ভালোবাসার মানুষকে খুশি করার সেরা ১৫টি উপায় |Muhammed Juwel Ahmed |

ভালোবাসার মানুষকে খুশি করার উপায় বা প্রিয় মানুষকে খুশি করার সেরা ১৫টি উপায় গুলো কি কি, আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা এই বিষয়েই বিস্তারিত আলোচনা করতে চলেছি।
ভালোবাসার মানুষকে খুশি করার উপায়
ভালোবাসার মানুষকে কিভাবে খুশি করা যাবে

ভালোবাসা আর ভালোবেসে চলা কখনওই এক হতে পারে না। 

একজন মানুষ অন্যজন মানুষকে ভালোবাসতেই পারে, কিন্তু সেই ভালোবাসাকে টিকিয়ে রাখাটা কিন্তু একেবারেই মুখের কথা নয়। 

সময়ের সাথে সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে টান কিন্তু কমে যেতেই পারে, ফলে দুটো মানুষের মধ্যেকার দূরত্ব অনেকটাই বেড়ে যেতে পারে। 

তাই, একটা মিষ্টি-মধুর সম্পর্ক ধরে রাখতে গেলে আমাদের প্রয়োজন নিজেদের প্রিয় মানুষের মনের হদিশ রাখা; আর সর্বোপরি নিজের ভালোবাসার মানুষকে খুশি রাখার উপায়গুলো জেনে রাখা।

তাই, আমাদের এই আর্টিকেল থেকে আপনারা জানতে পারবেন, কিভাবে নিজেদের ভালোবাসার মানুষকে খুশি করা যাবে-এই বিষয়ে। 

বা, কি কি করলে আপনার প্রিয় মানুষটির মিষ্টি মুখের হাসিটি আপনার চোখের আড়াল হবে না।

ভালোবাসার মানুষকে খুশি করার উপায় – (১৫টি)

আসুন, তাহলে জেনে নিই, ভালোবাসার মানুষকে কিভাবে খুশি করা যাবে বা প্রিয় মানুষকে খুশি করার সেরা ১৫টি উপায় সম্পর্কে। 

১. সবসময় মনে রাখুন, মানুষের জীবন কিন্তু সীমাবদ্ধ:

মানুষ আজ আছে তো কাল নেই। 

তাই, যতটা পারুন নিজের কাছের মানুষকে সময় দিন। 

আপনার সময়ের চেয়ে মূল্যবান জিনিস, আপনার প্রিয় মানুষের কাছে আর কিছু হতে পারে না। 

তার সুখ-দুঃখের সময় অবশ্যই তার পাশে থাকুন, তাকে নিজের সবটুকু দিয়ে আগলে রাখার চেষ্টা করুন। 

দেখবেন, সময় ভালো হয়ে গেলে আপনি তার মুখেও হাসি দেখতে পাবেন।

২. তারিফ বা প্রশংসা করুন:

মানুষ কখনও কখনও এতটাই সরল হয়ে যায় যে, ছোট-ছোট কথাতেই মানুষের মন কিন্তু খুশি হয়ে যায়। 

তাই, ভালোবেসে আপনার ভালোবাসার মানুষকে দুটো সুন্দর-সুন্দর প্রশংসা বাক্য বলুন, তাহলে সে খুশি না হয়ে আর যায় কোথায় ? 

ভালোবাসার মানুষ কিন্তু সকলে পায় না, তাই নিজেকে ভাগ্যবান মনে করে সেই প্রিয় মানুষটির প্রশংসা করবেন।

৩. একসাথে বসে খাবার খান:

ঘর হোক বা বাইরে, মানুষ চায় খাবার খাওয়ার সময়ে নিজের প্রিয় মানুষের সাথে একটু মন খুলে কথা বলতে। 

খাবার ভাগ করে খাওয়ার পাশাপাশি, নিজের ভালোবাসার মানুষটির সঙ্গে মনের কথাগুলোও ভাগ করে নিতে কিন্তু বেশ ভালোলাগে। 

তাই, খাবার খাওয়ার অছিলায় তার মনের কথাগুলো শুনতে বা জানতে কিন্তু একেবারেই ভুল করবেন না। 

দেখবেন, খাওয়ার শেষে কিংবা কথার শেষে কিন্তু তার মুখে একটা হাসি ফুটেছে।

৪. একটু প্যাম্পার করুন:

