রিলাক্স থাকার উপায়: স্ট্রেস হল একটা নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা – যা প্রাপ্তবয়স্ক, শিশু-কিশোর প্রত্যেকের দ্বারাই কোনো না কোনোভাবে অনুভূত হয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এই রকমের উদ্বেগজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে, কোনো ব্যক্তি কীভাবে এই মুহুর্তগুলোর সাথে মোকাবিলা করে থাকেন ?
মানসিক চাপের কারণে, কিছু মানুষ একেবারেই ভেঙ্গে পড়ে, আবার কেউ-কেউ মানসিকভাবে যথেষ্ট শক্তিশালী থেকে অতিরিক্ত চাপ, ব্যর্থতা কিংবা হতাশার মোকাবিলা করে চলে।
একটানা স্ট্রেস ও উদ্বেগ আপনার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে দিতে পারে, এমনকি আপনার মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার উপরও কুপ্রভাব ফেলতে পারে।
তাই, নিজের জীবনে চলার পথে নিজের উদ্বেগকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে, আমাদের উচিত একদম শান্ত হয়ে বা রিল্যাক্সড থেকে উদ্বেগ ও অনিশ্চয়তার সাথে মোকাবিলা করা।
রিলাক্স থাকার উপায় গুলো কি কি ?
রিলাক্স থাকার উপায়
আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করবো, রিলাক্স থাকার সেরা এবং কার্যকর উপায় গুলোর সম্পর্কে।
এই আর্টিকেল থেকে আপনার জানতে পারবেন, রিলাক্স থাকার সেরা কয়েকটি উপায়ের ব্যাপারে।
রিল্যাক্স ফিল করার জন্যে আপনার একদল বন্ধু-বান্ধবের প্রয়োজন, তা কিন্তু নয়।
বরং, আপনার নিজের সঙ্গই আপনার কাছে রিল্যাক্সিং হতে পারে-
– নিজেকে স্পয়েল করুন:
একটা ওয়াইনের বোতল হোক কিংবা একটা দারুণ পিজ্জা- আপনি যেটা পছন্দ করেন, সেটা উপভোগ করুন।
নিজের সাথে সময় কাটান।
একটা সুন্দর শাওয়ার নিন কিংবা একটা লং ওয়াক, যা করলে মন শান্তি পায়, সেটাই করুন।
– জানলার বাইরে তাকান:
ঘরে কিংবা বাইরে, কাজের চাপে একটানা ডেস্কের দিকে তাকিয়ে থাকতে কারই বা ভালোলাগে?
তাই, কাজের ফাঁকে ফাঁকে জানলার বাইরে তাকান ও আশপাশের পরিবেশ দেখুন ও নিজের মধ্যে হারিয়ে যান।
– এলোমেলো কাজ করুন:
হয়তো, ছুটির দিন, কিন্তু কাজের কথা ভেবে আপনি স্ট্রেসড হয়ে আছেন।
এমন সময়ে রিল্যাক্স করার জন্যে, নিজের ডেস্কটপের ফাইলগুলো গোছাতে পারেন, কিংবা বইয়ের তাকও গুছিয়ে রাখতে পারেন।
– সূর্যের আলো নিন:
সূর্যের আলোয় থাকা ভিটামিন-ডি আপনার হাড় যেমন মজবুত করে, তেমনই মৃদু সূর্যালোক আপনার মনের যত দুঃখ-অশান্তিও ভুলিয়ে দিতে পারে।
৫. একটু শারীরিক নড়াচড়া করুন:
একটানা একভাবে অনেকক্ষণ বসে থাকলেও, কিন্তু আমাদের মন ভালোলাগে না।
তাই, মাঝে-মাঝে একটু-আধটু শারীরিকভাবে নড়াচড়া করুন-
– স্ট্রেচ বা এক্সারসাইজ করুন:
আমাদের শরীর অনেকক্ষণ বসে থাকলে, মাসলগুলো স্টিফ হয়ে থাকে।
তাই, নিজের শরীর ও মনকে রিল্যাক্স করার জন্য একটু স্ট্রেচ বা এক্সারসাইজ করুন।
আর, এক্সারসাইজের মাধ্যমে হার্টরেট বাড়লে, আপনার শরীরে এণ্ড্রোফিনের মাত্রা বাড়ে।
এর মাধ্যমে, আপনি নিজেকে যেকোনো পরিস্থিতিতেই স্বাভাবিক রাখতে পারবেন।
৬. নিজের ক্রিয়েটিভ দিকগুলো এক্সপ্লোর করুন:
– ক্রসওয়ার্ড পাজেল সল্ভ করুন:
নিজের মনকে ডাইভার্ট করার জন্যে ক্রসওয়ার্ড পাজেলের মতো মজার জিনিস আর কিছু নেই।
একটা একটা পিস নিয়ে সম্পূর্ণ পাজেল কম্প্লিট করলে আপনার মনের যাবতীয় হাবিজাবি চিন্তা থেকে আপনি কিছুটা দূরে থাকেন।
– লিখুন:
নিজের মনের ভার হালকা করতে ডায়েরি লেখা হল সবথেকে সেরা একটা উপায়।
এমনকি, আপনার খরচ, কাজের চিন্তা কিংবা আপনার প্রিয় মানুষের ব্যাপারেও ডাইরিতে লিখে রাখতে পারেন।
দেখবেন, লেখার পর মনটা অনেক হালকা লাগছে।
– গান শুনুন:
আপনার প্রিয় প্লেলিস্ট আপনার সবথেকে চাপের সময়ে এনে দিতে পারে, একটা অদ্ভুত শান্তি।
বিভিন্ন সমীক্ষাতেও দেখা গেছে যে, গান শোনার একটা বেশ রিলাক্সিং বেনিফিট রয়েছে।
আর, গান শুনতে ইচ্ছে না করলে, সোজা নিজের বাথরুমে যান আর মনের সুখে গান গাইতে গাইতে একটা শাওয়ার নিন!
