মেয়েদের সাথে কথা বলার সেরা টপিক – (জবর আলাপ জমবে) Muhammed Juwel Ahmed |

মেয়েদের সাথে কথা বলার টপিক গুলো কি কি হতে পারে বা কোন বিষয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলা যাবে, এই সম্পূর্ণ বিষয় নিয়েই আমাদের আজকের আর্টিকেল।
মেয়েদের সাথে কথা বলার টপিক
কোন কোন বিষয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলা যাবে ?

ছোটবেলায় আমাদের মন যখন নিষ্পাপ থাকতো, তখন আমরা সহজেই বন্ধুত্ব করে উঠতে পারতাম। 

কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে সাথে মনে নানাধরণের জটিলতা আসতে থাকায়, আর ভারতের মতো দেশে অচেনা-অজানা মহিলাদের সাথে কথা বলা বা বন্ধুত্ব করার কথা চিন্তা করাটাও অনেকের কাছেই বেশ বিড়ম্বনার একটা বিষয়। 

তার সবথেকে বড় কারণ, মানুষ তাদের বয়স বাড়ার সাথে সাথেই সমস্ত জিনিস গুলোকে কমপ্লিকেট করে দেখা শুরু করে। 

আর, আমরা সবসময় ভাবি, যদি সামনের অপরিচিত ব্যক্তি আমাদের ভুল বোঝে কিংবা খারাপ ভাবে ? 

এই চিন্তা-ভাবনার জালে জড়িয়ে পড়েই আমরা অনেকেই কোনো অপরিচিত মানুষের সাথে আলাপ করে উঠতে পারি না। 

বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে অনেকেই অপরিচিত মেয়েদের সাথে কথা বলার ব্যাপারে নিজেদেরকে গুটিয়ে রাখেন, কিন্তু তারা মনে-মনে হাজারবার চান সেই বিশেষ নারীর সাথে একবার না একবার কথা বলতে।

আপনি যদি, এরকমই অপরিচিত মেয়ের সাথে কথা বলার চান্স খুঁজছেন অথচ বুঝে উঠতে পারছেন না ঠিক কি করা উচিত,

তবে, আজকের আমাদের এই আর্টিকেলটি আপনাদের হেল্প করবে যেকোনো অপরিচিত মেয়ের সাথে চট করে আলাপটা শুরু করে দিতে! 

আর, আলাপ সারার পর কি কি ধরণের কনভার্সেশন আপনাদের আলাপটাকে সুদূরপ্রসারী করে তুলবে, তা এই আর্টিকেল থেকেই আপনারা বিস্তারিতভাবে জানতে পারবেন। 

তাহলে শুরু করা যাক, অপরিচিত মেয়ের সাথে কথা বলার টপিক সম্পর্কে।

পরিচিত/অপরিচিত মেয়েদের সাথে কথা বলার টপিক

চলুন, এবার আমরা সরাসরি কিছু সেরা এবং মজার টপিক গুলোর বিষয়ে জেনেনেই যেগুলোর সাথে আমরা কথাবার্তা শুরু করতে পারি বা কথাবার্তা চালিয়ে যেতে পারি।

১. মেয়েটির রোজনামচা সম্পর্কে জানুন:

এই অ্যাডাল্টহুডে ছেলে-মেয়ে নির্বিশেষে সবাই আমরা চাই, সারাদিন কাজকর্মের পর নিজের ডেইলি লাইফের ব্যাপারে কারুর সাথে মন খুলে ডিসকাস করতে। 

তাই, যদি আপনি নির্দ্বিধায় তার কাছ থেকে জানতে চান, সে কেমন আছে ? 

তার সারাদিন কেমন কাটলো ? কিংবা, তার সারাদিনের প্লান সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করুন। 

এই আইডিয়াটি শুনতে বোরিং লাগলেও, আসলে পরিচিত-অপরিচিত সকলেই চায় তাদের জীবনের ছোটোখাটো ঘটনার ব্যাপারেও কেউ আগ্রহ প্রকাশ করুক। 

২. তার পছন্দ-অপছন্দ গুলো সম্পর্কে খোঁজ নিন:

সব মানুষেরই বিভিন্ন ধরণের পছন্দ ও অপছন্দ থাকে। 

তাই, যার সাথে পরিচিতি বাড়াতে চাইছেন, সবার প্রথমেই তার ভালোলাগা ও খারাপ লাগার দিকগুলো জানার চেষ্টা করুন। 

