সফল হওয়ার উপায় জেনে নিন | জুয়েল আহমদ |


হ্যালো সবাই কেমন আছেন? আজ আমি আপনাদের শিখাব কিভাবে আপনি সফল হবেন এবং হওয়ার উপায় জেনে নিন৷। 

সফল হওয়ার উপায় রয়েছে। জীবনে সফলতা লাভের জন্য দৃষ্টিভঙ্গি খুবই জরুরী। কেননা আপনার দৃষ্টিভঙ্গি আপনার সফলতার পথকে মসৃণ করে। তখন সফলতা আর মরীচিকা থাকে না। সফলতার কথা বললেই দুটি বিষয় সামনে চলে আসে তা হলো প্রতিভা আর পরিশ্রম।


কেউ কে প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে দ্রুত সফলতা পায়। কেউ কেউ আবার নিজের প্রতিভার চেয়ে পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে সফলতা পায়। তবে হ্যাঁ শুধু প্রতিভা থাকলেই যে সফলতা আসবে তা নয়; সফলতা লাভের জন্য অবশ্যই প্রচুর পরিশ্রম করতে হবে। সফল হওয়ার উপায় জেনে নিন সবার আগে।


তবে আমাদের সমাজে এক শ্রেণির মানুষ আছে যারা পরিশ্রম ছাড়াই সফলতা লাভ করতে চায়। তারা শুধু অন্যের সফলতা দেখে আর হা হুতাশ করে। কিন্তু কেউই পরিশ্রম ছাড়া সফলতাকে কেউ বধ করতে পারে না। তাই সফলতা লাভের জন্য নিজের দৃষ্টিভঙ্গিকে যেমন উন্নত করতে হবে। একইসাথে সংকল্প করতে হবে। হ্যাঁ, আমি পারবো, অবশ্যই আমাকে পারতে হবে। বলা হয়ে থাকে, একজন মানুষ সংকল্পের ছোঁয়ায় হয়ে উঠতে পারে অন্যন্য সাধারণ।


আর প্রতিদিনই প্ররিশ্রম করে যেতে হবে। নিজের স্কিল ডেভেলপমেন্ট করে নিতে হবে বিভিন্ন বিষয়ে। আর অধ্যয়নের তো কোন বিকল্প নেই-ই। তাই প্রতিভা আর মেধার দোহাই দিয়ে নিজেকে গুটিয়ে রাখার সময় আর নেই।

একটু ভেবে দেখলেই বুঝতে পারবেন পৃথিবীতে যারা আজ স্মরণীয় এবং বরণীয় তারা কিন্তু আপনার মতই রক্ত মাংসের মানুষ। কিন্তু তাদের সফলতা লাভের আশায় যে সংকল্প ছিলো তা কি আমাদের আছে। উত্তর অবশ্যই হবে না। অনেকেই আবার বলতে পারেন তাদের প্রতিভা তাদের সফলতা লাভের পাথেয়। কিন্তু শুধুই কি প্রতিভা? তবে আজ জেনে নেয়া যাক সফল মানুষদের কিছু অভ্যাস সম্পর্কে। যা তাদের সফল হওয়ার উপায়। এমন সাতটি সফল হওয়ার উপায় জেনে নিন সবার আগে। চলুন জেনে নেয়া যাক –

১) স্বাস্থ্য সচেতনতা

বলা হয়, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল! তাই সফল ব্যক্তিতা এই মন্ত্রে ভর করে নিজেদের এগিয়ে রাখেন। কারণ আমাদের শরীর একটি যন্ত্রের মত। এর ব্যবহার বিধির উপর শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য নির্ভর করে। নিজেকে সচল ও কর্ম তৎপর ও প্রাণ চঞ্চল রাখতে, অবসাদ ভাব দূর করতে ব্যায়াম বা শারীরিক পরিশ্রমের বিকল্প নেই। তাই ব্যায়ামের জন্য সফল মানুষেরা সকলটাকেই বেছে নেন। তাই সকালে ঘুম থেকে ওঠা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সকালে ঘুম থেকে উঠার অভ্যাস আপনাকে অন্য মানুষদের থেকে কয়েকধাপ এগিয়ে রাখে।

২) লক্ষ বস্তু ঠিক করে নিন

হ্যাঁ, আপনি যদি নিজের লক্ষ্য বস্তু বা টার্গেট নির্ধারণ করতে না পারেন। তবে আপনাকে বহুমাত্রিক কাজের প্রতি জোর দিতে হবে। নিজের দক্ষতা সম্পর্কে জানতে হবে। এরপর টার্গেট নির্ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। তারপর সাফল্যের শিখরে পোঁছাতে নিজেকে আস্তে আস্তে প্রস্তুত করতে হবে। এ কাজটি সহজ হবে, যদি আপনি প্রতিদিন কর্মপরিকল্পনা আর তার বাস্তবায়ন করতে পারেন। এজন্য আপনাকে সময়ের সঠিক ব্যবহার করতে হবে। অযথা কাজে সময় অপ্রচয় না করে সময়ের যথাযথ ব্যবহার করতে হবে।

ধরুণ, আপনি পড়শোনার চেয়ে ফেসবুকে বেশি সময় দেন। তবে অবশ্যই আপনাকে ফেসবুক এড়িয়ে পড়াশোনায় মনোযোগ বাড়াতে হবে। সফল মানুষেরা খুব দক্ষভাবে এসব সামাল দিতে পারতেন।

