ফ্রিল্যান্সিং শিখতে চাই – ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ২০২২-২০২৩
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো | How To Learn Freelancing In 2022
ফ্রিল্যান্সিং এক ধরনের স্ব-কর্মসংস্থান। ফ্রিল্যান্সিং মানে হলো অন্য কারো জন্য কাজ করার বিপরীতে স্বাধীনভাবে কাজ করা। সহজভাবে Freelancing মানে নির্দিষ্ট কোম্পানি বা কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তির জন্য একচেটিয়াভাবে কাজ না করে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুবিধা। ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ২০২২ সালে এই প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে ফ্রিল্যান্সার কারা সেবিষয়ে জানা দরকার।
ফ্রিল্যান্সার, বা ফ্রিল্যান্স কর্মী, সাধারণত এমন একজন ব্যক্তির জন্য ব্যবহৃত শব্দ যা স্ব-নিযুক্ত এবং কোন নির্দিষ্ট নিয়োগকর্তার সাথে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ অর্থাৎ, চুক্তিবদ্ধ নয়। Freelancer হলেন এমন পেশাজীবি যিনি প্রতিটি কাজ বা টাস্ক সম্পন্ন করার জন্য অর্থ পেয়ে থাকেন।
অনলাইনে টাকা ইনকাম করার চিন্তা এসে থাকলে আপনার মাথায় নিশ্চিতভাবেই ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্ন মাথায় এসেছে। ‘what is freelancing in Bangla’ গত এক বছরে বাংলায় গুগলে সার্চ করা জনপ্রিয় একটি টপিক, অর্থাৎ বর্তমানে ব্যাপকভাবে জিজ্ঞেসিত একটি প্রশ্ন।
ফ্রিল্যান্সিং কি এই বিষয়ে আমরা কম বেশি সবাই জানি কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো ২০২২ সালে এসেও সেবিষয়ে আমরা অনেকেই অন্ধকারে রয়েছি। গত ৬-৭ বছর যাবৎ পত্রিকা, টেলিভিশন কিংবা সোশ্যাল মিডিয়া সবজায়গায় ট্রেন্ডিং টপিক Freelancing, Freelancer অনলাইন জব । তবে, করোনায় মানুষ ঘরে বসে থাকায় Freelancing কি, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, কোথায় ফ্রিল্যান্সিং শিখবো, ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় নিয়ে জানার আগ্রহ এবং বাংলাদেশি Freelancer দুই-ই ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে।
ফ্রিল্যান্সারদের অনেকেই লক্ষ টাকা আয় করে এসব গল্প আমরা রোজ শুনি, আর তাই আমাদের এই বিষয়েটার প্রতি আগ্রহেরও কমতি নেই, আমাদের সবার মাথায় এখন একটাই প্রশ্ন, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, কেউ আবার সুযোগ কাজে লাগিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কি, ফ্রিল্যান্সিং শেখার উপায় নিয়ে বই পর্যন্ত লিখে ফেলেছেন। বাজারের সেসব বইয়ের অনেকগুলোই আপনার ফ্রিল্যান্সিং এর প্রতি আগ্রহ ধূলিসাৎ করার জন্য যথেষ্ট। প্র্যাক্টিক্যাল আর পুঁথিগত বিদ্যার পার্থক্যটা আমাদের এসব মহান বুদ্ধিজীবিরা প্রায়ই ভুলে যান।
আপনি যদি সত্যিই ফ্রিল্যান্সিং পেশায় আসতে চান, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং ক্যারিয়ার নিয়ে সম্পূর্ণ ধারণা থাকতে হবে, এখানে কি কাজ করা যায়, কিভাবে করতে হয়, কোন কাজের চাহিদা বেশি, সবকিছু জেনে তারপর শুরু করতে হবে। আপনিও যদি Freelancing কে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান, তবে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো বিষয়ে আজকের গাইডলাইনটি আপনার জন্যই।
ফ্রিল্যান্সিং কি | What is Freelancing in Bangla?
খুব সহজ বাক্যে ফ্রিল্যান্সিং বলতে বুঝায় নিজের যেখানে ইচ্ছা সে অনুযায়ী কাজ করার স্বাধীনতা, যার জন্য জমা দিতে হয়না কোনো সিভি কিংবা করতে হয়না ৯টা থেকে ৫টার অফিস। “নিজের বস নিজে” এ কথাটা মূলত ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বেশি কার্যকর।
ফ্রিল্যান্সিং কাকে বলে এটা বোঝার জন্য ধরুন কোনো একটা নতুন কোম্পানি বাজারে আসলো। এখন তাদের বেশ কিছু জিনিসের প্রয়োজন। বিশেষ করে লোগো ডিজাইন, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, কার্ড ডিজাইন, প্রোডাক্ট ডিটেইলস, বিজ্ঞাপন কপিরাইটিং, কনটেন্ট, ফটোগ্রাফস ইত্যাদি। এখন এসবের জন্য যদি শুরুতেই অনেক লোক নিয়োগ দেয়, তবে বাজেটে সমস্যা দেখা দেওয়া স্বাভাবিক। তারচেয়ে যদি কোন এক্সপার্টকে চুক্তি ভিত্তিক কাজ করানো যায়, তবে সেটা বেশ সাশ্রয়ী হতে পারে।
অনলাইন মার্কেটেপ্লেসে যারা এক্সপার্ট তারা চুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে কাজগুলো চুক্তিভিত্তিক করে থাকে। আর্টিকেল বা ব্লগ লেখকরা রাইটিং এর কাজটা করে, ওয়েব ডেভেলপার সাইট ডেভেলপমেন্ট আর ডিজাইনাররা কার্ড বা লোগো ডিজাইনের কাজ করে। কাজ শেষে ক্লায়েন্ট তার একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দেয়।
এখানে সুবিধা হলো, কোম্পানীর Employee খুঁজতে হলোনা, কিংবা ইনভেস্ট করে তাদের প্রতিমাসে বেতনও দিতে হচ্ছেনা। অন্যদিকে ফ্রিল্যান্সারও তার এই কাজ ঘরে বসেই শেষ করতে পারলো। এবং তার দক্ষতার জন্য কাজেরও অভাব হবেনা। ইটস আ উইন উইন গেম, হাহ!!