দেখবেন, এতে আপনাদের কথাবার্তা গুলোও অনেক সহজ-সরল আর স্বাভাবিক হবে। 

আর, যদি আপনাদের কোনো কমন ইন্টারেস্ট থাকে, তাহলে কনভার্সেশন কখনোই বোকা-বোকা মনে হবে না।

৩. তার পরিবার সম্পর্কে আগ্রহ প্রকাশ করে দেখুন:

শুনতে খুব বেশি ব্যক্তিগত মনে হলেও,

আসলে অনেকেই মনে করেন, যেসব মানুষ এই ধরণের প্রশ্ন করে, তারা আসলেই কেয়ারিং। 

মানে, তার পরিবারের লোকজন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। 

পরিবারের সেই-ই একমাত্র সন্তান কিনা ? নাকি তার কোনো ভাইবোন রয়েছে ইত্যাদি। 

মেয়েদের কাছে তার পরিবারের গুরুত্ব অনেকখানি, তবে অবশ্যই চেষ্টা করবেন নিজের সীমা অতিক্রম না করে আর অতি আগ্রহ প্রকাশ না করে, যতটা সম্ভব কোমলভাবে তার পরিবার সম্পর্কে জানতে চাওয়ার।

৪. তার জীবনের লক্ষ্যের ব্যাপারে জানতে চান:

আজকালকার মেয়েরা অনেক স্বাধীনচেতা। 

তাদের মধ্যে অনেকেই তাদের ক্যারিয়ার সম্পর্কে ফোকাস্ড এবং তাদের জীবনের লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করতে ভালোবাসে। 

তাই, তাদের সাথে আলাপ ও পরিচয় বাড়ানোর ভালো সুযোগ হল তাদের ও আপনার জীবনের লক্ষ্যগুলোর বিষয়ে আলোচনা করুন। 

দেখবেন, এতে তার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঘটবে এবং আপনাদের মধ্যে পরিচিতি অনেকটাই গাঢ় হবে।

৫. তার নেশা সম্বোধনে কৌতূহল দেখান:

অনেক মানুষই তাদের নেশা বা হবির ব্যাপারে কথা বলতে ভালোবাসে। 

কোনো অপরিচিত নারী বা ব্যক্তির সাথে আলাপের সূচনা করতে তার হবি জানতে চাওয়াটা কিন্তু বেশ একটা সেফ প্রশ্ন। 

কারণ, কোনো মানুষের হবি সম্পর্কে জানতে চাইলে সেটা কোনো পার্সোনাল কোয়েশ্চেনও হয়না আবার অন্যদিকে সেই মানুষটির ভালোলাগার বিষয় সম্পর্কেও একটা পরিষ্কার ধারণা পাওয়া যায়।

৬. ভ্রমণ করতে ভালোবাসে কিনা জানুন:

সারা পৃথিবীতে ভ্রমণ করতে ভালোবাসে না, এরকম মানুষ মনে হয় হাতে গোনাই রয়েছে। 

তাই, আপনার অপরিচিতি নারীটিকে নির্দ্বিধায় প্রশ্ন করুন তার প্রিয় ভ্রমণ অভিজ্ঞতা, তার ড্রিম ডেস্টিনেশন বা হলিডে ট্রিপ সম্পর্কে। 

সে কোথায় যেতে পছন্দ করে, তার প্রিয় ঘোরার জায়গা ও নানা ধরণের ভ্রমণ সংক্রান্ত প্রশ্ন করতেও পারেন। 

৭. তার পোশাক-পরিচ্ছদ নিয়ে প্রশংসা করুন:

ধরুন, আপনার সামনে দাঁড়িয়ে থাকা অপরিচিত মেয়েটির সাজসজ্জা খুব পরিপাটি এবং তার জন্যে তাকে দেখতেও আকর্ষণীয় লাগছে। 

তাই, তাকে আপনি ভালো কোনো কমপ্লিমেন্ট দিয়েও আলাপ-পরিচয়টা শুরু করতে পারেন। 

কিংবা, তার ড্রেসিং সেন্স সম্পর্কেও প্রশংসা করতে পারেন, যাতে সে আপনার সাথে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে।

