খারাপ থেকে ভালো হওয়ার উপায় গুলো কি কি ? Muhammed Juwel Ahmed |

আপনি যদি খারাপ থেকে ভালো হওয়ার উপায় খুঁজছেন, তাহলে একেবারে সঠিক জায়গাতে চলে এসেছেন।

মনুষ্য জন্ম নিলেই কেউ কিন্তু প্রকৃত মানুষ হয় না।

তিন অক্ষরের ‘মানুষ’ শব্দটি – মান এবং হুশ এই দুটি ভিন্ন শব্দের যোগে তৈরী।

কিন্তু প্রশ্ন হল – আমাদের মধ্যে কত জন প্রকৃতপক্ষে মান এবং হুশ সম্পন্ন একজন আদর্শ ব্যক্তি হয়ে উঠতে পেরেছি?

মানুষ ভালো ও খারাপ উভয় গুনের বাহক।

এক্ষেত্রে আদর্শ ব্যক্তি মানেই যে তার কোনো খারাপ গুন নেই এমনটা হলফ করে বলা যায় না।

তবে হ্যাঁ, যারা আত্ম-সমালোচনার মাধ্যমে নিজেদের খারাপ বা নেতিবাচক দিকগুলিকে শুধরে নিতে পারেন তারাই প্রকৃত মানুষ হওয়ার সোপান চড়ার যোগ্য।

এবার আপনার মনে প্রশ্ন জাগতেই পারে যে, কীভাবে একজন মানুষের মতো মানুষ হয়ে ওঠা যায়?

একজন আদর্শ মানুষ হয়ে ওঠার সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ধাপটি হল, নিজেকে ভালোবাসা এবং নিজের দোষ-ত্রুটি মানার ক্ষমতা রাখা।

আশেপাশের মানুষগুলির সাথে সুন্দর সম্পর্ক গড়ে তোলা।

তবে এইটুকুই যথেষ্ট নয়। এরকমই একাধিক ধাপ আছে, যা পেরোলে একজন ‘আইডিয়াল’ মানুষ হয়ে ওঠা যায়।

খারাপ থেকে ভালো হওয়ার উপায় গুলো

কিভাবে খারাপ থেকে একজন ভালো মানুষ হওয়া যাবে ?
খারাপ থেকে ভালো হওয়ার উপায়
আজ আমরা একটু ব্যতিক্রমী হয়ে এই প্রতিবেদনে একজন খারাপ মানুষ থেকে ভালো মানুষ কীভাবে হওয়া যায় তার কিছু টিপস দেব।

১. কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন :

আপনি কোনো বিষয় সম্পর্কে বা কারোর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকলে লজ্জা না পেয়ে তা মন খুলে প্রকাশ করুন।

কেননা গবেষণায় দেখা গেছে যে, কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার আচরণ দৈনন্দিন জীবনের মানসিক চাপ এড়াতে, ঘুমের মান উন্নতি করতে এবং আরও ইতিবাচক সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে।

এই বিষয়ে স্পোর্টস সাইকোলোজির এক মেন্টাল পারফরম্যান্স প্রশিক্ষক আনা হেনিংস (MA), “আপনি কোন কোন বিষয়ে বা করোর প্রতি কিসের জন্য কৃতজ্ঞ তা সনাক্ত করতে, GIFT টেকনিকের ব্যবহার করতে পারেন” এই পরামর্শ দিয়েছেন।

‘GIFTS’ টেকনিক কি ?

GIFTS শব্দের প্রত্যেকটি অক্ষরের ‘ফুল ফর্ম’ হল –

১) Growth,

২) Inspiration,

৩) Friends/family,

৪) Tranquility, এবং

৫) Surprise।

উদাহরণ নিম্নরূপ –

• বৃদ্ধি (Growth) : নতুন কোনো স্কিল শেখার মাধ্যমে পার্সোনাল গ্রোথ করুন।
• অনুপ্রেরণা (Inspiration) : যেই সকল মুহূর্ত বা জিনিস আপনাকে অনুপ্রাণিত করেছে তার তালিকা করুন।
• বন্ধু/পরিবার (Friends/family) : কাছের মানুষদের সাথে প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন, যারা আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করছে।
• প্রশান্তি (Tranquility) : জীবনের ছোট-ছোট মুহূর্তগুলিকে উপভোগ করুন।
• সারপ্রাইস (Surprise) : অপ্রত্যাশিত ভাবে কেউ সারপ্রাইজ করলে সেটিকে সুন্দর অনুগ্রহ বা ফেভার ভেবে কৃতজ্ঞ হন।

