রাউটার কি ? রাউটার এর সুবিধা, ব্যবহার, কাজ এবং প্রকার | Muhammed Juwel Ahmed |


বন্ধুরা কেমন আছেন ? আশা করছি ভালোই আছেন। আর্টিকেলের টাইটেল দেখেই হয়তো বুঝে গেছেন যে, আজকে আমরা কোন বিষয় নিয়ে কথা বলবো।

রাউটার কি
What is a router in Bangla.

হে, আজকে আমরা কথা বলবো “রাউটার” (router) নিয়ে।

আজকে আমরা জানবো, “রাউটার কি” (what is a router in Bangla), “রাউটার কিভাবে কাজ করে“, “রাউটার এর বিভিন্ন প্রকার গুলো কি” এবং “রাউটার এর ব্যবহার কেন করা হয়“.

তাছাড়া, router নিয়ে অন্যান্য কিছু সাধারণ বিষয় যেমন, “পকেট রাউটার কি”, “পকেট রাউটার এর সুবিধা” এবং “পকেট রাউটার কিভাবে কাজ করে” এই সম্পূর্ণ বিষয় গুলো আমরা আজকে জানবো।


তবে আর্টিকেল সম্পূর্ণ পড়ার পর, একটি ওয়াইফাই রাউটার কি এবং রাউটার কেনার আগে কি কি দেখতে হয়, এই বিষয়েও আপনি জেনে যাবেন।

আজ, প্রত্যেক ১০ জনের মধ্যেই ৭ জন ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন।

এবং, ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আমরা বিভিন্ন ধরণের কাজ যেমন, DTH recharge, mobile recharge, email, online shopping, bill payment এবং আরো নানান ধরণের কাজ করি।

আজ, প্রত্যেকটি দপ্তরে (offices) ইন্টারনেটের সাহায্যে নানান ধরণের অফিসিয়াল কাজ গুলো হচ্ছে।

সত্যি বললে, internet এর মাধ্যমে আমরা আমাদের কাজ গুলো অনেক সহজেই করে নিতে পারছি।

আজ করোনা ভাইরাস (corona virus) এর এই বিপদের সময়ে, যখন বিভিন্ন দেশ বিদেশে lock-down এর সাথে এক অনেক খারাপ সময় চলছে, তখন আমরা ঘরে বসেই কাজ করতে পারছি।


এবং, এই কাজ সম্ভব হচ্ছে “ইন্টার (internet)” এর মাধ্যমেই।

এমনিতে, ইন্টারনেট আজ প্রত্যেকেই ব্যবহার করছেন এবং ইন্টারনেট এর সাথে জড়িত বিভিন্ন বিষয় গুলো নিয়েও আজ আমরা প্রত্যেকেই জানি।

কিন্তু এখনো, অনেক ব্যক্তিরা রয়েছেন যারা নতুন করে ইন্টারনেট এর ব্যবহার করছেন।

তাই, তাদের জন্যেই ইন্টারনেটের সাথে জড়িত একটি অনেক জরুরি বিষয় “রাউটার” নিয়ে আজ আমি আপনাদের বলবো।

একটি router এবং internet এর মাঝে থাকা সম্পর্ক অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

তাই চলুন, router কি এবং এবং রাউটার এর ব্যবহার কেন করা হয়, বিষয়টি জেনেনেই।

রাউটার কি ? (What Is Router in Bangla)

একটি রাউটার মানে কি বা রাউটার কাকে বলে, এই প্রশ্নের উত্তর এক কথায় দিতে গেলে আমরা এভাবে বলতে পারি,

“Router হলো এমন একটি networking hardware যাকে একটি computer networking device বলেও বলা যেতে পারে”।

এই networking device এর মাধ্যমে, বিভিন্ন অন্যান্য computer networks এর সাথে সংযুক্ত হয়ে তাদের মধ্যে “data packets” গুলোকে forward বা move করা হয়।

একটি রাউটার এর কাজ হলো, “বিভিন্ন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর মধ্যে যোগাযোগের একটি মাধ্যম তৈরি করা”.

