সিভি কভার লেটার লেখার নিয়ম




সিভি কভার লেটার লেখার নিয়ম জানেন না অনেকেই। কিন্তু নিজেকে বিক্রির সহজ মাধ্যম হচ্ছে সিভি কভার লেটার। নিয়োগকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণের বড় হাতিয়ার। কিন্তু চাকরির জন্য কভার লেটার প্রয়োজন এটা অনেকেরই অজানা। অনেকে কভার লেটার প্রয়োজন বুঝে কিন্তু সিভি কভার লেটার লেখার নিয়ম না জানায় তা সিভির সাথে সংযুক্ত করেন না।

কভার লেটার কি?

কভার লেটার হলো সেই হাতিয়ার। যার মাধ্যমে নিয়োগ কর্তাকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারেন। কারণ সিভিতে আপনি কাউকে সম্বোধন করতে পারবেন না। কিন্তু চাকরিদাতাকে নিজের আগ্রহ ও উৎসাহ প্রকাশ এমন শব্দ ব্যবহার করে ঘায়েল করতে পারেন। তাছাড়া আপনি কেন এই পদের জন্য অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবেন, সেই যুক্তিই তুলে ধরতে পারেন।

যদি অন্যভাবে বলা যায়, কভার লেটার এই দু শব্দের মধ্যেই যদি অর্থ খুঁজি তাহলে আমরা কি পাচ্ছি। আপনার চাকরির আবেদনকে কভার করতে যে লেটার লেখা যায়। মূলত সিভিতে আপনি নিজের সম্পর্কে যেসব বিষয় তুলে ধরতে পারেন না, তা সংক্ষেপে কাভার লেটারে তুলে ধরা যায়। এককথায়, সিভি কভার লেটার লেখার নিয়ম এ লুকিয়ে থাকে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রির জন্য যাবতীয় কৌশল!


চাকরির জন্য কভার লেটার

চাকরির জন্য কভার লেটারের প্রচলন অনেক আগে থেকেই। তাই এই প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে সিভির চেয়েও অনেক ক্ষেত্রে কভার লেটারের গুরুত্ব বেশি। কারণ সিভি সবার প্রায় একই রকম হয়ে থাকে, কিন্তু কভার লেটার আপনাকে অন্যান্য চাকরি প্রার্থীর থেকে এগিয়ে রাখবে। তাছাড়া সংক্ষেপে আপনি আবেদনকৃত কোম্পানী বা সংস্থা সম্পর্কে লিখতে পারবেন, যা ওই প্রতিষ্ঠানের প্রতি আপনার বাড়তি আগ্রহের প্রকাশ পাবে।

সেইসাথে  জীবনবৃত্তান্ত বা সিভি সাথে চাকরির জন্য কভার লেটার না থাকলে চাকরিপ্রার্থীর আবেদনেই এক ধরণের দুর্বলতা প্রকাশ পায়। চাকরিরি জন্য মেইলে সিভি পাঠাতে আপনি যে মেইল করে থাকেন সেটিও কিন্তু কভার লেটার। তাই তাড়াহুড়া করে মেইলে সিভি পাঠানোর আগে টেক্সট বক্সে কাভার লেটার লিখুন। চাইলে আলাদা করে লিখেও সিভির সাথে সংযুক্ত করতে পারেন।

“কভার লেটার লেখার ভুলে ভাইভার জন্য ডাক পান না অনেকেই” 

কভার লেটার লেখার নিয়ম

সিভি কভার লেটার লেখা খুব চ্যালেঞ্জিং। শুধুমাত্র নবীনদের জন্য নয় অভিজ্ঞ পেশাদারদের জন্যও। তাই সিভি কভার লেটার লেখার নিয়ম জেনে নিয়ে লিখতে হবে নির্ভুলভাবে। প্রত্যেক পদ এবং প্রতিষ্ঠানের জন্য আলাদা আলাদাভাবে কভার লেটার লিখতে হবে। অনেকেই একই ধরণের ভুল করে থাকেন। এবার জানাচ্ছি কভার লেটার লেখার নিয়ম-

সম্বোধন ব্যবহার

কভার লেটারের শুরুতেই সম্বোধন সূচক বাক্য লিখতে হবে। তাই পারলে যার উদ্দেশ্য করে লিখবেন তার নাম এবং পদবী লিখুন। না জানা থাকলে “To Whom it May Concern” বা “Dear Sir” ব্যবহার করতে পারেন। তবে বর্তমানে অনেকেই সম্বোধনের জন্য ”Dear Hiring Manager”  বা ”Dear Human Resources Manager” লিখছেন। চাইলে আপনি আরও বেশি আকর্ষণীয় করে সম্বোধন করতে পারেন।