হেনিংস আরো বলেছেন যে – যেই সকল জিনিসগুলির জন্য আপনি কৃতজ্ঞ সেগুলিকে তালিকাভুক্ত করুন।

একই সাথে, কেন আপনি কৃতজ্ঞ সেই কারণটিও লিখে রাখুন।

২. অন্যদের অভিবাদন জানান :

রাস্তায় হেঁটে যাওয়ার সময় আমাদের একাধিক অচেনা মুখের সাথে দেখা হয়।

তবে যেহেতু এইসকল মানুষ অপরিচিত, সেহেতু তাদের দিকে তাকিয়ে হাসা বা অভিবাদন জানানোর প্রয়োজন বোধ করি না আমরা।

কিন্তু এই আচরণ একটু পরিবর্তন করলে আপনার মানসিকতার উপর শুভ প্রভাব পরতে পারে।

যেমন – অপরিচিত ব্যক্তিরা পাশ দিয়ে গেলে তাদের দিকে তাকিয়ে হালকা হাসুন বা অফিসে প্রবেশকারী সহকর্মীদের ‘সুপ্রভাত’ বলে অভিবাদন করুন।

কারণস্বরূপ মনোবিজ্ঞানী ম্যাডেলিন ম্যাসন রোয়ান্ট্রি বলেছেন, “যখন আপনি আশেপাশে থাকা মানুষদের সাথে বার্তালাপ করার চেষ্টা করেন,

তখন অপরিচিত হওয়া সত্ত্বেও তাদের মাঝে আপনি নিজের অস্তিত্ব বা উপস্থিতিকে অনুভব করবেন এবং একই সাথে তাদের সাথে আরো বেশি কানেক্টেড বোধ করবেন।”

তবে ‘কানেক্টেড’ মনে হওয়ার মানে কিন্তু এই নয় যে এইসকল ব্যক্তির সাথে একদিনেই আপনার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠবে।

তবে হ্যাঁ, মন খুলে কথা বলার জন্য অবশ্যই হালকা অনুভূত হবে এবং অন্যরাও আপনার এই ‘পজেটিভ ভাইব’ দ্বারা প্রভাবিত হবে।

৩. ডিজিটাল ডিটক্স প্রক্রিয়ার অবলম্বন :

ডিজিটাল ডিটক্স প্রক্রিয়া হল, অবসর সময়ে ফোন বা ট্যাবলেটের মতো গ্যাজেট না ঘেঁটে বরং নিজেকে ‘কোয়ালিটি’ সময় দেওয়া।

তাই কাজের ফাঁকে যদি কয়েক মিনিট বা ঘন্টা নিজের জন্য পান, তবে ফোন এবং সোশ্যাল মিডিয়া থেকে কিছুক্ষনের জন্য দূরে সরে যান।

বিশেষত ছুটির দিনগুলিকে ফোনটিকে বন্ধ রাখার কথাও একবার ভেবে দেখতে পারেন।

পরিবর্তে, আশেপাশে পার্ক বা বাগান থাকলে সেখানে গিয়ে হাঁটুন।

খানিকক্ষণ শান্তিতে এক জায়গায় বসে নিজের চিন্তাভাবনা বিশ্লেষণ করুন।

এমনকি বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারকে সঙ্গে নিয়ে বাইরে কোথাও ঘুরেও আসতে পারেন।

ফলাফল স্বরূপ দেখবেন, নিজের বা কাছের মানুষগুলির সাথে কাটানো মুহূর্তগুলি আপনার জীবনে শান্তি ও আনন্দ ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে।

৪. ইতিবাচক সেলফ-টক টেকনিক ব্যবহার করুন:

জীবনে ব্যর্থতা এলে আমরা অনেকেই নিজেকে দোষ দিই অথবা সকলের থেকে দূরে সরে এসে কঠোর রুটিনের মধ্যে ঢুকে যাই।

কিন্তু দেখতে গেলে এমনটা করলে আপনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়বেন, যা জীবনের সমস্ত রঙ কেড়ে নিতে পারে।

তাই ‘সেলফ টক’ বা স্ব-কথন করার মাধ্যমে নিজের অনুভূতিকে নিয়ন্ত্রণ করে ব্যর্থতা কারণ সমালোচনা করুন।