এবং নেটওয়ার্ক এর মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করার জন্য ক্ষেত্রে IP (internet protocol) এর ব্যবহার করা হয়।

তাই, রাউটার এর সংজ্ঞা (router definition in bangla) কি ? এই প্রশ্নটি করলে, এভাবেই বলা যেতে পারে।

তবে, রাউটার এর বিষয়ে যদি সহজ ভাবে বুঝতে হয়, তাহলে এভাবে বলা যেতে পারে,

সহজ ভাষায় রাউটার কাকে বলে ?

Router কে, এমন একটি electronic device বা external hardware বলা যেতে পারে যার মাধ্যমে বিভিন্ন আলাদা আলাদা computer network গুলোকে সংযুক্ত করা হয়।

এই ক্ষেত্রে, একটি router এই কাজটি wired বা wireless দুটো কানেকশন এর মাধ্যমেই করতে পারে।

ওয়্যারলেস (wireless) বা বেতার মাধ্যমে যেগুলো router বিভিন্ন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলোকে connect করে, সেগুলোকে বলা হয় “ওয়াইফাই রাউটার” (WiFi router).

Router হলো এমন এক device যেটা, একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক কে আরেকটি কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এর সাথে কানেক্ট করে।

যদি, ইন্টারনেটের (internet) ক্ষেত্রে বলা হয় তাহলে,

Router হলো সেই মাধ্যমটি, যার ব্যবহার করে, একটি নেটওয়ার্ক থেকে ইন্টারনেট ডাটা অন্যান্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলোতে ফরওয়ার্ড করা হয় বা পাঠানো হয়।

তাছাড়া, রাউটার এর ফলে অন্যান্য কম্পিউটার নেটওয়ার্ক গুলো একটি বিশেষ “ইন্টারনেট সংযুক্ত কম্পিউটার নেটওয়ার্ক” থেকে “internet connectivity” গ্রহণ করতে পারে।

Router নামের এই networking device টির প্রথম মডেল ১৯৭৪ সালে develop করা হয়েছিল।

তবে মনে রাখবেন, router এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ডাটা বা ট্রাফিক অন্যান্য কম্পিউটার গুলোতে প্রদান করার ক্ষেত্রে, আগে রাউটারটি নিজে একটি মডেম (modem) এর সাথে সংযুক্ত থাকতে হবে।

কারণ, একটি মডেম এর মাধ্যমেই রাউটারটি ইন্টারনেট ডাটা গ্রহণ করতে পারবে।

তাহলে আশা করছি, “router কি (about router in bangla)” এবং “এর কাজ কি কি”, এই বিষয় গুলো আপনারা বুঝতে পেরেছেন।

রাউটার এর বিভিন্ন প্রকার গুলো কি কি ? – (Types Of Router)

এমনিতে, রাউটার এর প্রকার অনেক রকমের রয়েছে।

মানে, বিভিন্ন আলাদা আলাদা প্রকারের রাউটার বর্তমানে রয়েছে।

তবে, আমি নিচে আপনাদের কিছু জনপ্রিয় ও প্রচলিত রাউটার এর প্রকার গুলোর বিষয়ে বলবো।

  1. Broadband routers (Wired routers)
  2. Wireless routers (WiFi routers)
  3. Core routers
  4. Edge routers
  5. Inter provider border routers

চলুন, প্রত্যেকটি প্রকারের বিষয়ে অল্প বিস্তারিত ভাবে জেনেনেই।

১. Broadband Routers (wired routers)

এই ধরণের router গুলো ২ টি বা তার থেকে অধিক কম্পিউটার গুলোকে সংযুক্ত করার জন্য এবং পরস্পরে ইন্টারনেটের সাথে connect করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

এরকম broadband router গুলোর মাধ্যমে অনেক high speed internet এর ব্যবহার করা সম্ভব।

রাউটার গুলো, একটি wired connection এর মাধ্যমে modem থেকে internet সেবা গ্রহণ করে, এবং তারপর আপনার ঘরের বা দপ্তরে থাকা অন্যান্য device গুলোকে সেই internet connection এর সাথে সংযুক্ত হওয়ার রাস্তা করে দেয়।