পদ ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ

কভার লেটারে আপনি যে পদে আবেদন করবেন সেই পদ এবং প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করুন। খেয়াল রাখতে হবে কভার লেটার জন্য অবশ্যই ওই পদ এবং প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংগতিপূর্ণ হয়। প্রয়োজনে ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বিভিন্ন মাধ্যমে ভালো করে জেনে নিন। তবে কভার লেটার লেখার ক্ষেত্রে সবাই কমন যে ভুল করেন তা হলো- একই কভার লেটার সব প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা।

অনেকেই আবার অন্যের কভার লেটার হুবহু কপি করতে গিয়ে প্রতিষ্ঠানের নাম ও পদবী পর্যন্ত পরিবর্তন করেন না। তাই এ বিষয়ে সাবধান হতে হবে। উচিত হবে নিজের কভার লেটার নিজেরই লেখা।.

দক্ষতা তুলে ধরুন

কভার লেটারে যে পদে আবেদন করবেন সেই পদে কেন আপনি দক্ষ এবং অন্যদের থেকে এগিয়ে তা তুলে ধরুন। আপনার দক্ষতা এবং পারদর্শিতা কীভাবে ওই প্রতিষ্ঠানের কাজে আসবে তা লিখুন। অবশ্যই এমন কিছু লিখবেন না যা সিভিতে লেখা আছে।

আগ্রহ তুলে ধরুন

আগেই বলেছি, নিজেকে বিপণনের অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে কভার লেটার। তাই আপনার কভার লেটার যত আকর্ষণীয় হবে চাকরির প্রতি আপনার আগ্রহ তত বেশি প্রকাশ পাবে। তাই নিজের দক্ষতার পাশাপাশি যে পদে আবেদন করতে চাচ্ছেন, তা কেন চাচ্ছেন তার যুক্তিযুক্ত কারণ তুলে ধরুন। তবে কোনভাবেই ওভার কনফিডেন্ট হলে চলবে না। আর অবশ্যই চাকরিরদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা প্রকাশ করুন।

সহজবোধ্য করে তুলুন

সিভি লেটার লেখার সময় অবশ্যই দুর্বোধ শব্দ ব্যবহার করা উচিত নয়। কভার লেটারের ভাষা হবে প্রাঞ্জল। জেনো চাকরিদাতাকে মুগ্ধ করে। অনেকেই নিজের মেধা তুলে ধরতে দুর্বোধ শব্দ ব্যবহার করেন যা উচিত নয়। কভার লেটার জন্য যত সংক্ষিপ্ত হত তত ভালো।

নাম এবং সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিখতে

কভার লেটারের শেষে অবশ্যই আপনার নাম এবং সংক্ষিপ্ত পরিচয় লিখতে হবে। অনেকেই কভার লেটার লেখার সময় এই ভুল করে থাকেন। যা কভার লেটারের অসম্পূর্ণতা প্রকাশ পায়।

সিভি সহ কাভার লেটার কৌশল

সিভি সহ কাভার লেটার লেখার সময় কিছু কমন ভুল হয়। তা তুলে ধরছি-

    • সঠিকভাবে সম্বোধন না করা।
    • সংগতিপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা।
    • অপ্রয়োজনীয় তথ্য বেশি তুলে ধরা।
    • ভুল তথ্য তুলে ধরা।
    • পদ ও প্রতিষ্ঠানের নাম ভুল করা।
    • কভার লেটারে বানান ভুল করা।
    • Times New Roman ফ্রন্ট ব্যবহার না করা ও ফ্রন্ট সাইজ ১২ না রাখা।
    • রঙিন কাগজ বা ফ্রন্ট ব্যবহার করা।
    • সিভিতে লেখা বিষয়গুলোর পুনরাবৃত্তি করা।
    • সিভির সাথে কভার লেটারের মিল না থাকা।
    • সঠিক নিয়ম অনুসরণ না করা।
    • অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসী হিসেবে উপস্থাপন করা।
    • কভার লেটার সংক্ষিপ্ত ও প্রাঞ্জল ভাষায় না লেখা।
    • কভার লেটার সাজিয়ে না লেখা।


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.