৩)  সময়ের কাজ সময়ে শেষ করুন

আসলে অতীত এবং ভবিষৎ আপেক্ষিক বিষয়। বর্তমানই বাস্তব। এজন্য সময়ের কাজ অবশ্যই সময় শেষ হওয়ার আগেই শেষ করতে হবে। আর আপনি যদি প্রতিদিনের কাজ প্রতিদিন করেন তবে আপনি অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকবেন। যদি আপনি আজ ভালো কাজ করেন তবে পরেরদিন নতুন একটি কাজ শুরু করতে পারবেন। এভাবে আপনার সুন্দর একটি ভবিষৎ তৈরি হবে।

কিন্তু ব্যর্থ লোকেদের মধ্যে কাজ ফেলে রাখার প্রবণতা সব থেকে বেশি থাকে। তারা ভাবেন, এ কাজ আজ নয় কালকে করবো। এভাবে তাদের মধ্যে জড়তা বাসা বাঁধতে থাকে। আর পরদিন ভাবতে থাকেন কাজের চাপ বেশি হয়ে গেছে। তাকে দিয়ে এত কাজ করা সম্ভব নয়। তাই সফল মানুষদের পরামর্শ প্রতিদিন একটু হলেও গতদিনের থেকে নিজেকে এগিয়ে রাখুন।

এজন্য প্রয়োজনে পরিবারের সদস্য ও ঘড়ির সাহায্য নিন। মনে রাখবেন আজকে যেটা কালকে বলবেন, এর আগেরদিনও কাজটি আপনি আজকের জন্যই ফেলে রেখেছিলেন।

৪)  সাফল্যভাবে প্রস্তুতি নিন

একটি প্রবাদ আছে, কঠিন প্রস্তুতি, সহজ যুদ্ধ। হ্যাঁ, আপনার সফলতা লাভের প্রস্তুতি যত ভালো হবে; সফলতা লাভ ততই সহজ হবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হওয়া বা সর্বোচ্চ সিজিপিএ ধারীকে দেখে অনেকেই হিংসা করি। কিন্তু আমরা কি কখনো দেখি তার এই সফলতা লাভের পেছনের কতশত রাতের অধ্যাবসায় জড়িয়ে রয়েছে। অন্যেরা যখন মজা মাস্তিতে ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন, তখন তিনি পড়াশোনাকে বেছে নিয়েছেন। সেইদিনের ত্যাগেই আজকে তার সাফল্য লাভ। এজন্য নিজের লক্ষ্য পূরণে কঠোর প্রস্তুতির বিকল্প নেই।

৫) ভয়কে জয়

ভয়কে জয় করতে হবে। কারণ ভয় থেকেই জড়তার জন্ম হয়। আপনার ভয় আপনাকে কাজের প্রতি অমনোযোগী করে তুলবে। তাই যারা সফল মানুষ তারা সব সময় ভয়কে জয় করেন। ধরুণ, আপনি মানুষের সামনে কথা বলতে ভয় পান। তা কথা বলা এড়িয়ে চলেন। কিন্তু সফল ব্যক্তিরা এই সুযোগ কাজে লাগান। কেননা আপনি যে বিষয়ে ভয় পান, তা যদি ফেস করতে না পারেন তবে সে বিষয়ে আপনার মধ্যে জড়তা দেখা দিবে। এই জড়তার নামই ভয়।

৬) কম কথা, কাজ বেশি

প্রবাদটি সবাই জানি। কিন্তু সফল মানুষেরা মানেন। কারণ কাজের সময় কথা বললে আপনার কাজের প্রতি মনোযোগ নষ্ট হয়। এতে আপনার কাজে বাঁধা সৃষ্টি হয়। তাই যারা সফল ব্যক্তি তারা কাজের সময় কথা কম বলেন, মনোযোগ দিয়ে কেবল নিজের কাজ করেন। তবে কাজের সময় কথা হতে পারে নিজের সাথে। এতে কাজের দক্ষতা বাড়ে, নিজেই নিজের মূল্যায়ন করতে পারেন।

৭) কালক্ষেপণ না করা

আপনি যে কাজটি করতে চান তা শুরু করে দিন। অযথা কালক্ষেপণ করবেন না। নাছোড়বান্দার মত কাজে লেগে যান। কাজটি তখন শেষ করুন যখন আপনি সফল হবেন। ধরুন, আপনার অনেক প্রতিভা কিন্তু আপনি তা কাজে লাগাতে পারছেন না। তাহলে এ প্রতিভার দরকার কি? মাথায় বুদ্ধি আসলে তা কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করে বাস্তবায়ন করুন।

আজ করবো, কালকে করবো এই ভেবে সময় নষ্ট করবেন না। নিজের প্রতিভাকে কাজে লাগিয়ে নিজেকে প্রতিদিন ছাড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। কিছু করার সময় কালকে বা পরশু নয়; সময় এখন। তাই উদ্যোগ নিতে পিছিয়ে পড়া যাবে না। পৃথিবীর সব থেকে বড় অপচয় হচ্ছে সময়ের অপচয়। এই অপ্রচয় আর ফিরে পাওয়া যাবে না।




কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.