এখন আপনার প্রশ্ন থাকতে পারে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এমন কোনো কাজ জানি না, তাহলে!
না পারাটা খুবই স্বাভাবিক। সবাই কোনো না কোনো এক সময়ে কাজ শিখেছিল বলেই আজ তারা কাজটি করতে পারছে। আজকে শিখলে কালকে আপনিও পারবেন। মায়ের পেট থেকে আসার সময়েই তো আর কেউ কাজ শিখে আসেনা।
তাই আপনার প্রশ্ন হওয়া উচিৎ, আমি ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ কিভাবে শিখবো, কীভাবে একজন সফল ফ্রিল্যান্সার হতে পারি, বা কোন কাজ শিখলে ভালো হয়?
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো | How to learn freelancing in Bangla?
ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য তিনটি ধাপ অতিক্রম করতে হবে:
- প্রথমত, পছন্দের কাজ নির্ধারণ,
- দ্বিতীয়ত, সেই কাজের উপর নিজের আয়ত্ত্ব নিয়ে আসা, এক কথায় এক্সপার্ট হতে হবে এবং
- তৃতীয়ত ক্লায়েন্ট ডিলিং শেখা।
চলুন, ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো সেবিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা যাক।
১। ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কাজ নির্ধারণ
অনেকেই ফ্রিল্যান্সিং শেখার প্রাথমিক পর্যায়ে একসাথে অনেকগুলো বিষয় আয়ত্ত্ব করার চেষ্টা করেন। আমি বলছিনা অনেক বিষয়ে পারদর্শী হওয়াটা কোনো ভুল কাজ।
একজন ফুটবলার কিন্তু চাইলেই ক্রিকেট খেলতে পারেন, তাতে কোনো বাধা নেই। কিন্তু একজন ফুটবলার কি জাতীয় দলের হয়ে ফুটবল এবং ক্রিকেট দুটোই খেলতে পারেন? মূল কথা হলো তিনি কি দুটোতেই এক্সপার্ট হতে পারবেন! এটা কি সম্ভব?
নাহ, মোটেই সম্ভব না বললে ভুল হবে। কিন্তু এই সংখ্যাটা কত? তারা কোনো উদাহরণ নয়, এক্সেপশনাল।
তাই আপনি যত খুশি কাজ শিখুন তাতে কোনো বাধা নেই তবে কাজের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে করতে হবে। আমি সব একসাথে শিখে ফেলবো এইধরনের মনোভাব বর্জন করতে হবে।
একটা বিষয়েই প্রথমে কাজ শেখাটা নিঃসন্দেহে বুদ্ধিমত্তার পরিচয়। সেই বিষয়ে যখন আপনার আয়ত্ত আসবে তখন আরেকটা কাজ শিখবেন।
২। নির্দিষ্ট ফ্রিল্যান্সিং কাজের উপর ট্রেনিং/কোর্স করুন
বিষয়বস্তু বা কি কাজ করবো, তা ঠিক করার পর আমাদের মূল কাজ হলো সেবিষয়ে পারদর্শীতা অর্জন করা।
কোথায় ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করবেন ভাবছেন? দুইভাবে কোর্স বা ট্রেনিং নেওয়া সম্ভব।
- অফলাইন ও
- অনলাইন
অফলাইন ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার ব্যাপারে তো আমি কিছুই বলতে পারবোনা, তবে আপনার ইউনিয়ন পরিষদ, কিংবা আশে পাশের শহরে অনেক ট্রেইনার ও ট্রেনিং ইনস্টিটিউট পেয়ে যাবেন, যেখানে আপনার নির্ধারিত বিষয়ের উপর শিখতে পারবেন।
অনলাইনে ফ্রিল্যান্সিং কোর্স করার জন্য অফুরন্ত মাধ্যম আছে। অনলাইন কোর্স করার সাইট গুলোতে (ফ্রি+পেইড), পার্সোনাল ট্রেইনার প্রভৃতি মাধ্যমে Freelancing শিখতে পারবেন।
৩। ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার আগে ইন্টার্নশীপ করুন
- একজন ক্লায়েন্ট এর কাজ করার জন্য কি কি ইনফো নিতে হবে
- তার কোন কোন কাজ করতে হবে
- ক্লায়েন্ট আসলে কি চায়?