সারাদিনের পরিশ্রমের শেষে সব মানুষই একটু আরাম খোঁজে। 

তাই, প্রিয় মানুষটি যখন সারাদিনের কাজ সেরে একটু আরাম করবেন, তখন তাকে একটা সুন্দর হেড বা ব্যাক ম্যাসাজ দিলে কিন্তু তার ভালো যেমন লাগবে তেমন সে খুশিও হবে। 

আসলে, ভালোবাসার আরেক নাম কিন্তু যত্ন নেওয়া, তাই সেই বুঝে অবশ্যই তাকে অল্প-বিস্তর সুযোগমতো প্যাম্পার করুন।

৫. ঘন-ঘন আলিঙ্গন করুন:

‘কিসেস অ্যান্ড হাগস’ অর্থাৎ চুম্বন ও আলিঙ্গন হল যেকোনো ভালোবাসার সম্পর্কের প্রধান সূত্র। 

আর, বিজ্ঞানও প্রমাণ করেছে, যে ভালোবাসার মানুষকে আলিঙ্গন করলে আমাদের শরীরে অক্সিটোসিন হরমোন ক্ষরিত হয়। 

যা আমাদের স্ট্রেস কমাতে ও মনের শান্তি ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে। 

তাই, যত পারুন নিজের কাছের মানুষটি হাগ করুন, নিজেও খুশি থাকুন আর অন্য মানুষটিকেও খুশি রাখুন।

৬. তাদের প্রয়োজনের সময় অবশ্যই তাদের পাশে থাকুন:

মানুষ শুধুমাত্র ভালোবাসার জন্যেই মানুষকে খোঁজে না, আসলে তারা চায় যে বিপদের সময় যেন একটা ভরসাযোগ্য মানুষ তাদের পাশে থাকে। 

তাই, কেবলমাত্র প্রেম করার বা ভালো সময় কাটানোর জন্যেই নয়, বরং সেই মানুষটার বিপদের সময়ও তার পাশে থাকার চেষ্টা করুন। 

দেখবেন, তাতে পরবর্তীকালে আপনার ভালোবাসার মানুষটি আপনার এই কাজে খুশি হবে।

৭. তাদের জন্যে গর্বিত অনুভব করুন:

সবসময় মনে রাখবেন, ভালোবাসা কিন্তু হল দুই মনের মিলন। 

অর্থাৎ, আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথে আপনার মনের কোনো না কোনো মিল হয়েছে বলেই কিন্তু আপনারা সম্পর্কে জড়িয়েছেন। 

তাই, এরকম মনের মিল হওয়া মানুষের সঙ্গ পাওয়া কিন্তু একটা সৌভাগ্যের ব্যাপার। 

সেই কারণেই, যেকোনো পরস্থিতিতেই আপনার উচিত নিজের সঙ্গীকে নিয়ে গর্ব অনুভব করা, যাতে সেই মানুষটি খুশি হয়।

৮. আপনার সঙ্গীকে সবসময় অনুপ্রাণিত করুন:

আমাদের মাঝেমধ্যেই একটানা জীবনে একঘেঁয়েমি আসে এবং তখন জীবনের প্রতি আমাদের অনুপ্রেরণা হারিয়ে যায়। 

এই পরিস্থিতে সব মানুষই একটু মোটিভেটেড হতে চায়। 

তাই, আপনার উচিত আপনার লাইফ পার্টনারকে খুশি রাখার জন্যে সবসময় অনুপ্রাণিত করা।

৯. নিজের সঙ্গীকে নাম ধরে ডাকুন:

বয়সে ছোট হোক কিংবা বড়, নিজের সঙ্গীকে কখনও কখনও নাম ধরে ডেকে দেখবেন। 

কিংবা, আপনি তাকে কোনো বিশেষ নামও দিতে পারেন ভালোবাসার চিহ্ন হিসেবে। 

এই ছোটখাটো কাজের মাধ্যমেই কিন্তু দিব্যি নিজের ভালোবাসার কথা অন্যকে বোঝানো যায়, এতে আপনার প্রিয় মানুষগুলো খুশিই হবে বৈকি।

১০. মন খুলে হাসুন:

হাসির মতো বড় থেরাপি বা টনিক কিন্তু আর কিছু হতেই পারে না, আর ইংরেজিতে বেশ একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে, যে ‘কাপেল হু লাফস টুগেদার, স্টেইস টুগেদার’ অর্থাৎ, যেই ভালোবাসার মানুষ দুটো একসাথে হাসি-মজা করে, তারা চিরকাল একসাথেই থেকে যায়। 

মন খুলে হাসুন, এতে আপনাদের মনের দুঃখ, অভিমান, স্ট্রেস, সব খারাপ জিনিসগুলো চলে যাবে। 

আর, হাসলে কিন্তু হার্টের পেশীগুলোও সবল থাকে, তাই হাসতে থাকুন!

