রসায়ন নিয়ে কেন পড়বেন || রসায়ন নিয়ে পড়ে কি হওয়া যায় || Muhammed Juwel Ahmed ||


বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার সময় একজন শিক্ষার্থী সাবজেক্ট পছন্দ করতে অনেক সময় সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগেন। একটা সাবজেক্টে কী পড়ানো হয়, ভবিষ্যৎ কী, ক্যারিয়ার কোথায়—এসব জানা থাকলে তাঁর জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হয়ে যায়। তাই আজকে জানব রসায়ন বিষয় সম্পর্কে। 

কী পড়ানো হয় রসায়নে? 
রসায়ন বিষয়ে অনার্স করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে জৈব রসায়ন, অজৈব রসায়ন, ভৌত রসায়ন, প্রাণ রসায়ন, পরিবেশ রসায়ন, কৃষি রসায়ন, খাদ্য রসায়ন, পলিমার রসায়ন, শিল্প রসায়ন, নিউক্লিয়ার রসায়ন, তড়িৎ রসায়ন, বিশ্লেষণী রসায়ন, মেডিসিনাল রসায়ন প্রভৃতি বিষয়ে জ্ঞান অর্জন করতে হয়। পাঠ্যপুস্তকের পড়াশোনার পাশাপাশি হাতে-কলমে জ্ঞান অর্জনের জন্য প্রতিটি সেমিস্টারেই থাকে ব্যবহারিক অংশ। 

কোথায় পড়ব? 
বাংলাদেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ছাড়াও কিছু প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কিছু কলেজে রসায়ন বিষয়ে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের সুযোগ রয়েছে। এ ছাড়া প্রতিবছর বাংলাদেশের অনেক শিক্ষার্থী আন্ডারগ্র্যাজুয়েট পর্যায়ে রসায়ন বিষয়ে ডিগ্রি অর্জনের জন্য দেশের বাইরে পাড়ি জমান। যেখানেই হোক, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও ল্যাবরেটরির সুবিধা রয়েছে এমন প্রতিষ্ঠানই নির্বাচন করা উচিত রসায়ন বিষয়ে পড়ার জন্য। 

কারা পড়বে?
একাডেমিক বিষয়ের গভীরে গিয়ে জ্ঞানকে রপ্ত করতে ইচ্ছুক এমন শিক্ষার্থীদেরই রসায়ন বিষয় পছন্দ করা উচিত। এ ছাড়া দীর্ঘ সময় ধৈর্যসহকারে ল্যাব ওয়ার্ক করতে শিক্ষার্থীদের মাঝে একাডেমিক বিষয়ের প্রতি পরিপূর্ণ আন্তরিকতা থাকা প্রয়োজন। রসায়ন বিষয়ের সঙ্গে পদার্থ ও গণিত ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তাই রসায়নের শিক্ষার্থীদের এই দুটি বিষয়েও যথেষ্ট আগ্রহ থাকা দরকার।

বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় রসায়নের বিভিন্ন শাখায় গবেষণার জন্য মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরেট পর্যায়ে ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ দিয়ে থাকে।

ক্যারিয়ার কোথায়? 
রসায়ন বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স করলে অনেক আকর্ষণীয় ও উজ্জ্বল ক্যারিয়ার গঠনের সুযোগ তৈরি হয়। এ বিষয়ে ডিগ্রিধারীদের জন্য খোলা রয়েছে সরকারি-বেসরকারি নানা কর্মক্ষেত্রের দুয়ার। সরকারি যেসব প্রতিষ্ঠানে রসায়নবিদ হিসেবে চাকরির সুযোগ রয়েছে, সেগুলো হলো: বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (BCSIR), বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (BSTI), বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশন (BAEC), ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর, নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ, জনস্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, ওয়াসা, বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (BCIC), সিকিউরিটি প্রিন্টিং করপোরেশন, বাংলাদেশ সমরাস্ত্র কারখানা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (PDB), পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, খাদ্য অধিদপ্তর, খাদ্য ও চিনিশিল্প করপোরেশন, ফরেনসিক ল্যাব, ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর প্রভৃতি। বেসরকারি ও বহুজাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, যেমন খাদ্যদ্রব্য, কসমেটিকস, ওষুধ, সিমেন্ট, সার, কীটনাশক, পেইন্টস, মেটাল, সফট ড্রিংকস, ভোজ্যতেল, পলিমার, গার্মেন্টস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান, ডাইং সেক্টর, শিল্প বর্জ্য ব্যবস্থাপনা প্রভৃতি ক্ষেত্রে একজন রসায়ন গ্র্যাজুয়েট ক্যারিয়ার গড়তে পারেন।