ক্লায়েন্টকে স্যাটিসফাই করার বিভিন্ন কৌশল সম্পর্কে জানতে হলে ইন্টার্ন করাটা আবশ্যক।
বর্তমানে অনেক এজেন্সি আছে যেখানে ইন্টার্ন করা যায়। প্রয়োজনে ফ্রিতে ইন্টার্নশীপ করুন। ভবিষ্যতে ক্লয়েন্ট ডিলিং এ প্রচুর ফায়দা পাওয়া যাবে।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো
প্রথম কথা হলো ফ্রিল্যান্সিং জানা আর ফ্রিল্যান্সিং শেখার মাঝে পার্থক্য বিদ্যমান। আপনি মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং সম্পর্কে জানতে পারবেন, তবে স্কিল অর্জন করা কঠিন হবে। কেননা, বেশিরভাগ কাজই মোবাইলে প্রাক্টিস করা যায় না। তবে কিছু কাজ রয়েছে, যা যেকোন স্মার্ট ডিভাইস দিয়েই করা সম্ভব।
যেমন: কন্টেন্ট রাইটিং! এখানে মূলত আপনার ইংরেজি দক্ষতা, টাইপিং এবং গ্রামারে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এই কাজের জন্য কম্পিউটারের প্রয়োজন হবে না। কিন্তু, আপনি যদি ওয়েবডিজাইন বা অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট এর মতো কাজ শিখতে চান, তাহলে নিশ্চয়ই মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখা সম্ভব না।
তাই, মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্ন করার আগে আপনি আসলে ফ্রিল্যান্সিং পেশায় কি কাজ করতে চান, সেটা ঠিক করা গুরুত্বপূর্ণ।
আপনি যদি এমন কোন ফ্রিল্যান্সিং করার মতো কাজ বাছাই করতে পারেন, যা মোবাইল দিয়ে করা সম্ভব, তাহলে অবশ্যই মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন।
মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং শেখার জন্য আপনিও অনলাইন ফ্রি, পেইড কোর্স, ইউটিউব চ্যানেল থেকে কাজ শিখতে পারবেন।
তবে, ফ্রিল্যান্সিংকে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে হলে একটি ল্যাপটপ থাকলে খুব ভালো হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে কিসের প্রয়োজন?
ফ্রিল্যান্সিং আসলে কোন কাজ নয়। ফ্রিল্যান্সিং মানে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুবিধা। এখন আপনি স্বাধীনভাবে কোন কাজ করতে চান, সেটা অবশ্যই শিখতে হবে। তবে ফ্রিল্যান্সিং কাজের জন্য অবশ্যই কিছু বিষয় আপনার মাঝে থাকা প্রয়োজন, যেমন:
১। ধৈর্য্য ধারণ: প্রথম শর্ত হলো কাজ শেখার সময় ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে, এটা অত্যন্ত জরুরি। বিরক্ত হওয়া যাবেনা, হাল ছাড়া তো যাবেই না।
২। ফ্রিল্যান্সিং সাইট ঘুরে দেখুন: এই পর্যায়ে বলে রাখা উত্তম, কাজ শেখার আগে আপনার অবশ্যই ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলো ভিজিট করা প্রয়োজন যেমন: আপওয়ার্ক, ফ্রিল্যান্সার, ফাইভার খুব মনযোগ দিয়ে ভিজিট করতে হবে। অবশ্যই তাদের জব ক্যাটাগরি গুলো দেখবেন, কি ধরনের জব অপশন রয়েছে, কোন কাজের কেমন চাহিদা সেসব সম্পর্কে তাহলে খুব সহজেই আপনি ধারণা গড়ে তুলতে পারবেন।
৩। সঠিক কাজ বাছাই করুন: আপনার কাজ যেন কখনোই আপনাকে বিরক্ত করতে না পারে এবং কাজ করাটা যেন উপভোগ্য হয়, তাই সবার আগে ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কি কাজ শিখতে চান তা ঠিক করে ফেলুন। এরপর নিজেকে প্রশ্ন করুন, কোন কাজটা আপনি করতে চান। আমি আবারও বলছি যেই বিষয়ের প্রতি আপনার আগ্রহ সেটাকেই প্রাধান্য দিবেন, তবে সহজ ফ্রিল্যান্সিং কাজ এর দিকে খুব বেশি ঝুঁকবেননা। কাজ নির্ধারণের সময় আপনার পছন্দ, কাজটির জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় স্কিল এবং চাহিদা, এই তিনটি জিনিস মাথায় রেখে কাজ নির্ধারণ করবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শিখবো
