জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ ||

ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি, উন্নত জীবনব্যবস্থা এবং উচ্চ শিক্ষাব্যবস্থার কারণে জার্মানি অনেক বেশি জনপ্রিয়। বর্তমান সময়ে স্টুডেন্ট ভিসাতে জার্মানিতে যাওয়ার সংখ্যা টা অনেক বেড়েই চলছে। প্রতিবছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে জার্মান স্টুডেন্ট ভিসার জনে আবেদন সংখ্যা যেমন বাড়ছে তেমনি চাহিদাও অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে।



তাই আপনিও যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন এবং উচ্চ শিক্ষার জন্য জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ এ জার্মান যেতে চান তাহলে আপনার জন্য আজকের আর্টিকেল টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে চলছে। আশা করি মনোযোগ সহকারে কন্টেন্ট টি সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ অব্দি পড়লে জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পারবেন।

এছাড়াও আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা প্রসেসিং, জার্মানি তে মাস্টার্স স্কলারশিপ এবং জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা ইত্যাদি সকল খুটিনাটি বিষয় বিস্তারিত আকারে জানতে পারবেন। তাহলে চলুন আর দেরি না করে চলে যাই পূর্নাঙ্গ আলোচনায়। 

জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ফ্রম বাংলাদেশ
বাংলাদেশের থেকে প্রতি বছর অনেক ছাত্র-ছাত্রী ব্যচেলর এবং মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জনের জন্য জার্মানি গিয়ে থাকে।বাংলাদেশের থেকে জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়া অনেক সহজ একটি প্রক্রিয়া তবে এর জন্য আপনার প্রধানত তিনটি বিষয় থাকতে হবে। নিন্মে তা উল্লেখ করা হলোঃ 

জার্মান স্টুডেন্ট ভিসার আবেদনের জন্য আপনাকে অবশ্যই জার্মানির কোন বিশ্ববিদ্যালয়র থেকে একটি ভর্তি চিঠি থাকতে হবে। 
জার্মানি তে থাকার জন্য আপনার একটি নির্দিষ্ট এবং পর্যাপ্ত তহবিল থাকতে হবে।, যেমন স্পন্সর বা স্কলারশিপ বা ব্লক করা এমন অ্যাকাউন্ট
একটি স্টুডেন্ট স্বাস্থ্য বীমা 

আপনি যদি একজন বাংলাদেশি হন এবং স্টুডেন্ট ভিসাতে জার্মানিতে যেতে চান তাহলে আপনার এই তিনটি বিষয় বাধ্যতামুলক।   

 

জার্মানি ভিসা প্রসেসিং
জার্মানির ভিসা প্রসেসিং কয়েকটি ধাপে হয়ে থাকে। আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসাতে জার্মানিতে যেতে চান তাহলে আপনাকে নিন্মোক্ত ধাপগুলো অনুসরণ করে জার্মানির ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হবে। আপনাদের সুবিধার্থে নিন্মে ধাপে ধাপে জার্মানির ভিসা প্রসেসিং উল্লেখ করা হলো । 



স্টাডি প্রোগ্রামের জন্য আবেদন
জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসা পাওয়ার প্রথম ধাপ হলো আপনি যে কোর্সে পড়তে যাচ্ছেন সেটা নির্বাচন করা এবং ভাষা নির্বাচন করা। ভিসা আবেদনের একটি অংশ হিসেবে অবশ্যই আপনাকে এটি জার্মানি প্রতিষ্ঠানের নিকট প্রমান স্বরুপ উপস্থাপন করতে হবে। 

দূতাবাস খুজে বের করা 
জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়ে থাকে জার্মানির দুতাবাসের মাধ্যমে। তাই আপনি যদি স্টুডেন্ট ভিসাতে জার্মানি যেতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই জার্মানির দূতাবাস খুজে বের করে সেখানে গিয়ে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে। 

ভিসা জমা দানের অ্যাপয়নমেন্ট 
জার্মানিতে অনেক স্টুডেন্ট ভিসার জন্য আবেদন করা হয়। তাই আপনাকে অবশ্যই ভিসা জমা দেওয়ার জন্য অ্যপয়নমেন্ট গ্রহণ করতে হবে। 



প্রয়োজনীয় কাগজপত্র 
অ্যাপয়নমেন্টের তারিখের পূর্বেই আপনাকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করতে হবে এবং সেগুলা নির্ভুল করতে হবে। যদি কোন কাগজপত্রে সমস্যা থাকে তাহলে ভিসা বাতিল বলে গণ্য হবে। 



আবেদন জমা দান 
অ্যাপয়নমেন্টের নির্ধারিত দিনে দূতাবাসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিয়ে ভিসার আবেদন করতে হবে এবং সেই সাথে বায়োমেট্রিক ডেটা জমা দিতে হবে এবং ইন্টারভিউ এর জন্য অংশ নিতে হবে। 

এবং আপনাকে দূতাবাসে ভিসার আবেদন ফি জমা দিতে হবে। অনেকক্ষেত্রে সেই দিনেই জমা দিতে হয় আবার অনেকক্ষেত্রে ৩ দিনের মধ্যেই জমা দিতে হয়। 

উত্তরপত্রের অপেক্ষা 
আবেদন পত্র জমা এবং ইন্টারভিউ সম্পূর্ণ হলে দূতাবাস থেকে আবেদন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এবং আপনার উত্তর জানাতে প্রায় ৬ সপ্তাহের মতো সময় নিবে। আপনার সকল কাগজপত্র এবং এবং সবকিছু ঠিক থাকলে আপনি ভিসা এপ্রুভ করা হবে। 

জার্মানি যাওয়া 
ভিসা এপ্রুভ হলে আপনি জার্মানি তে যাবেন এবং সেখানে গিয়ে আপনার উচ্চশিক্ষা সম্পন্ন করতে পারবেন। 

