চালাক হওয়ার উপায় | কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায় | Muhammed Juwel Ahmed |

আজকে এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো চালাক কিভাবে হওয়া যায়চালাক হওয়ার জন্য কি কি উপায় ব্যবহার করা যায় বা এক কথায় বলতে গেলে চালাক হওয়ার উপায় গুলো কি কি।  
চালাক হওয়ার উপায়
চালাক কিভাবে হতে হয় ?

এই যুগে যে ব্যক্তি অধিক ভোলা-ভাল এবং বোকা থাকে তাদেরকে লোকেরা যেকোনো ক্ষেত্রেই সহজেই বোকা বানিয়ে চলে যায়।

তাই এধরণের ব্যক্তিদের মাথায় দুনিয়াদারির কথা বোঝার মতো এতো বুদ্ধি থাকেনা এবং  তারা লোকের কাছে সহজেই বোকা বনে যায়।

ভোলা ব্যক্তিদের মনে হয় তারা যেমন সহজ সরল, ঠিক সেভাবেই পুরো দুনিয়াও তাদেরই মতো সোজা এবং সরল। কিন্তু বাস্তবে সেটা হয়না। 

অনেক সময় দেখা যায় আমাদের বন্ধুদের মধ্যেই কিছু বন্ধু বোকা থাকে এবং কিছু বন্ধুরা আবার খুব চালাক ও স্মার্ট থাকে। 

আর সেই চালাক-চতুর বন্ধুদের দেখেই অনেক সময় আমরা মনে মনে ভাবতে শুরু করে দেই যে, এদের মতো চালাক স্মার্ট কিভাবে হওয়া যায় ?

এছাড়া আমরা অনেক সময় ভেবে থাকি যে, তারা হয়তো জন্মের থেকেই এরকম বুদ্ধি ও স্মার্টনেস পেয়েছে যার ফলে তারা সবখানে নিজের চালাকি লোকের সামনে দেখাতে পারে।

আর তাই তাদের মতো চালাক স্মার্ট হওয়ার ইচ্ছা আমাদেরও করে থাকে। 

তাই আমি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের চালাক হওয়ার বিভিন্ন উপায়ের বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বলতে যাচ্ছি যার দ্বারা আপনি এক সামান্য ব্যক্তি হয়েও বিভিন্ন পরিস্থিতে নিজের বুদ্ধির সঠিকভাবে প্রয়োগ করা শিখে যাবেন।

চালাক হওয়ার উপায় । কিভাবে চালাক চতুর হওয়া যায়

তাহলে বন্ধুরা আর দেরি না করে নিচে দেওয়া প্রত্যেকটি উপায় মনোযোগ দিয়ে পরে ফেলুন এবং এই উপায়গুলো ব্যবহার করে নিজেকে চালাক হিসেবে তৈরি করে ফেলুন। 

১. তাড়াহুড়োতে কোনো সিদ্ধান্ত না নেওয়া

চালাক হওয়ার  প্রথম উপায় হলো যেকোনো সিদ্ধান্ত তাড়াহুড়োতে না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া।

কারণ চালাক ব্যক্তিরা সবসময় যেকোনো ছোটো বড়ো সিদ্ধান্ত বুঝে শুনে শান্তি মনে নিয়ে থাকে এবং নিজের মাথা খাটিয়ে তারপর যে কোনো নির্ণয়ে পৌঁছায়। 

তাই যেকোনো সমস্যা হোক বা যেকোনো পরিস্থিতি হোক নিজের মনে প্রথমে মূল্যায়ন করে ভেবে চিন্তে তারপর কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছানো উচিত।

শুরুর দিকে একটু সময় লাগবে কিন্তু দেখবেন এটা করার ফলে আপনি সব জায়গায় চালাকির সাথে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে দিবেন। 

২. সবাই কে খুশি করার চেষ্টা না করা

ভোলা ব্যক্তিরা সবসময় এটাই ভাবে যে, যাতে সবাই তার থেকে খুশি থাকেন এবং কেও যাতে তার থেকে রেগে না যায় বা তাকে যেকোনো কারণে খারাপ না পায়। 

 কিন্তু মনে রাখবেন যে, সবসময় সবাইকে খুশি রাখা সম্ভব হয়না এবং ভোলা ব্যক্তিরা সব থেকে বড়ো ভূল এটাই করে, ফলে অনেক সময় অন্য  ব্যক্তিরা তার এই স্বভাবের লাভ উঠিয়ে থাকেন। 