ফ্রিল্যান্সিং কাজ নির্ধারণ করবো কিভাবে তা জানলেন। এবার ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্নের উত্তর পেতে আপনাকে ফ্রিল্যান্সিং কোথায় শেখা যায় সেসম্পর্কে জানতে হবে।
১। ফ্রি কোর্স দিয়ে শুরু করুন: আপনার হয়তো জিজ্ঞাসা থাকতে পারে, আপনি কোথায় গেলে ভালোভাবে ফ্রিল্যান্সিং শিখতে পারবেন? এক্ষেত্রে আমার ব্যাক্তিগত অভিমত প্রাথমিকভাবে ফ্রি কোর্স করে। যারা অনালাইনে খুব সাক্সেসফুল তাদের বেশিরভাগই কিন্তু এভাবেই যাত্রা শুরু করেছিলেন। আপনি যদি ফ্রিতে ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোনো বিষয়ে শিখতে চান তবে বিভিন্ন সাইটের ফ্রি কোর্সগুলো থেকে কিছুটা জ্ঞান অর্জন করে নিন।
২। ইউটিউব চ্যানেল ফলো করুন: ইউটিউব থেকেও আপনি চাইলে খুব সহজে ফ্রিল্যান্সিং করা যায় এমন কাজ শিখতে পারেন। বাংলাদেশের অনেক সাক্সেসফুল ফ্রিল্যান্সারের নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেল আছে। অনেকগুলো ফ্রি কোর্সের ভিডিও তারা আপ্লোডও করেছেন চ্যানেলে। এছাড়া অনেক মেন্টরও আছে ইউটিউবে। আপনি যে বিষয় শিখতে চান তা নিয়ে সার্চ করলেই অজস্র ভিডিও পেয়ে যাবেন। অনেকে আবার ধারাবাহিকভাবে পুরো একটা কোর্সের ভিডিও প্রকাশ করে। আমি চাইলেই আপনাকে ৫টা চ্যানেলের নাম বলে দিতে পারি কিন্তু সেটা করা কোনো অর্থেই সমুচিত হবেনা।
৩। অনলাইন পেইড কোর্স: চাইলে প্রথমেই টাকা দিয়ে কোর্স করতে পারেন। বাংলাদেশেও বর্তমানে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইন কোর্স করাচ্ছে যার অনেকগুলোর বিজ্ঞাপন আপনারা নিশ্চয়ই দেখেছেন।
ফ্রিল্যান্সিং এর জন্য কাজ শেখায় এমন কিছু প্রতিষ্ঠান হলো-
- Coursera
- Udemy
- edX
- Masterclass
- Skillshare
- LinkedIn Learning
- 10Minute School
- রবি ১০ মিনিট স্কুল
- Interactive Cares
- বহুব্রীহি
- মুক্তপাঠ
- শিক্ষক.কম
- Repto BD
- ঘুড়িলার্নিং.কম
- LEDP
এছাড়াও, ফেসবুকে বেশ কিছু পেজ রয়েছে, যারা অত্যন্ত স্বল্প মূল্যে কাজ শেখায়। তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করবেন, না বুঝে কোনো প্রতারণার ফাঁদে পা দিবেননা। টাকা দেয়ার আগে নিশ্চিত হয়ে নিবেন।
আপনি আপনার আশেপাশে ভালো কোনো কোচিং সেন্টার বা মেন্টরের কাছ থেকে শিখে নিতে পারেন।
আমার অনুরোধ থাকবে আশেপাশে যে রিসোর্স পাবেন, সব জায়গায় ট্রাই করুন সেটা হউক ইউটিউব, প্রফেশনাল কোর্স, আশেপাশের মেন্টর।
ট্রাই করে দেখার পর সিদ্ধান্ত নিন কোথায় থেকে শিখবেন, কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ শিখবেন। আমি প্রায় সম্ভাব্য সবগুলো উপায় বলেছি এখন সিদ্ধান্ত আপনার।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে কি কি প্রয়োজন?
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এবিষয়ে এতকিছু জানার পর ফ্রিল্যান্সিং নয়, বরং ভাবুন, আপনি যে কাজ পারেন, বা করতে চান তা করতে কি কি প্রয়োজন? ধরুন, আমি ওয়েব ডেভেলপমেন্ট করবো, তাহলে কি কি দরকার? স্কিল, একটি কম্পিউটার ও ইন্টারনেট কানেকশান। তাইতো? বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং কাজেই এই তিনটি জিনিসই লাগে। তবে আন্তর্জাতিক ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে কাজের জন্য ভালো ইংলিশ জানাটাও জরুরী।
ফ্রিল্যান্সিং কাজ করতে যা প্রয়োজন:
- স্কিল
- একটি কম্পিউটার ও
- ইন্টারনেট কানেকশান
এছাড়া, ফ্রিল্যান্সিং করে সফলতা পেতে সফট স্কিল যেমন: কমিউনিকেশন, সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ইনফ্লুয়েন্স করার ক্ষমতা, ধৈর্য্য ইত্যাদি থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ।
ফ্রিল্যান্সিং এর কাজ সমূহ:
- আর্টিকেল রাইটিং
- এসইও
- ট্রান্সলেট
- অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট
