন্তব্য নেই