যদি আপনি চালাক হতে চান তাহলে প্রথমে আপনার এটা ভাবা উচিত যে পুরো দুনিয়ার সমস্যা আপনার নয় এবং আপনি সকলকে খুশি করতে পারবেননা, কেও না কেও আপনার থেকে রেগে থাকবেই বা আবার অনেকেই হয়তো আপনাকে পছন্দ নাও করতে পারে।  

তাই আপনার মাথায় রাখতে হবে সকলের রাগ ভাঙ্গানোর দায়িত্ব আপনি নিয়ে রাখেননি এবং অনেক ক্ষেত্রে কিছু কিছু মানুষের রাগ আপনাকে উপেক্ষা করে চলা শিখতে হবে। 

৩. নিজের ভেতরের ভয় কে দূর করতে হবে

চালাক হওয়ার জন্য প্রথম জরুরি কাজটি হোলো, নিজের মনের ভয়কে শেষ করা। 

যেমন উদাহরণস্বরূপ – অনেক মানুষের মধ্যে কথা বলা বা কোনো ভাষণ দিতে যাওয়ার সময় পাওয়া ভয়, কোনো সমস্যা হলে সমাধানের চেষ্টা না করে সহজেই ভয় পাওয়া ইত্যাদি এই ধরণের বিভিন্ন ভয় গুলো দূর করা আবশ্যক। 

ভোলা ধরণের ব্যক্তিদেড় বেশিরভাগ ভয়ে ভয়ে থাকতে দেখা যায় এবং লোকের সামনে বেশি কথা বলতেও তারা অস্বস্তিকর অনুভব করে থাকে।

কিন্তু চালাক হতে চাইলে লোকের সাথে মিশতে শিখতে হবে, লোকের সামনে নির্ভয়ে কথা বলতে জানতে হবে। 

৪. সমস্যার সমাধান করতে শেখা

আপনি যদি চালাক হতে চান তাহলে আপনাকে সমস্যার সমাধান করা শিখতে হবে, কারণ সহজ সরল  ব্যক্তিরা সব সময় কোনো সমস্যায় পড়লে আতঙ্কিত হয়ে পরে, এর ফলে তারা সেই সমস্যার মধ্যেই জড়িয়ে থেকে যায়। 

কিন্তু চালাক ব্যক্তিরা কোনো  সমস্যা হলে অনেক ধৈয্য ধরে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে এবং সেই সমস্যা থেকে কি করে বের হওয়া যায় তা নিয়ে অনেক ঠান্ডা মাথায় ভেবে থাকে। 

চালাক ব্যক্তিরা যেকোনো পরিস্থিতে আতঙ্ক বা তাড়াহুড়োতে কোনো সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেনা। 

৫. সময় এবং টাকার গুরুত্ব বোঝা

নিজের জীবনে সফল হওয়ার ক্ষেত্রেও কিন্তু চালাক হওয়াটা অনেক জরুরি। 

আর তার জন্য সব থেকে জরুরি হলো সময় এবং টাকার সঠিক ব্যবহার করতে শেখা। 

চালাক ব্যক্তিরা নিজের সময় এমনি এমনি কোনো কারণ ছাড়া নষ্ট করেনা, তারা ভালো করে জানে একবার সময় চলে গেলে আর ফিরে আসেনা।

তাই চালাক হওয়ার জন্য সময়ের গুরুত্ব বোঝা খুবই জরুরি।

এবং, ঠিক সেই ভাবেই টাকার গুরুত্ব বোঝাও কিন্তু সেভাবেই অনেক জরুরি একটি বিষয়।  

কারণ, সময়ের মতো টাকারও গুরুত্ব আমাদের জীবনে অনেক রয়েছে, আর দুটোই একবার চলে গেলে আর ঘুরে আসেনা।

তাই দরকার ছাড়া যেখানে সেখানে নিজের সময় এবং টাকা খরচ করা উচিত নয়।

একটি ভালো জীবন কাটানোর জন্য টাকা যেমন জরুরি ঠিক সেভাবেই টাকা বাঁচানো খুব জরুরি। 

এখানে আমি আপনাদের কৃপণ হওয়ার কথা বলছিনা শুধু এটাই বুঝাতে চাইছি যে যেখানে আপনার দরকার সেখানেই  টাকা খরচ করুন।

অনেক সময় আমরা এমন কিছু জিনিস কিনে ফেলি যেগুলোর আমাদের কোনো  আবশ্যক থাকেনা। 

তাই, এমন জায়গাতে নিজের টাকা খরচ করুন যাতে খরচ করার পর আপনার মনে কোনো আফসোস না থাকে।