আশা করি আপনারা ভিসা প্রসেসিং এর সকল ধাপ গুলো বুঝতে পেরেছেন। যদি কোন কারণে আপনার ভিসা প্রত্যাক্ষান করা হয় তাহলে ও আপনাকে একটি দুতাবাস থেকে চিঠি প্রদান করতে হবে এবং সেখানে আপনার পরবর্তী করণীয় ধাপগুলো বলে দেওয়া থাকবে। 

জার্মানিতে মাস্টার্স স্কলারশিপ
জার্মানি মাস্টার্স ডিগ্রি করা সবচেয়ে বেশি সোজা। জার্মান সরকার মাস্টার্স প্রোগামের সকল কোর্স আন্তজার্তিক শিক্ষার্থীদের জন্য একদম ফ্রি করে দিয়েছে। তাই আপনি চাইলে কোন প্রকারের টিউশন ফি ছাড়াই জার্মানির যেকোন বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনার পছন্দের সাবজেক্টে মাস্টার্স ডিগ্রি নিতে পারবেন। এই ক্ষেত্রে শুধু আপনার বসস্থান এবং খাওয়া খরচ বহন করতে হবে। তাই আপনারা যারা দেশের বাহিরে মাস্টার্স ডিগ্রি করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য আদর্শ একটা সুযোগ হলে জার্মানি। 

জার্মানিতে স্টুডেন্ট ভিসা যোগ্যতা
জার্মানিতে ব্যচেলর মাস্টার্স এবং ডক্টরেট সকল উচ্চশিক্ষার জন্যই অনেক শিক্ষার্থী গিয়ে থাকে।এছাড়া সম্প্রতিতে জার্মানিতে অনেকেই ডিপ্লোমা করার জন্যেও গিয়ে থাকে। আর এর সকল শিক্ষার জন্য জার্মানিতে যেতে হলে অবশ্যই তার পূর্বে কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন। নিন্মে জার্মানির স্টুডেন্ট ভিসার যোগ্যতা গুলা উল্লেখ করা হলোঃ 

ব্যচলর বা আন্ডার গ্রাজেয়েট ডিগ্রির জন্য আপনার এস এস সি এবং এইচ এস সি তে সর্বনিন্ম ৩.৫ থাকতে হবে 
মাস্টার্স প্রগ্রামের জন্য আপনার সর্বনিন্ম ৩ থাকতে হবে
IELTS এর স্কোর সর্বনিন্ম ৬.৫ থেকে ৭ থাকতে হবে
জার্মানির বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে রিকোমেন্ডেশন চিঠি
ভর্তির মুল আবেদন পত্র 
বৈধ পাসপোর্ট 
পর্যাপ্ত আর্থিক সচ্ছলতার প্রমাণ 
শিক্ষাপ্রত্তিষ্ঠানের একছেপট্যন্স লেটার
আপনার শিক্ষ্যাপ্রতিষ্ঠানের ধরন এবং আপনার কোর্সের উপর ভিত্তি করে আপনার যোগ্যতার কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে। 

জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩
বাংলাদেশ থেকে জার্মানিতে পরাশোনার জন্য আপনাকে ডি টাইপ জার্মানি স্টাডি ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে। এই ভিসাটি সম্পতিতেই চালু করেছে জার্মান সরকার। এটি শুধু মাত্র আন্তজার্তিক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যেই চালু করে জার্মান সরকার। তাই আপনারা যারা ২০২৩ সালে পড়াশোনার উদ্দেশ্যে জার্মানি যেতে ইচ্ছুক তারা এই ভিসাতে আবেদনের মাধ্যমে খুব সহজেই জার্মান যেতে পারবেন। 

জার্মানিতে স্কলারশিপ
জার্মানিতে বিদেশী শিক্ষার্থীদের অনেক চাহিদা রয়েছে। একটা গবেষনায় দেখা গেছে জার্মানিতে উচ্চশিক্ষারত শিক্ষার্থিদের মধ্যে শতকরা ১২ শতাংশই হলো বিদেশি স্টুডেন্ট। আর সেই সাথে জার্মানিতে রয়েছে অনেক স্কলারশিপের অপশন তবে এর মধ্যে যারা পিএইচ ডি করতে জার্মানি গিয়ে থাকেন তারা সর্বোচ্চ স্কলারশিপের সুবিধা পেয়ে থাকে। ২০১৫ সালের একটি রিপোর্টে দেখা যায় DAAD নামক একটি প্রতিষ্ঠান জার্মানিতে পিএচডি করতে আসা ৫০০০ বিদেশী স্টুডেন্ট স্কলারশিপ প্রদান করেছে। 

পরিশিষ্ট  

জার্মানি তথ্য প্রযুক্তিতে অনেক উন্নত এবং এবং অগ্রসর দেশ। শিক্ষা এবং প্রায় সকল দিক থেকেই জার্মানি ইউরোপের অন্যান্য দেশগুলোর থেকে অনেক এগিয়ে। বিশেষ করে জার্মানির শিক্ষাব্যবস্থা ইউরোপের অন্যান্য দেশের থেকে অনেক বেশি প্রযুক্তিনির্ভর এবং যুগোপযোগী। তাই আপনি যদি উচ্চ শিক্ষার জন্য বাহিরে যেতে চান তাহলে জার্মানি হবে প্রধান এবং প্রথম সারির পছন্দ। আশা করি আজকের আর্টিকেলের মাধ্যমে জার্মান স্টুডেন্ট ভিসা ২০২৩ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পেরেছেন। এর পরেও যদি কোন প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারবেন। সবাই ভালো থাকবেন আল্লাহ হাফেজ। 

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.