ভুল থেকে শিক্ষা নাও, লেখক মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ

ভুল থেকে শিক্ষা নাও 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ জুয়েল আহমেদ 
তারিখ ২০ জুন ২০২২ ইংরেজি, রোজ সোমবার 

আসসালামু আলাইকুম,আমি মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ,  প্রিয় ভাই বোনেরা সবাই কেমন আছো, আশা করি তোমরা সবাই অনেক ভালো আছো, আলহামদুলিল্লাহ আমিও আল্লাহর রহমতে আমি ভালো আছি, আজকে অনেকদিন পর লিখতে বসলাম, ইদানীং আমি ব্যক্তিগত কাজে ব্যস্ত থাকার কারনে লিখার জন্য সময় পাইনি, যাই হোক আজকে লিখতে বসলাম,  আজকে আমার মুল আর্টিকেল হলো,ভুল থেকে কিভাবে শিক্ষা নিবেন, এবং কিভাবে ভুল শুধরাবেন, চলুন শুরু করি....................

ভুল আমাদের জীবনের খুবই স্বাভাবিক একটি বিষয়। আমরা জেনে বা না জেনে অনেক সময় অনেক ভুল করে থাকি। এটা খারাপ কিছু নয়, স্বাভাবিক। কিন্তু সমস্যাটি তখনই হয় যখন আমরা ওই ভুল থেকে শিক্ষা না নিই।

পৃথিবীতে যত সফল মানুষ আছেন বা ছিলেন বা আসবেন সবার মধ্যে কিছু মিল আছে। সেগুলোর মাঝে একটি হল ভুল থেকে শিক্ষা নেয়া। কেউই ১০০% সঠিক থাকে না সবসময়। ভুল মানুষের হবেই। যারা সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে তারাই সফলতার দিকে এগিয়ে যেতে পারবে।

আমরা বেশিরভাগ সময়েই কোন ভুল করলে সেটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি। এর ফলে অন্যদের চোখে আমাদের সম্পর্কে খারাপ ধারণার সৃষ্টি হয়। এছাড়াও যখন আমরা আমাদের দোষ অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করি, তখন আমরা কোন না কোন গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হই। কিন্তু যদি আমরা সেই দোষ মেনে নিয়ে তা থেকে শেখার চেষ্টা করতাম তাহলে হয়তো পরবর্তীতে সেই ভুল এড়িয়ে চলার উপায় শিখতে পারতাম।

চলো দেখে আসি কীভাবে আমরা আমাদের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নিতে পারি।

ধাপ ১: ভুল স্বীকার করে নিতে শেখো

ভুল থেকে শেখার জন্য আমাদের নিজেদের ভুলগুলোকে স্বীকার করে নিতে শিখতে হবে। কোন ভুল করলে তা স্বীকার করা এবং সেই ভুলের ফল ভোগ করার মধ্য দিয়েই আমাদের মনে সেই ভুল দ্বিতীয়বার না করার ইচ্ছা জেগে উঠে। আর যদি আমরা সেই ভুল অন্যের ঘাড়ে চাপাতে পারি তাহলে আর সেটা থেকে শিক্ষা নেয়ার ইচ্ছা থাকে না কারণ তখন আমাদের মনে হয় যে পরেরবারও এমন হলে অন্য কারো ঘাড়ে চাপিয়ে দেয়া যাবে।

তাই যদি তুমি কোন ভুল থেকে শিক্ষা নিতে চাও তাহলে সেই ভুলটা নিজেকেই স্বীকার করে নিতে হবে।

ধাপ ২: ভুলটাকে স্বাভাবিকভাবে নাও

ভুল মানুষের হতেই পারে। তুমিও ভুল করতেই পার। তাই ভুলটাকে স্বাভাবিকভাবে নাও। নিজেকে দোষী ভেবো না। যদি কোন ভুলের জন্য নিজেকে দোষী ভাবা শুরু কর তাহলে দেখবে আরো হতাশ হয়ে পড়বে এবং সেটা থেকে কিছু শিখতে পারবে না।

এর চেয়ে বরং ভুল করাটাই স্বাভাবিক মেনে নিয়ে মনস্থির করবে তা থেকে কিছু শেখার জন্য। তাহলেই দেখবে হতাশ হচ্ছ না, বরং কিছু শিখতে পারছ।


ধাপ ৩: কারণ খুঁজে বের করো

ভুলটা নিয়ে খুব বেশি হতাশ না হয়ে তোমাকে সেই ভুলের কারণটা খুঁজে বের করতে হবে। কারণ খুঁজে বের করা হচ্ছে ভুল থেকে শেখার প্রথম পদক্ষেপ। তাই সময় নিয়ে ভাবো কোন কাজটার জন্য এই ভুলটি হল। মাঝে মাঝে দেখা যায় ছোট ছোট অভ্যাসের কারণে কোন ভুল হতে পারে। তাই নিজের কাজের পাশাপাশি অভ্যাসগুলোকেও পরীক্ষা করে দেখবে। যদি প্রয়োজন হয় তো কোন খাতায় বা ডায়েরিতে কারণগুলো লিখে রাখবে।

কখনো কোন কিছুর জন্য নিজেকে নির্দোষ ভেবো না। খুব ছোট ছোট ভুল করে থাকলেও সেটা তোমারই ভুল, তার জন্য তোমার দোষ আছে। অনেক সময় আমরা ছোট ছোট ভুল এড়িয়ে যাই এই বলে যে ওটা কোন ভুল না। যার ফলে সেই একই ভুল আবার হতে পারে।