- মার্কেটিং
- ছবি এডিট
- ভিডিও ইডিটিং
- অনলাইন টিউটরিং
- কীওয়ার্ড রিসার্চ
- ডাটা এনালাইসিস
- কপি রাইটিং
- প্রুফ রিডিং
- এনিমেশন তৈরি, ইত্যাদি।
ফ্রিল্যান্সিং শিখতে গেলে আপনাকে সবার আগে ঠিক করতে হবে আপনি কোনো বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী। উদাহরণ হিসেবে এই যে আমি, আর্টিকেল লিখছি এটা আমার আগ্রহের জায়গা। আপনিও যদি লেখালেখি করতে চান তাহলে ব্লগ বা আর্টিকেল লিখতে পারেন।
কিংবা আপনি যদি এম.এস ওয়ার্ড, এম.এস এক্সেল বা পাওয়ার পয়েন্টের স্লাইড তৈরির কাজ করতে পারেন তাহলে আপনি এই সার্ভিসটাও দিতে পারেন।
আপনি গ্রাফিক্স ডিজাইনিং পারলে ওয়েবসাইট ক্লায়েন্টের লোগো ডিজাইন করে দিতে পারেন। কোডিং পারলে ওয়েব ডেভেলপমেন্টের কাজ করতে পারেন।
উপরের চিত্রটি খেয়াল করলে দেখবেন, শুধুমাত্র ডিজাইন ক্যাটেগরিতে কত ধরনের কাজ পাওয়া যায়। তাই চাহিদাসম্পন্ন কাজ খুঁজে পাওয়া কোনো কঠিন বিষয় না। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটগুলোতে সাধারণত যেসব কাজ বেশি পাওয়া যায় তা একনজরে দেখে নিন।
ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কাজ শেখার ক্ষেত্রে আমার পরামর্শ থাকবে খুব সহজে করা যায় এমন কোনো কাজ শিখবেননা। কারণ সহজে যে কাজটা করা যায় তার কদর কিন্তু বেশিদিন থাকেনা।
একটা সময় ছিলো যখন ইমেজ ব্যাকগ্রাউন্ড চেঞ্জ করার কাজের অনেক চাহিদা ছিলো, কিন্তু আজ আপনাদের মধ্যে এমন কাউকে খুজে পাওয়া যাবেনা ছবি এডিট করতে পারেনা।
অর্থাৎ, মার্কেটে এই কাজটার ডিমান্ড কিন্তু আজ একদমই নেই, অথচ কয়েক বছর আগেও এই কাজ করে অনেকে মোটা অংকের টাকা আয় করতো।
তাই আপনি যেই কাজটা শিখতে চান তার ভবিষ্যৎ কি সেটা আগে ভেবে নিবেন। কিছুদিন পরেই যদি সে কাজের ডিমান্ড আর না থাকে তখন কিন্তু আপনাকে আবার নতুন করে কাজ শিখতে হবে তখন হয়তো আপনি উদ্দীপনা হারিয়ে ফেলবেন।
সফল ফ্রিল্যান্সার হওয়ার ইচ্ছা থাকলে কাজ শেখার ক্ষেত্রে যেটা সহজ কেবল সেটাকেই প্রাধান্য দিবেননা। যেটা কঠিন কাজ সেটা কিন্তু খুব বেশি মানুষ করেন না, তাই ওই কাজটা শেখা কিন্তু আপনার জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট। তাই, একটু এডভান্স ফ্রিল্যান্সিং কাজ শিখলে আপনি সারাজীবন নিশ্চিন্তে কাজ করে যেতে পারবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি
ফ্রিল্যান্সিংয়ে যেসব কাজের চাহিদা বেশি:
- অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট,
- ওয়েব ডেভেলপমেন্ট,
- গ্রাফিক্স ডিজাইন,
- কনটেন্ট রাইটিং রয়েছে।
তবে অন্য কাজগুলোও খুব বেশি পিছিয়ে নেই। ফ্রিল্যান্সার হিসেবে সফল হতে হলে আপনার নিজের কাজ ও দক্ষতার উপর জোর দিতে হবে, আপনার পাওয়া কাজগুলো ভালোভাবে ডেলিভারী করতে হবে। নিজেকে Top Rank এ নিয়ে করার চেষ্টা করুন।
সবচেয়ে চাহিদা সম্পন্ন কাজের গিগ প্রকাশ করে যদি কাজই না পান, তাহলে লাভ কি?
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এই প্রশ্নের পাশাপাশি ‘ফ্রিল্যান্সিং কোন কাজের চাহিদা বেশি’ বহুল প্রচলিত একটি ভুল প্রশ্ন। একটু সহজ করে ভাবুন তো! যে কাজের চাহিদা বেশি সে কাজে নিশ্চয়ই প্রতিদ্বন্দ্বিতাও বেশি হবে!
আবার ধরে নিলাম, ভিডিও এডিটিং এর চাহিদা খুব বেশি, অথচ আপনি ভিডিও এডিটিং জানেন না! তাহলে কি এখন ভিডিও এডিট করা শেখার পিছনে পরে যাবেন?
আপনি যা জানেন, যা করতে ভালবাসেন, এবং অবশ্যই চাহিদাও রয়েছে এমন কাজের প্রতি লেগে থাকেন। হ্যা, পাশাপাশি নিজেকে এগিয়ে রাখতে অন্যান্য বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করার চেষ্টা করতে পারেন।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শুরু করবো?