১১. রোজকার কাজে সাহায্য করুন:

আপনার পার্টনারটি অফিসের কাজ কিংবা ঘরের কোনো কাজে ব্যস্ত থাকলে, তাদেরকে এক কাপ চা বা কফি করে দেওয়া কি খুবই কঠিন কাজ ? একেবারেই না, বরং এই ছোটছোট কাজ বা এফোর্টগুলোই কিন্তু আপনার ভালোবাসার মানুষকে খুশি করে দিতে পারে। 

আসলে, আমরা আমাদের সাধারণ জীবনে চাঁদ-তারা বা কোনো অমূল্য জিনিস দিয়ে কি করবো ? 

বরং, কোনো কাজে একটু-আধটু সাহায্য পেলেই আমাদের জীবন সঙ্গীর কিন্তু অনেকটাই আরাম হয় আর তাদের মনটাও ভালো থাকে।

১২. ‘ভালোবাসি’ জানাতে ভুলবেন না:

খুব ছোট্ট কথা “লাভ ইউ” বা ভালোবাসি, কিন্তু কতটা মিষ্টি! 

আপনার যেমন শুনতে ভালোলাগে, ঠিক তেমনই আপনার ভালোবাসার মানুষটিরও কিন্তু শুনতে ইচ্ছে করে এই ছোট্ট কথাগুলো। 

তাই, নির্দ্বিধায়, অকপটে তাকে যখন খুশি বলুন, “ভালোবাসি!”

১৩. তার কথা মন দিয়ে শুনুন:

আমরা যখন বড় হই, আমরা সবাই চাই, আমাদের মনের কথাগুলো শোনার জন্যে যেন কেউ থাকে। 

তাই, আপনার ভালোবাসার মানুষকে খুশি রাখতে গেলে আপনাকে প্রথমেই একজন ভালো শ্রোতা হতে হবে। 

যার সাথে মনের কথা শেয়ার করে আপনার প্রিয় মানুষটি মন থেকে ভালো থাকে আর হালকা বোধ করে।

১৪. গোপনে তার জন্যে কোনো নোটস লিখে রাখুন:

মানুষ দৈনন্দিন কাজের মধ্যে একটু অন্যরকম কিছু পেলে কিন্তু অল্পতেই খুশি হয়ে যায়। 

তাই, আপনার সঙ্গীর জন্যে গোপনে কোনো ভালো কথা নোটস আকারে রেখে যান। 

যাতে, খুঁজে পেলে তাদের মন খুশি হয়ে যায়।

১৫. নিজেকে খুশি রাখতে ভুলবেন না!

আপনার মন খুশি থাকলে তবেই আপনি অন্যদের মধ্যে খুশি ছড়াতে পারবেন। 

তাই সবসময় চেষ্টা করবেন, যাতে আপনি নিজে খুশি থাকেন। 

নিজেকে খুশি রাখতে পারলে অন্য কাউকে খুশি রাখা বড় কোনো কাজ নয়।

 

পরিশেষে:

আপনি যখনই পারবেন, আপনার সেরাটাই দেওয়ার চেষ্টা করুন, তাহলে আপনার জীবনে কখনও কোনো বিষয়ে আপসোস হবে না। 

তাই চেষ্টা করা হচ্ছে একেবারে কোনো কিছুই না করার চেয়ে ভালো। 

“আমি তোমাকে ভালোবাসি” বলা কোনো কঠিন কাজ কিন্তু নয়, অথচ এতে আপনার প্রিয় মানুষটারও মুখে হাসি ফোটে।

কিংবা, আপনি আপনার মনের ভাব তাদের সামনে প্রকাশ করলে কিন্তু সেই মানুষগুলো খুশি কিংবা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। 

তাই, চেষ্টা করুন নিজের প্রিয়জনের জন্য সর্বদা সেরাটাই দিতে, যাতে তারা আপনার কথায় বা হাবে-ভাবে উষ্ণতার ছোঁয়া পায়, তৃপ্তি এবং খুশি অনুভব করে।

আজকে আমাদের ‘ভালোবাসার মানুষটিকে খুশি করার সেরা উপায়‘ নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।

ভালোলাগলে অবশ্যই আপনার ভালোলাগা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, সেটাও নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানিয়ে দিবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.