আপনি যদি বারংবার নেতিবাচক এবং নিরাশাজনক স্ব-কথোপকথন করেন তাহলে আপনি কোনো প্রকার মোটিভেশন দ্বারা প্রভাবিত হবেন না।

হেনিংস উদাহরণস্বরূপ বলেছেন –

“আপনি যদি বার বার নিজেকে বলেন যে আপনি একজন ভাল ব্যক্তি নন, তাহলে আপনার সেলফ-ইমপ্রুভমেন্ট বা অনুপ্রাণিত হওয়া কঠিন হয়ে পরবে।”

তাই সবসময় নিজেকে ভালো ভালো ইতিবাচক কথা বলুন এবং ব্যর্থতার মাঝেও আশাবাদী থাকুন।

এক্ষেত্রে যখনই আপনার নিজেকে অযোগ্য মনে হবে তখন একটা কথাই বলুন –

“আমি জানি এই পরিবর্তন চ্যালেঞ্জিং হতে চলেছে। কিন্তু আমি ইতিবাচক চিন্তাভাবনা করব। নিজে আত্মবিশ্বাসী বোধ করবো। আর প্রতি মুহূর্তে আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি এই ভাবনা রেখে সব পরিস্থিতির সম্মুখীন হব।”

৫. অন্যের সাথে সহৃদয়তা দেখান :

অন্যদের প্রতি সদয় হওয়ার মাধ্যমে আপনি আনন্দ অনুভব করতে পারেন।

একই সাথে আশেপাশের মানুষগুলির সাথে সুন্দর সম্পর্ক বজায় রাখতেও সাহায্য করবে এই আচরণ।

এক্ষেত্রে অপরিচিত বা পরিচিত ব্যক্তির জন্য ভালো কিছু করার চেষ্টা করতে পারেন। যেমন –

• একজন অপরিচিত ব্যক্তির প্রশংসা করুন। আপনার এই ছোট একটি পদক্ষেপ তাদের পুরো দিন ‘স্পেশাল’ করে দিতে পারে।
• সহকর্মীদের ট্রিট দিন অথবা নিজের জন্য আনা টিফিন সকলের সাথে ভাগ করে খান।
• বিশেষ কোনো উপলক্ষ ছাড়াও নিজের প্রিয় বন্ধুকে সক্কাল-সক্কাল সুন্দর একটি মেসেজ পাঠান। বা কার্ডও পাঠাতে পারেন।
• অভাবী কোনো ব্যক্তিকে খাদ্য, অর্থ বা কোনো দ্রব্যাদি দিয়ে সাহায্য করুন।

এই প্রত্যেকটি ছোট পদক্ষেপ আপনার মেজাজকে সারাদিন ধরে ভালো রাখবে, সাথে মনকে আনন্দও দেবে।

৬. মনোযোগ সহকারে খাবার খান:

ব্যস্ততার দিনগুলিতে – ব্রেকফাস্ট, লাঞ্চ বা ডিনার কোনোটাই আমরা শান্তিতে করতে পারি না।

বরং বলা যায় ক্ষিদে মেটাতে একপ্রকার তাড়াহুড়ো করেই আমরা খাওয়ার খেয়ে থাকি, যা খুব একটা স্বাস্থ্যকর অভ্যাস একদমই নয়।

তাই দিনের যেকোনো একটা সময় মনোযোগ সহকারে আহার গ্রহণ করুন।

এমনটা করলে আপনার শারীরিক অনুভূতি এবং আবেগ উভয়ই ইতিবাচক থাকবে।

এই বিষয়ে মনোবিজ্ঞানী ম্যাডেলিন মেসন রোনট্রি বলেছেন – “এই প্রক্রিয়া এক ধরণের মিনি মেডিটেশন, যা ‘ডি-স্ট্রেসর’ হিসাবে কাজ করবে।”

৭. পর্যাপ্ত ঘুম :

ঠিকঠাক ঘুম না হলে বা পর্যাপ্ত বিশ্রাম না পেলে, সারাদিন ধরে ক্লান্ত, অবসন্ন, রাগ বোধ করাই স্বাভাবিক।

আর এমন বোধ করার দরুন বারবার খিদে পাওয়া বা ‘আনপ্রোডাক্টিভ’ অনুভূত হতে পারে।

তাই প্রতি রাতে ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

যদি আপনার ঘুমোনোর সমস্যা থেকে থাকে, তবে ঘুমের মান উন্নত করার জন্য নিচে দেওয়া উপায়গুলি প্রয়োগ করে দেখতে পারেন –