৮. বর্তমান পরিস্থিতির মাধ্যমেও কথা শুরু করতে পারেন:

অনেক মানুষ রয়েছেন, যারা পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে কথা শুরু করা পছন্দ করেন। 

তাই, কোনো অপরিচিত মানুষের সাথে ভাব জমাতে গেলে আপনি আর সে, যে পরিস্থিতিতে রয়েছেন সেই ব্যাপারে কথা বলতে পারেন। 

ধরুন, আপনি ট্রাভেলিং করছেন, তো আপনি আপনার অপরিচিত মেয়েটিকে সাধারণভাবে জিজ্ঞেস করতেই পারেন,

তার সেই যাত্রার অভিজ্ঞতার সম্পর্কে, সে আগে সেই স্থানে গেছে কিনা কিংবা এটাই তার ওই স্থানে যাওয়ার প্রথম ট্রাভেলিং কিনা ইত্যাদি।

৯. তার মিউসিক চয়েস সম্পর্কে জানতে চান:

গান শোনার চয়েস সব মানুষের আলাদা আলাদা হতেই পারে। 

কেউ ওয়েস্টার্ন, কেউ ক্লাসিক্যাল, কেউ ফোক আবার কেউ ব্যান্ডের গান ভালোবাসে। 

তাই, আপনি পরিচিত কিংবা অপরিচিত যেকোনো মানুষকেই তার পছন্দের গান, শিল্পী, অ্যালবাম কিংবা গানের জগৎ সম্পর্কে প্রশ্ন করতেই পারেন। 

আর, সবথেকে বড় কথা হল এই প্রশ্নটা একেবারেই ব্যক্তিগত নয়,

তাই আপনার অপরিচিত মেয়েটি এই প্রশ্নের উত্তর দিতে কোনো অস্বস্তি বোধও করবে না।

১০. তার পছন্দের খাবার সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন:

অন্যান্য প্রশ্নের মতোই পছন্দের খাবার সম্পর্কে জানতে চাওয়াও কোনো জটিল ব্যাপার নয়,

তাই আপনি মেয়েটির প্রিয় খাবার সম্পর্কে জানতে চাইলে, আশা করা যায় সে নিশ্চয়ই আপনাকে উত্তর দেবে। 

আবার অনেকের খাবার নিয়েও নানান মজার অভিজ্ঞতা থাকে। 

সেক্ষেত্রে, আপনিও আপনার অভিজ্ঞতা তার সাথে শেয়ার করতে পারেন।

১১. তার প্রিয় টিভি শো বা সিনেমা:

বিশেষত, আপনি যদি কোনো মুভি থিয়েটারের বাইরে থাকেন, তবে এই ধরণের প্রশ্ন দিয়ে আলাপ শুরু করাটা কিন্তু সেরা ব্যাপার। 

মানুষ বেশিরভাগ সময়ই তাদের প্রিয় সিনেমা, টিভি শো, ওয়েবসিরিজ আর সিরিয়াল সম্পর্কে কথা বলতে ভালোবাসে। 

আর, কে বলতে পারে, হয়তো এই ইনোসেন্ট টপিক থেকেই আপনাদের আলাপ আরও পাক্কা হয়ে উঠলো। 

১২. তাকে স্পেশাল ফীল করান:

প্রতিটা মানুষের জীবনেই তার ব্যক্তিগত সংগ্রাম থাকে। 

তাই, যে মহিলার সাথে আপনি আলাপ চালাতে চাইছেন তার জীবন সংগ্রাম সম্পর্কে জেনে তাকে উৎসাহিত করে তুলুন। 

যাতে, একজন অপরিচিত হিসেবে সে আপনার সাথে কথা বলে ভরসার আশ্রয় পেতে পারে। 

সবাই মোটিভেশন পেতে ও পসিটিভ অনুভব করতে ভালোবাসে। 

তাই, একজন মানুষ হিসেবে চেষ্টা করবেন, আপনার অপরিচিত মেয়েটিকেও ভালো কোনো দিকে মোটিভেট করতে।

১৩. নিজের ব্যাপারেও কথা বলুন:

কোনো কথোপকথনই একতরফা হয় না। 

তা, সেই মানুষটির সম্পর্কে জানার পাশাপাশি নিজের ব্যাপারেও তার সাথে কথা বলুন। 

আপনার ভালো লাগা মন্দ লাগাও তার সাথে ভাগ করে নিন। 

অপরিচিত বলে নিজের মনের আবেগকে আটকে রেখে কথা বলবেন, তা কিন্তু নয়। 

অনেক সময় দেখা যায়, হয়তো এমন অনেক কথা আমাদের মনে জমা থাকে, যা আমরা নিজেদের কাছের লোকদের বলে উঠতে পারিনা,

কিন্তু সহজেই আমরা একজন অপরিচিত ব্যক্তিকে তা বলে দিতে পারি। 

তাই, মন খুলে কথা বলাটাই আসল।

১৪. মেয়েটিকে পরখ করুন:

মেয়েদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা খেলা, রাজনীতি এবং সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে যথেষ্ট আগ্রহ রাখেন। 

তাই, আপনার উচিত মেয়েটির সাথে আলাপ শুরুর সময় থেকেই তার রাজনীতি, ক্রীড়া ও খবর সম্পর্কে আগ্রহ আছে কিনা জেনে নিন। 

আর, তার এইসব বিষয়ে আগ্রহ থাকলে আপনাদের কথোপকথনও অনেক ভালো হবে।

১৫. তার কাছে জীবনের অর্থ কি তা জানতে চান:

জীবনের অর্থ হল অনেক বড় আর মুক্ত আলোচনার একটা বিষয়। 

তাই, আপনার চেনা-অচেনা যেকোনো মেয়েকে এই বিষয়টির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে দেখতে পারেন। 

আর, দেখবেন সব মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি এই বিষয়ে একে-অপরের থেকে আলাদা। 

জীবনের অর্থ সম্পর্কে বলতে গেলে মানুষের দার্শনিক আর আধ্যাত্মিক চিন্তাভাবনা সম্পর্কে একটা স্পষ্ট ধারণাও পাওয়া যায়। 

এই ধারণা আপনার মনে আপনার সামনে থাকা মানুষটির সাথে মতের মিল হবে কিনা, তা বুঝতে অনেকটাই সাহায্য করবে।

সবশেষে:

মানুষ যতই স্পষ্টবাদী বা বাগ্মী হোক না কেন, কখনও কখনও মেয়েদের সাথে সরাসরি কথোপকথনের সময় অনেকেই ভাষা হারিয়ে ফেলে কিংবা নার্ভাস হয়ে যায়। 

তাই, আপনার সবসময় উচিত ইতিবাচক ভঙ্গিতে নিজের কথোপকথন চালিয়ে যাওয়া জরুরি। 

আর, নিজেকে কখনোই বেশি আবেগপ্রবণ হতে দেবেন না কোনো অপরিচিত মহিলার সাথে কথা বলার সময়। 

আর বাকি, আমাদের আর্টিকলে বলা যেকোনো টপিক সম্পর্কে আলোচনা শুরু করলে যেকোনো বিব্রতকর অবস্থাগুলো আপনি আরামসে এড়িয়ে চলতে পারবেন ৷

এছাড়াও, মনে রাখবেন যে, আপনি যেকোনো বিষয়েই কথা বলতে পারেন,

তবে সবকিছুর আগে সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল আপনার কথা বলার ধরণ বা বাচনভঙ্গি।  

তাই, আপনি যদি কোনো অদ্ভুত বিষয় নিয়েও আলচনা শুরু করেন আর একজন প্রো-এর মতো কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারেন,

তবে জানবেন যে, সেই অপরিচিত নারীকে ইমপ্রেস করা মোটেও কোনো কঠিন কাজ নয়। 

তাই, যাই-ই কথা বলুন না কেন, চেষ্টা করবেন তা কনফিডেন্টলি ও ভদ্রভাবে বলার যাতে সেই নারী আপনার ব্যক্তিত্বের প্রতি আকৃষ্ট হয়।

আমাদের আজকের আর্টিকেল ‘মেয়েদের সাথে কথা বলার টপিক‘ বিষয়টি এখানেই শেষ হল। 

টপিকগুলো ইন্টারেস্টিং ও এফেক্টিভ মনে হলে অবশ্যই ব্যবহার করুন ও আর্টিকেলটি ভালোলাগলে কমেন্টের মাধ্যমে তা জানান।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.