৬. নতুন জায়গায় নিজের ছবি বদলানোর চেষ্টা করা

আপনার ছবি আগের থেকে যেখানে যেমন তৈরী হয়ে যায় সেখানে সেটা হঠাৎ করে বদলানো সম্ভব নয়। 

কারণ যে মানুষ গুলো আপনাকে সোজা সরল হিসেবে দেখেছেন তারা আপনাকে সবসময় ভোলা-ভাল এবং সোজা বলেই মনে করেন। 

কিন্তু যেখানে আপনাকে প্রথম থেকে কেও চেনেনা সেখানে আগের থেকে আপনার কোনো ধরণের ছবি তৈরী থাকেনা, তাই সেই জায়গাগুলোয় আপনি নিজেকে সোজা সরল হিসাবে পরিচয় না দিয়ে একটু স্মার্ট ভাবে পরিচয় দেওয়ার চেষ্টা করতে শিখতে হবে। 

যেমন আপনি কোনো নতুন অফিসে ঢুকলেন বা আপনি এমন কোনো ব্যক্তির সাথে দেখা করলেন যার সাথে আপনি আগে কোনোদিন দেখা করেননি, তাহলে তাদের সামনে নিজেকে স্মার্টভাবে প্রেসেন্ট করুন। 

এতে, তারা আপনার ব্যবহার দেখে আপনাকে চালাক এবং স্মার্ট মনে করে। 

৭. অন্যের উপর নির্ভর না করা

যদি আপনি সত্যি চালাক হতে চান তাহলে অন্যের উপর নির্ভর করা ছেড়ে দিন, কারণ আপনি যতোদিন অন্যের উপর নির্ভর করে থাকবেন ততদিন আপনি নিজেকে জানতেই পারবেন না।

অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় সহজ সরল ব্যক্তিরা ছোটো ছোটো জিনিসের জন্যও অন্যের উপর নির্ভর করে বসে থাকে, ফলে অন্যরা এই সুযোগ নিয়ে তাদের অনেক সময় ঠকিয়েও থাকে।

যেমন উদাহরণস্বরূপ, ব্যাঙ্কের কাজ অন্য কে দিয়ে করানো, কোনো জরুরি ডকুমেন্টসে স্বাক্ষর করা ইত্যাদি বিভিন্ন কাজ। 

অন্যের উপর নির্ভর করার ফলে আপনি কখনও নিজেকে বোঝার সুযোগ পাবেন না এবং একটা সময় এমন আসবে যখন আপনাকে লোকে সহজ সরল ভেবে নিজের থেকে দূরে করে দিবে। 

তাই এমন স্থিতি আসার আগেই আপনি নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করে ফেলুন এবং অন্যের উপর নির্ভর হওয়া বন্ধ করে ফেলুন। 

৮. প্রতিদিন নতুন নতুন বিষয় পড়ুন

প্রতিদিন আপনি অল্প সময়য়ের জন্য হলেও নতুন বিষয়ে কিছু বই পড়ুন, কারণ আমরা যখন প্রতিদিন নতুন কিছু পড়ি তখন আমাদের বুদ্ধির বিকাশ ঘটে। 

অনেক রিসার্চে দেখা গেছে যে, যেই ব্যক্তিরা প্রতিদিন কিছু না কিছু নতুন পড়তে থাকে তাঁরা অন্য ব্যক্তিদের তুলনায় স্মার্ট হয়ে থাকে। 

যখন আপনি পুরো ধ্যান দিয়ে কোনো কিছু পড়েন তখন আপনার মস্তিষ্কের শক্তি বেড়ে যায়। 

আপনি নিজেকে স্মার্ট এবং চালাক বানানোর জন্য চাণক্য নীতি বা অন্য বিভিন্ন  বিজনেস মেনদের  জীবনী পড়ে অনেক কিছু শিখতে পারেন এবং নিজেকে চালাক হিসেবে তৈরী করতে পারেন। 

এধরণের বই পড়ার ফলেও সঠিক জায়গায় সঠিক নির্ণয় নিতে আপনার সাহায্য হয়ে থাকে। 

আমাদের শেষ কথা,,

তাহলে বসন্ধুরা, আজকের আমাদের আর্টিকেল “চালাক হওয়ার উপায়” বা “কিভাবে চালাক হওয়া যায়” এখানেই শেষ হলো। আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেল আপনাদের পছন্দ হয়েছে। 

আমাদের আজকের আর্টিকেল যদি সত্যি আপনাদের ভালো লেগে থাকে, তাহলে অবশই আর্টিকেলটি সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করবেন।

এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, নিচে কমেন্ট করে জানাবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.