• বিকেলের পর থেকে কফির মতো ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় খাওয়া কমিয়ে দিন।
• মেলাটোনিন সাপ্লিমেন্ট বা ঘুমের ওষুধ নিতে পারেন। তবে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।
• ঘুমানোর আগে উষ্ণ জলে স্নান করতে পারেন। এতে শারীরিক ও মানসিক দিক থেকে আরাম পাবেন।
• সর্বোপরি বিছানায় শুয়ে মোবাইল ঘটাবেন না।

৮. ডিপ ব্রিথিং টেকনিক :

ঘুমোনোর আগে বা কখনো রেগে গেলে শ্বাস-প্রশ্বাসের উপর অধিক ফোকাস করুন।

অর্থাৎ, হাতে কয়েক মিনিট সময় নিয়ে প্রতিদিন ‘ডিপ ব্রিথিং’ বা বাংলায় যাকে বলে অনুলোম-বিলোম প্রানায়াম করুন।

কেননা এই কার্যকরী যৌগিক শ্বাস কার্য অনুশীলন করার দরুন – শরীর রিলাক্স হয় এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে।

যারা জানেন না প্রাণায়াম কি করে করতে হয় তারা নিচের ধাপগুলি অনুসরণ করুন –

• প্রথমে, স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিন।
• তারপর, শ্বাস ছাড়ুন। তবে হ্যাঁ, শ্বাস নেওয়ার চেয়ে শ্বাস ছাড়ার ক্ষেত্রে বেশি সময় নিন। আপনি ব্রিথ কাউন্টও করতে পারেন। যেমন, শ্বাস গ্রহণের সময়ে ৪ কাউন্ট করুন। এবার শ্বাস গ্রহণের পর ৭ কাউন্ট করুন। এবার ৮ কাউন্ট করতে করতে শ্বাস ছাড়ুন।
• এই প্রক্রিয়াটি পুনরাবৃত্তি করুন যতক্ষণ না আপনি স্বস্তি বোধ করতে শুরু করেন।

৯. বাড়ি পরিষ্কারের জন্য সময় বের করুন:

বাড়ির পরিস্থিতি এবং সাজসজ্জা অনেকাংশে প্রভাবিত করে আমাদের মানসিক অবস্থাকে।

তাই যদি দেখেন বাড়ির জিনিসপত্রগুলি অগোছালো হয়ে আছে, তবে সারাদিনে অন্তত ৩০ মিনিট বের করে ঘর পরিষ্কার করুন ও সাজান।

এক্ষেত্রে টাইমার সেট করে কয়েকটি ছোটোখাটো গৃহস্থালির কাজ করতে পারেন, যেমন:

• বাথরুমের আয়না পরিষ্কার করুন।
• আপনার পছন্দের ছবিটি দেওয়ালে ঝুলিয়ে দিন।
• পড়াশোনা বা কাজের ডেস্ক পরিষ্কার করুন।
• পর্দা পাল্টে দিন।
• গাছ-গাছালি, ফুলের পট দিয়ে বারান্দা সাজান ইত্যাদি।

এবার ঘর গোছানো হয়ে গেলে, নিজেকে ‘রিওয়ার্ড’ দেওয়া জন্য সাজানোর ঘরের পছন্দের জায়গাটিতে ক্ষনিকের অবসর সময় একান্তে উপভোগ করুন।

১০. নিজেকে এবং অন্যদের ক্ষমা করতে শিখুন :

কোনো বিষয় বা ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে – অনুশোচনা, ব্যথা বা বিরক্তি অনুভূত হলে তা সবথেকে বেশি কষ্ট দেবে আপনাকে।

মেজাজ খারাপ থাকার দরুন আপনি অবসাদে যেমন ভুগবেন, তেমনি আপনার বলা কটু কথা আঘাত করতে পারে আশেপাশের মানুষগুলিকে।

তাই এইসকল আবেগগুলি আপনাকে ঘিরে ধরলে কী কী করণীয় সেই বিষয়ে একজন লাইসেন্সপ্রাপ্ত ক্লিনিকাল সাইকোলজিস্ট এবং নিউরোথেরাপিস্ট ক্যাথরিন জ্যাকসন পরামর্শ দিয়েছে যে –

“অন্যকে ক্ষমা করতে না পারার চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে প্রশ্রয় দিলে তা নেতিবাচক চিন্তাভাবনা ও রাগের উৎপত্তি ঘটাবে।”