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো তা তো জানলাম। এবার আপনার স্কিল গড়ে তুলে নিজেকে প্রস্তুত মনে হলে এখন আপনি ইন্টারনশীপ থেকে বেরিয়ে আসার আগেই নিজেই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করার চেষ্টা পারেন।
তবে সেক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক থাকতে হবে, কেননা আপনার প্রতিটি ভুল পদক্ষেপ আপনার একাউন্টে খারাপ রেটিং পয়েন্ট যুক্ত করতে পারে। নিম্নোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন-
১। ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটে একাউন্ট তৈরি করুন
অনেকে কাজ শিখে একদম শতভাগ প্রস্তুতি নেওয়ার পর একাউন্ট তৈরি করে। যার কারণে কাজ শিখেও কাজের জন্য বসে থাকতে হয়। আপনার মোটামুটি ধারণা হওয়ার পর এক থেকে দুইটি ফ্রিল্যান্সিং সাইটে একাউন্ট তৈরি করুন এবং সুন্দর করে সাজিয়ে গিগ প্রকাশ করুন।
অল্প সময় হলেও প্রতিনিয়ত একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন। এতে সামান্য পরিমাণে হলেও গিগটি উপরে আসতে শুরু করবে।
২। প্রথম অর্ডারের জন্য অপেক্ষা করুন
একাউন্ট তৈরি কিংবা গিগ প্রকাশের সাথে সাথেই কাজ পেয়ে যাবেন, এমনটা ভাবলে আপনি খুব দ্রুতই হতাশ হতে চলেছেন। আমার কাছে গিগ প্রকাশের পর থেকে প্রথম কাজ পাওয়ার মাঝের সময়টাকে সবচেয়ে বেশি দীর্ঘ আর কঠোর মনে হয়।
কেননা, আমি কাজ জানি, আমার কাছে ফ্রিল্যান্সিং কাজ করার জন্য যা প্রয়োজন সব আছে, কিন্তু কাজটাই আসছে না!
হতাশ হয়ে অনলাইনে থাকা বন্ধ করবেন না। আমার প্রথম ফ্রিল্যান্স অর্ডারটা এভাবেই ব্যাক গিয়েছিল। ক্লায়েন্ট পেমেন্ট করে দেওয়ার পরও আমার রেসপন্স না পাওয়ায় পরবর্তীতে উনি রিফান্ড পেয়ে গেয়েছেন।
যাহোক, গিগ প্রকাশের সময় চার্জ অন্যদের চেয়ে কম রাখবেন, তবে অতিরিক্ত বেশি কম রাখলে আপনার স্কিল এর উপর সন্দেহ আসতে পারে।
৩। সময়মতো ডেলিভারী দিন
ক্লায়েন্ট বেশিরভাগ ইউরোপিয়ান হয়ে থাকে, যাদের কাছে সময়ের মূল্য সত্যিকার অর্থেই অনেক বেশি। সুতরাং, তাদেরকে আমাদের মতো ভেবে বসবেন না।
প্রকাশিত গিগ এ আপনার যতটুকু সময় লাগবে, প্রয়োজনে তারচেয়ে একটু বেশি রাখুন। কিন্তু যেদিন ডেলিভারী দিতে চেয়েছেন, সেটা কোনোভাবেই মিস করা যাবেনা।
৪। রেটিং চেয়ে নিন
ক্লায়েন্ট খুশি হলে নরমালি এমনিতেই রেটিং দিয়ে দেন। তবে অনেক সময় ব্যস্ততার কারণে হয়তো দিতে ভুলে যান।
এমন অবস্তায় তাকে অনুরোধ করুন যেন রেটিংটা দিয়ে দেয়। কারণ, ক্লায়েন্ট রেটিংই অন্যান্য ক্লায়েন্ট থেকে কাজ পাওয়ার হাতিয়ার।
পরবর্তীতে আপনার চাহিদা, কাজের মূল্য বৃদ্ধি পাবে যদি প্রতিনিয়ত ভালো রেটিং পেতে থাকেন।
৫। নিজের পোর্টফোলিও ওয়েবসাইট তৈরি করুন
- Bee seen: অনলাইনে কর্মীর কাজ সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়ার একমাত্র উপায় তার পূর্ব কাজগুলো দেখা।
- নিরাপত্তা: ইন্টারনেটে কিছুই নিরাপদ নয়, কিছুই সার্বজনীন নয়। তাই নিজের আইডিন্টিটি এবং আপনাকে খুঁজে পাওয়ার জন্য কাস্টমারদেরকে বিকল্প ঠিকানা দেওয়াটা জরুরী।
- কমিউনিটি তৈরি: একটি ওয়েবসাইটে বিভিন্ন ধরনের মানুষ আসে, কমেন্ট, শেয়ার করে। যার মাধ্যমে একটি শক্তিশালী কমিউনিটি তৈরি করা সম্ভব।
- বলার চেয়ে দেখান: আমি এই পারি, ওই পারি, সব পারি, এসব বলে আসলে কোনো ক্লায়েন্ট থেকে কাজ পাওয়ার আশা করা হতাশাই বাড়াবে। সুতরাং, এসব না বলে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে আপনার কাজগুলো দেখান, আকৃষ্ট করুন।
বড় বড় ফ্রিল্যান্সাররা এখন আর সেভাবে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট থেকে কাজ নেন না। কেই বা চায় নিজের ইনকাম করা টাকায় অন্যকে ভাগ দিতে?