– নেচে নিন:
একটানা বসে বোর হয়ে গেছেন ?
তাহলে, লাউডস্পিকার কিংবা হেডফোনে গান চালিয়ে একটু নেচে নিন ও মন থেকে এক্সট্রা বোঝাগুলোকে কিছুক্ষণের জন্যে ফেলে দিন।
৭. আপনার প্রিয় সঙ্গ খুঁজুন:
আপনার একাকিত্বের সঙ্গী যদি, আপনার পোষ্য হয়ে থাকে, তবে অবশ্যই স্ট্রেসড বোধ করলে তার সাথে সময় কাটান, তাকে আদর করুন কিংবা তার সাথে ওয়াকে যান অথবা তাকে কোনো ভালো ট্রিট দিন।
আপনার কোনো বিশ্বাসযোগ্য বন্ধুর সাথে গল্প করুন, আড্ডা দিন কিংবা তার সাথে কোথাও ঘুরেও আসতে পারেন।
এতে, মন হালকা হয়।
আর, আপনার প্রিয় সঙ্গী যদি, আপনার লাইফ পার্টনার হয়, তাহলে অবশ্যই তার সাথে অন্তরঙ্গ সময় কাটান কিংবা কাডল করুন।
এমনকি, আপনার প্রিয় নেশা যদি ঘুরতে যাওয়া হয়, তাহলে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে সোলো ট্রিপ কিংবা পরিবার বা বন্ধুদের সাথেও ঘুরতে যেতে পারেন।
মূল কথা, রিলাক্সেশন করার প্রধান শর্তই হল নিজের হাজারো চিন্তাকে ভুলে গিয়ে সাময়িক আনন্দে মেতে ওঠা।
৮. ভালো ভালো ঘ্রাণ নিন:
আপনি কি জানেন, সুন্দর গন্ধ আমাদের মন ভালো করে দিতে পারে?
বিশ্বাস না হলে, নিজেরাই ভাবুন না, যখন প্রথম বৃষ্টির ফোঁটা মাটিতে পরে যে সোঁদা গন্ধটা বয়ে আনে, সেটা কোন মানুষের অপছন্দ হয়?
ঠিক তেমনই, নানান ধরণের গন্ধ আমাদের তরতাজা বোধ করতে সাহায্য করে।
সুন্দর ফুলের গন্ধ হোক, কিংবা রোস্টেড কফি বিনসের গন্ধ- সবই আমাদের মনকে খুশি করে তুলতে পারে।
আপনি রিলাক্স থাকার জন্যে অ্যারোমাথেরাপির সাহায্যও নিতে পারেন।
এখানে আপনি কোনো ডিফিউসারে আপনার প্রিয় সুগন্ধিত এসেনশিয়াল অয়েল, যেমন- গোলাপ, ল্যাভেন্ডার, জোজোবা ইত্যাদি আপনার পছন্দমতো ব্যবহার করে সেই গন্ধ শুঁকতে পারেন।
যেকোনো লেবুর গন্ধ আপনাকে উদ্বেগ ও স্ট্রেস থেকে মুক্তি দিতে পারে।
পরিশেষে:
রিলাক্স থাকার উপায় গুলো প্রতিটা মানুষের কাছেই আলাদা আলাদা হয়ে থাকে।
তবে, এই সাধারণ উপায়গুলোর মধ্যে থেকে, আপনি অসাধারণ থাকার উপায় বেছে নিতে পারেন।
আপনার যদি রান্না করাটা রিলাক্সেশন হয়ে থাকে, তবে অন্য কারোর কাছে ভালো-মন্দ খাওয়াও রিলাক্সেশন হতে পারে।
আপনি রিলাক্স থাকার জন্যে পার্কে যেতে ভালোবাসলে, অন্য কেউ হয়তো বারে যেতে ভালোবাসেন।
আসলে, জীবনে রিলাক্স থাকার বিষয়টার কোনো নির্দিষ্ট নিয়ম নেই।
যার যেটা ভালোলাগে, মানুষ সাধারণত সেটা নিয়েই রিলাক্স থাকতে পছন্দ করে।
খুঁজে বের করতে পারেন।
আজকে আমাদের নিজেকে কিভাবে রিল্যাক্স করা যাবে সেই উপায়গুলো নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি এখানেই শেষ হল।
লেখাটি আপনার রিল্যাক্স করার উপায়গুলো যদি খুঁজে দিয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তা কমেন্টের মাধ্যমে জানাবেন ।
আমি এই ওয়েবসাইট এর প্রতিষ্ঠাতা। পেশায় আমি একজন ওয়েবসাইট ডিজাইনার এবং ব্লগিং আমার প্যাশন। আমি এই সাইট এ ব্লগিং, এফিলিয়েট মার্কেটিং, ইংরেজি নিয়ে বিভিন্ন
পোস্ট করি এং আর্ন মানি অনলাইন বিষয়ক বিভিন্ন পোস্ট করে থাকি। এই সাইট এর মূল লক্ষ্য হলো বাংলাতে
কোয়ালিটি কনটেন্ট প্রকাশ করা যা সাইট এর ভিজিটর দের কাজে লাগে । এই প্রত্যাশা নিয়ে কাজ করছি,
ধন্যবাদ সবাইকে ।
কোন মন্তব্য নেই