সরকারি-বেসরকারি সাধারণ কিংবা কারিগরি বিভিন্ন পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে রসায়ন গ্র্যাজুয়েটদের চাকরির একটা বিরাট ক্ষেত্র রয়েছে। এ ছাড়া অ্যানালাইটিকাল অ্যাবিলিটি ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করার সক্ষমতা তৈরি হওয়ায় বিসিএস ও অন্যান্য চাকরিতেও নিয়োগকর্তারা রসায়ন গ্র্যাজুয়েটদের একটু বেশিই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। 

গবেষণা
রসায়নের শিক্ষার্থীদের একটি আকর্ষণীয় সুযোগ রয়েছে গবেষণাক্ষেত্রে আত্মনিয়োগ করার। বিশ্বের বিভিন্ন খ্যাতনামা বিশ্ববিদ্যালয় রসায়নের বিভিন্ন শাখায় গবেষণার জন্য মাস্টার্স, এমফিল, পিএইচডি ও পোস্ট ডক্টরেট পর্যায়ে ফুল-ফান্ডেড স্কলারশিপ দিয়ে থাকে। প্রতিবছর বাংলাদেশের বহু শিক্ষার্থী রসায়ন বিষয়ে গবেষণার জন্য ফেলোশিপ নিয়ে দেশের বাইরে পাড়ি জমান। গবেষণা করতে হলে একজন শিক্ষার্থীকে অনার্স পর্যায়ের শুরু থেকেই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে একাডেমিক বিষয়ের গভীরে ঢুকে জ্ঞান অর্জন করতে হবে। শিক্ষকের তত্ত্বাবধানে থেকে গবেষণাকর্মের অভিজ্ঞতা অর্জন করতে হবে। রসায়ন বিষয়ে গবেষণার সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হলো: ন্যানো টেকনোলোজি, ন্যাচারাল প্রোডাক্টস কেমিস্ট্রি, গ্রিন সিনথেসিস, মেডিসিনাল কেমিস্ট্রি, বায়ো পেস্টিসাইড প্রভৃতি। গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠানে চাকরি কিংবা শিক্ষকতা পেশায় থাকলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বাড়ানো দরকার। 



               MUHAMMED JUWEL AHMED 

আসসালামু আলাইকুম, আমি মোহাম্মদ জুয়েল আহমদ। ফাউন্ডার জুয়েল আহমদ ব্লগ । অনলাইন ইন্ড্রাস্টিতে কাজ করছি গত ৬ বছর ধরে। পড়ালেখা করেছি ইংরেজি নিয়ে পাশাপাশি সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে। এ জন্য অনলাইন ক্যারিয়ার বিষয়ক গাইডলাইন দিতে পছন্দ করি। যারা আমার কাছে অনলাইন ক্যারিয়ার গাইড নেয় তাদেরকে আমি আমার জ্ঞান থেকে বিশুদ্ধ জিনিস টা দেওয়ার চেষ্টা করি এবং যাতে সফলতা অর্জন করতে পারে সেজন্য যথাসাধ্য সহযোগীতা করার চেষ্টা করি। আর এই প্রয়াস থেকে আমার লেখালেখি, যাতে করে অনলাইন ক্যারিয়ার এর বিষয়ক সঠিক গাইড লাইন গুলো মানুষ পায় এবং ভুল পথে পা না বাড়ায়। এছাড়াও আমি কাজ করছি ডিজিটাল মার্কেটিং এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ন সেক্টর (এস ই ও) কৌশল নিয়ে।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.