তাই, আপনিও যদি বেশ ভালো অবস্থান তৈরি করতে পারেন, অর্থাৎ বেশ কিছু রেগুলার কাস্টমার পেয়ে যান, তবে ওয়েবসাইট তৈরি করে নিতে পারেন। সেখানে নিজের কাজের পোর্টফোলিও রাখার মাধ্যমে আরো বিভিন্ন সোর্স থেকে কাজ পাওয়া যাবে।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট তালিকা | Freelancing Website List
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো, এই প্রশ্নের উত্তরের পাশপাশি কোথায় কাজ করতে হবে সেটাও জানা জরুরী। ফ্রিল্যান্সারদের কাজ পাওয়ার জন্য যেসব ওয়েবসাইটে নিজের পোর্টফোলিও কিংবা গিগ প্রকাশ করা যায়, সেগুলোকেই আমারা ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট বলে থাকি।
ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটে ফ্রিল্যান্সাররা ক্লায়েন্ট ও জন্য অপেক্ষা করেন, জব পেতে বিড করেন। অন্যদিকে, ক্লায়েন্ট তার কাজ করানোর জন্য সঠিক ফ্রিল্যান্সার খুঁজে পান। সুতরাং, রিমোট জব করা এবং করানোর জন্য একটি মিডিয়া হিসেবে কাজ করে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট সমূহ।
জনপ্রিয় ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলো হলো:
- Freelancer.com
- Upwork.com
- Fiverr.com
- Guru.com
- Microworkers.com
বাংলাদেশী ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইট:
- Belancer.com
- shocchol.com
- dealancer.com
ফ্রিল্যান্সিং কাজ কিভাবে পাব?
১। অনলাইনে থাকুন
ফ্রিল্যান্স কাজ পাওয়ার জন্য ভীষণ ধৈর্য্য প্রয়োজন। অনেক সফল ফ্রিলান্সার রাতের পর রাত জেগে থেকেছে শুধুমাত্র নিজের প্রথম অর্ডার পাওয়ার জন্য।
বেশিরভাগ ফ্রিল্যান্সিং সাইটে ক্লায়েন্ট ফ্রিল্যান্সারকে নক দিয়ে কথা বলে নেন, তারপর কাজ দেয়। সেক্ষেত্রে অনলাইনে যারা থাকে তাদেরকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়।
২। রেটিং নিন
দ্বিতীয় ফ্যাক্টর রেটিং। রেটিং শূন্য ফ্রিল্যান্সারকে কাজ দিতে ক্লায়েন্ট কিছুটা ভয় পান। সেক্ষেত্রে একটি উপায় হলো ফেক অর্ডার তৈরি করা।
অর্থাৎ, কোনো বন্ধুর থেকে অর্ডার নিন। সেক্ষেত্রে অবশ্য আপনার ১ডলার লস হবে। কারণ ৫ডলার পে করলে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে আপনি ৪ ডলার ফেরৎ পাবেন। তবে একটা ৫স্টার রেটিং কিন্তু পরবর্তীতে শত শত ডলার নিয়ে আসতে পারে।
৩। বিড করুন
নতুন কোনো রিলেভেন্ট জব পোস্ট হলে প্রপোজাল পাঠান। রেটিং কম থাকা অবস্থায় বেশি দাম এবং সময় চাওয়া যাবে না।
ফ্রিল্যান্সার হিসেবে প্রথমে বেশি কাজের জন্য অনেক কম মূল্য পাওয়া যাবে, কিন্তু আস্তে আস্তে কম কাজে বেশি পেমেন্ট পাবেন। সুতরাং কাজের জন্য অতিরিক্ত ব্যস্ত হওয়া যাবেনা, আল্লাহর উপর ভরসা রেখে অপেক্ষা করুন, কাজ এসে যাবে ইন-শা-আল্লাহ।
ফ্রিল্যান্সিং এর টাকা কিভাবে পাবো?
এটা খুব ভালো প্রশ্ন! বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সারদের বলতে গেলে প্রধান সমস্যা।
ফ্রিল্যান্সিং সাইটগুলোতে মূলত পেপাল পেমেন্ট সিস্টেম ব্যবহার করে, যা বাংলাদেশে এখনো অ্যাভাইলেবল নয়। তাছাড়া, অন্যান্য মেথডগুলোও সহজ না। তবে আশার কথা হলো, সরকার এসব পেমেন্ট মেথড দেশে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা করে যাচ্ছে।
তাহলে বর্তমানে কিভাবে ফ্রিল্যান্সাররা টাকা আনছেন? আবারো ভালো প্রশ্ন হাহ!