তাই ভুলগুলো বা কারণগুলো যত ছোটই হোক না কেন, এড়িয়ে যাওয়া চলবে না। সেগুলোর দিকেও আলাদা আলাদা করে নজর দিতে হবে এবং শুধরে নিতে হবে। তাহলেই তোমার চেষ্টা ফলপ্রসূ হবে।

ধাপ ৪: নিন্দুককে ঘৃণা করো না

আমাদের চারপাশের মানুষ আমাদের সম্পর্কে অনেক কথা বলে, তাই না? এগুলোকে পজিটিভলি নাও। মানুষের কথা থেকেই খুঁজে বের কর তোমার কি কি ভুল হচ্ছে। কবি তো এমনি এমনি বলেননি যে তিনি নিন্দুককে সবার চেয়ে বেশি ভালোবাসেন।

আসলে নিন্দুকরা আমাদের ভুল শুধরে নেয়ার একটা বড় সুযোগ দেয় যা তারা নিজেও জানে না। নিজের সম্পর্কে আমরা অনেক কিছুই এড়িয়ে যাই যা আমাদের নিন্দুকরা এড়িয়ে যায় না। তাই যদি কেউ তোমার সম্পর্কে কোন খারাপ কথা বলে, সেটা এড়িয়ে না গিয়ে একটু ভাবো আসলেই তোমার কোন ভুল আছে কিনা।


ধাপ ৫: শুধরানোর উপায় খুঁজে বের করো

ভুলগুলো চোখে পড়ার পর তোমার সেই ভুল শুধরানোর উপায় খুঁজে বের করতে হবে। সেজন্য তোমাকে যা করতে হবে তা হল একটু ফ্লাশব্যাকে চলে যাওয়া। মাথা ঠান্ডা করে ভাবো ওই ভুলটা করার সময় ওই ভুল কাজটা করা ছাড়া তোমার অন্য কিছু করার ছিল কিনা। যদি থাকে তাহলে সেই কাজটা করলে সেটার ফলাফল কি হতে পারত। এভাবে ভাবতে ভাবতে তুমি এমন একটা পথ পেয়ে যাবে যেটা করলে ওই ভুলটা হত না।

     নিজে যেই ভুলগুলো করি তা থেকে শেখার          পাশাপাশি আমরা অন্যের ভুল দেখেও শিখতে৷৷ পারি


ধাপ ৬: ভেবে কাজ করো

যদি একই ভুল বারবার করা থেকে বাঁচতে চাও তাহলে উপরের ধাপটির মত তা শুধরানোর উপায় খুঁজে বের করে রাখ। পরেরবার একই অবস্থার সম্মুখীন হলে ভেবেচিন্তে সেই উপায় অবলম্বন করে চলতে পারলে হয়তো সেই ভুল আর হবে না।

আর তাছাড়া কোন কাজ করার আগে অবশ্যই ভেবে নিবে কাজটি ভুল নাকি সঠিক। তাহলেই দেখবে তোমার ভুলের পরিমাণ ধীরে ধীরে কমতে থাকবে।

ধাপ ৭: পরামর্শ নিতে জড়তা বোধ করো না

যদি তোমার মনে হয় কোন কিছু ভুল করেছ এবং নিজে ভেবে তা শুধরানোর উপায় বের করতে পারছ না, তাহলে অন্য কারো কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পার। বাবা-মা, বড় ভাই বা বোন এর কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পার।

এছাড়াও পরিচিত এমন কেউ যাকে তুমি বিশ্বাস করতে পার তার কাছ থেকে পরামর্শ নিতে পার। সে হতে পারে বন্ধু বা সহপাঠী, হতে পারে কোন বড় ভাই। অন্যের ভালো পরামর্শ তোমাকে ভুল থেকে শিক্ষা নিতে সাহায্য করবে।


ধাপ ৮: অন্যের ভুল দেখেও শেখো

নিজে যেই ভুলগুলো করি তা থেকে শেখার পাশাপাশি আমরা অন্যের ভুল দেখেও শিখতে পারি। এর ফলে আমাদের শেখাটা আরো কার্যকরী হবে। যখন কাউকে ভুল করতে দেখবে তখন ভেবে দেখবে তুমি তার জায়গায় থাকলে কি করতে, কিভাবে তুমি সেই ভুলটিকে এড়িয়ে যেতে পারতে। এভাবে তুমি অন্যের ভুল থেকেও শিখতে পারবে।

ভুল থেকে শিক্ষা গ্রহণ করা কিছু বড় বড় ভুল থেকে বাঁচিয়ে রেখে আমাদের জীবনকে আরো সুন্দর করে তোলে। তাই চেষ্টা করবে নিজের ভুলগুলো থেকে শিক্ষা নেয়ার পাশাপাশি আশেপাশের মানুষের ভুল থেকেও শিক্ষা নেয়ার। তাহলেই সফলতার পথে আরো এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারবে।




                    

            MUHAMMED JUWEL AHMED

                                                                  

মোহাম্মদ জুয়েল আহমেদ, আমি একজন ক্ষুদ্র ব্লগার। লিখতে খুব ভালােবাসি, তাই লিখালিখি করি । অনলাইনে বিভিন্ন ব্লগে আমি ২০১৬ সালের থেকেই লিখালিখি করছি । আমি বিয়ানিবাজার সরকারি কলেজে লেখা পড়া করছি । অনার্স ৩য় বর্ষে, ইংরেজি বিভাগে । সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন , যাতে আমি বড় হয়ে একজন আদর্শ বান মানুষ হিসেবে নিজেকে গড়তে পারি ।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.