তাই “ছোট-বড় ঘটনা মনে রেখে দেওয়ার পরিবর্তে ক্ষমা করতে শিখুন। পাশাপাশি মনে রাগ চেপে রেখে কখনই শুতে যাবেন না। এতে আপনার শরীর ও মস্তিষ্ক উভয়ের উপর নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে।”

১১. সেলফ-কেয়ারে নিয়োজিত হন :

সেলফ-কেয়ার বলতে আমরা মূলত, ম্যানিকিউর, ফেসিয়াল বা স্পা ট্রিটমেন্ট করাকেই বুঝি।

কিন্তু সাইকোলজিস্ট এবং নিউরোথেরাপিস্ট জ্যাকসনের মতে, এইসকল বিষয়কে সেলফ-প্যাম্পারিং বলা যায়।

সেলফ-কেয়ার করার জন্য – “পর্যাপ্ত পরিমাণ ভাল ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়াকে বোঝায়, যা আপনার মস্তিষ্ক এবং শরীরকে শক্তি দেবে, সচল রাখবে।”

পাশাপাশি – নিয়মিত ব্যায়াম করা, মাঝে মধ্যে হাঁটতে যাওয়া, প্রকৃতির সাথে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করা এবং নিজের জন্য একান্ত সময় বের করার মতো কাজগুলিও করুন।

এক্ষেত্রে আপনি যদি ফিটনেস-ফ্রিক হন, তবে জিমে যেতে পারেন এবং নিজেকে এক বাটি ফ্রুট-স্যালাড দিয়ে পুরস্কৃত করতে পারেন।

১২. নিজে নিজের বন্ধু হন :

আমাদের মধ্যে অনেকেরই অভ্যাস আছে যে, নিজের ব্যাপারে কিছু বাজে শুনলে বা খামতিগুলি কেউ ধরিয়ে দিলে তা নিয়ে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত মনে মনে ভাবা।

কিন্তু এইসকল বিষয় ব্যক্তিগতভাবে নিয়ে নিজের মস্তিষ্কে চাপ ফেলার পরিবর্তে, “যারা আপনার নামে নেতিবাচক কথা বলছেন তাদের পরিস্থিতি ও মানসিকতা বোঝার চেষ্টা করুন।

সাথে তাদের কথায় যদি একটুও সত্যতা থেকে থাকে তবে নিজের আত্ম-সমালোচনাও করুন” এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী এবং নিউরোথেরাপিস্ট ক্যাথরিন জ্যাকসন।

তবে হ্যাঁ আগে যেমনটা বলেছিলাম, আত্ম-সমালোচনা করার সময় নিজের প্রতি ইতিবাচক ভাবনা ও আত্মবিশ্বাস অবশ্যই রাখুন।

একই সাথে চারপাশের মানুষগুলিকে সন্দেহ না করে তাদের সম্পর্কে ভালো ভাবনা রাখুন এবং প্রয়োজনে সাহায্য করুন।

ভাবছেন এইসকল কাজ করে আপনার কি ভালো হচ্ছে? বা আপনি ভালো মানুষ কিভাবে হচ্ছেন ?

আসলে অন্যের সাহায্য করার মাধ্যমে ও ভালো চিন্তাভাবনা রাখলে তা আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে সাহায্য করতে পারে।

এতকিছু সত্ত্বেও যদি দেখেন যে আপনি নিজেকে পুরোপুরি পাল্টে দিতে পারছেন না, যা কিনা স্বল্প সময়ে কখনোই সম্ভব নয়,

তবে একটা গুরুমন্ত্র রপ্ত করে নিন – “আজ যা হওয়ার হয়ে গেছে। তবে আগামীকাল একটা নতুন দিন তাই নতুন করে আবার সবকিছু শুরু করবো। চেষ্টা চালিয়ে যাবো ও হার মানব না।”

সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণভাবে নিজেকে নিজের পরম বন্ধু ভাবুন ও প্রিয়জনকে ঠিক যেভাবে কেয়ার করেন সেই একই আচরণ নিজের সাথেও করার চেষ্টা করুন।

তাহলে, আমাদের আজকের এই খারাপ থেকে ভালো হওয়ার উপায় বা খারাপ মানুষ থেকে ভালো মানুষ কিভাবে হওয়া যাবে, এই বিষয়ে লিখা আর্টিকেলটি কিরকম লাগলো, নিচে কমেন্ট করে অবশই জানাবেন। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.