কিছু সাইটে ব্যাংক মেথড রয়েছে, যেমন বর্তমানে পেওনিয়ার বাংলাদেশেও রয়েছে এবং অনেক সাইটেই পেপালের পাশাপাশি পেওনিয়ার ব্যবহৃত হয়। আবার অনেকে ডুয়েল কারেন্সি ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক একাউন্ট ব্যবহার করতে পারছেন। কিছু ক্ষেত্রে অনেকে ভার্চুয়াল কার্ড ব্যবহার করছেন, যার জন্য প্রতি মাসে কিছু চার্জ দিতে হয়।
এছাড়া, এখন অনেক অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে সার্ভিস আছে, যাদের কাছে ফ্রিল্যান্সিং মার্কেট একাউন্টের ডলার বিক্রি করে টাকা নেওয়া যায়।
আবার, অনেকে USA লোকেশন দেওয়া ভেরিফাইড পেপাল একাউন্টও কিনে ব্যবহার করেন।
তবে আমরা আশা করি, খুব শীঘ্রই এসব ঝামেলা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যাবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের সুবিধা
১. আপনি আপনার নিজের বস: আপনার ইচ্ছা মত যেখানে খুশি সেখানে কাজ করতে পারবেন। আপনি বাড়িতে, মাঠে এমনকি সৈকতে বসেও কাজ করার স্বাধীনতা পাবেন। এমনকি আপনি কাজ করার সময় চপ্পলও পরে থাকতে পারেন, এবং কেউ আপনাকে এবিষয়ে বলতে আসবেনা। আপনি আপনার নিজের বস হওয়ায় আপনাকে ইন্টারফেয়ার করার মতো কেউ থাকবে না।
২. সমস্ত ইনকাম আপনার: একজন কর্মচারী হিসাবে কাজ করার সময় সবচেয়ে দুঃখজনক অনুভূতি হলো কোনও প্রকল্পের জন্য সমস্ত কঠোর পরিশ্রম নিজে করার পরেও আপনার স্বাভাবিক নির্ধারিত নগণ্য বেতন পাওয়া। তবে একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, আপনি আপনার শ্রম থেকে পাওয়া সমস্ত ইনকাম নিজের জন্য রাখতে পারবেন। এখানে কারো সাথে শেয়ার করতে হবে না।
৩. নো টু আলোচনা সভা এন্ড মিটিং: আপনি কি শুধু ব্যবসায়িক মিটিং পছন্দ করেন না? একজন ফ্রিল্যান্সার হিসাবে, মিটিংগুলি অতীতের জিনিস হয়ে উঠবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের অসুবিধা
১. নো কন্ট্রোল: নিজেই নিজের বস হওয়া অনেকের জন্য কঠিন হতে পারে। যেখানে আপনার পুরানো বস প্রতি মাসের শেষে আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা রাখার জন্য বাধ্য ছিলেন, এখন এই দায়িত্ব শুধুমাত্র আপনার উপর বর্তাবে। কাজ না পেলে আপনার ব্যাংক একাউন্টে চাকরিজীবির মতো প্রতিমাসে নিয়মিত টাকা আসবেনা।
২. কম নিশ্চিয়তা: যখন প্রতিটি সিদ্ধান্ত সরাসরি আপনাকে এবং আপনার ফ্রিল্যান্স ব্যবসাকে ব্যক্তিগতভাবে প্রভাবিত করে, কোনো নেতিবাচক প্রভাব নিয়ে আসতে পারে, তখন আপনার উপর এমনিতেই চাপ বেড়ে যায়। আপনি কি মনে করেন যে আপনার বসের “আগামীকাল সকালের মধ্যে সেই ব্যবসায়িক পরিকল্পনা প্রস্তুত করার” দাবিগুলি চাপযুক্ত ছিল? এই চাপ আসলে কিছুই নয় যখন, আপনাকে বড় ক্লায়েন্টদের কাছে আপনার নিজের ব্যবসায়িক পরিকল্পনা এবং প্রকল্পের প্রস্তাব উপস্থাপনের জন্য প্রস্তুত করতে হবে।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধা থাকলেও দক্ষতা এবং প্যাশনের সংমিশ্রণ ঘটালে freelancing কাজের সুবিগুলোই সবসময় জয়লাভ করবে।
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো বিষয়ে শেষ কথা
ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো 2022 এ তা না হয় জানলেন। কিন্তু, কোন কাজ শিখবেন সেটা কিন্তু ঠিক হয়নি। এক্ষেত্রে একটা গুরুত্বপূর্ণ জিনিস মনে রাখবেন আপনার কাজ শেখার বা করার উদ্দেশ্য যদি অর্থ উপার্জন না হয় তাহলে আপনি নিশ্চিতভাবে যা খু্শি তা শিখতে পারেন। তবে যদি অর্থ উপার্জন আপনার উদ্দেশ্য হয়, তবে অবশ্যই মার্কেট ডিমান্ড সম্পর্কে জেনে নিবেন।
ফ্রিল্যান্সিং কাজের ভবিষ্যতের কথা ভেবে প্রতিনিয়ত স্কিল ডেভেলপ করবেন। একবার শিখেই কাজ করা শুরু করে দিবেন এবং অনবরত করতেই থাকবেন এমনটা কিন্তু না। সেই সাথে নিজেকে প্রতিদিন আরো উন্নতির সুযোগ দিন।
ইউটিউবে মাসে ৩০০ ডলার বা ৪০০ ডলার আয় করুন, বিকাশে ইনকাম, গেমস খেলে টাকা আয় ইত্যাদি ট্যাগ দেখে উচ্ছাসিত হবেননা। আর প্রথমেই হাজার টাকা আয় করার স্বপ্নে বিভোর হয়ে পড়বেননা।
অবশ্যই ডেটা এন্ট্রি টাইপ কাজ শেখা থেকে বিরত থাকবেন, সাময়িক সময় ডেটা এন্ট্রি থেকে কিছু উপার্জন হলেও ডেটা এন্ট্রি টাইপ কাজ কখনো আপনার Career Buildup এ সাহায্য করবেনা।
আর্টিকেলটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। আশা করি ফ্রিল্যান্সিং কিভাবে শিখবো এসব প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। ফ্রিল্যান্সিং করার জন্য কোন কাজটিকে বেছে নিচ্ছেন, তা আমাদের সাথে শেয়ার করতে ভুলেবেন না যেন।
কোন মন্তব্য নেই