২. Wireless routers

বর্তমান সময়ে wireless router এর ব্যবহার ও চাহিদা প্রচুর।

ব্যক্তিগত ব্যবহারের ক্ষেত্রেই বলুন বা অফিসিয়াল কাজে, আমাদের ঘর বা দপ্তরে বেশিরভাগ এই wireless routers গুলোই ব্যবহার হওয়া দেখা যায়।

এই wireless router গুলোর মাধ্যমে একটি কম্পিউটার কোনো তার (wire) ছাড়াই অন্য একটি কম্পিউটারের সাথে সংযুক্ত হয়ে ইন্টারনেট গ্রহণ করতে পারে।

আর এজন্যই এই ধরণের রাউটার গুলোকে “wireless” (তার ছাড়া) বলে বলা হয়।

এই ধরণের রাউটার গুলো, একটি wireless signal এর নির্ধারিত area তৈরি করে।

এবং, সেই নির্ধারিত area র ভেতরে থেকে wireless signal টির সাথে একটি computer, mobile, laptop ইত্যাদি সংযোগ হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে।

আর সেটাও কোনো তার (wire) ছাড়া।

সুরক্ষার ক্ষেত্রে এই ধরণের ওয়াইফাই রাউটার গুলোতে password এর ব্যবহার করা হয়।

এতে, আপনার অনুমতি ছাড়া আপনার WiFi network area র ভেতরে থাকা অন্যান্য computer বা mobile গুলো ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হতে পারেনা।

৩. Core routers

Core router এর মাধ্যমে, বিভিন্ন আলাদা আলাদা জায়গায় থাকা router গুলোকে একসাথে সংযুক্ত করার জন্য ব্যবহার করা হয়।

উদাহরণ স্বরূপে, 

ধরুন আপনার কোম্পানিতে ১০ টি রাউটার আলাদা আলাদা জায়গায় রয়েছে।

এখন সেই ১০ টি আলাদা আলাদা router গুলোকে একসাথে পরস্পরে সংযুক্ত করার কাজ করে এই core router.

Lane network এর backbone হিসেবে যেই router কাজ করে, তাকে বলা হয় core router.

আলাদা আলাদা distributed routers গুলোকে পরস্পরে সংযুক্ত করার জন্যে core routers ব্যবহার করা হয়।

৪. Edge routers

এই ধরণের রাউটার গুলোকে internet service provider বা ISP র পাশে রাখা হয়।

বাইরের protocol যেমন border gateway protocol (BGP) গুলোকে অন্যান্য ISP র BGP র সাথে configure করে।

৫. Inter provider border routers

আপনারা ISP মানে তো অবশই জানেন ? ISP মানে, “Internet service provider”.

যেমন, Airtel, Reliance, Jio, Idea, BSNL ইত্যাদি, যেগুলোর মাধ্যমে আমরা আমাদের মোবাইল বা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করি।

এই ধরণের ISP গুলোকে পরস্পরে সংযুক্ত (interconnect) করার ক্ষেত্রে, এই Inter provider border routers ব্যবহার করা হয়।

তাহলে, এগুলোই ছিল রাউটার এর কিছু প্রকারভেদ।

রাউটার এর ব্যবহার কেন করা হয় ?

বর্তমান সময়ে, প্রত্যেকটি office বা ঘরে রাউটার এর ব্যবহার কেবল একটি মাত্র উদ্দেশ্যেই করা হয়।

সেটা হলো, “একটি ISP (internet service provider) থেকে গ্রহণ করা ইন্টারনেট কানেকশন, বিভিন্ন আলাদা আলাদা কম্পিউটার ডিভাইস এর মধ্যে শেয়ার করার উদ্দেশ্যে”.

একটি মডেম (modem) এর মাধ্যমে আপনার router এ internet গ্রহণ করা বা সংযুক্ত করা হয়।

এবং তার পর, গ্রহণ করা ইন্টারনেট ডাটা যাতে বিভিন্ন আলাদা আলাদা computer, mobile বা laptop এর দ্বারা একসাথে ব্যবহার করা যেতে পারে, এই কাজের ক্ষেত্রেই রাউটার এর ব্যবহার করা হয়।

ধরুন, আপনার দপ্তরে থকা মুখ্য কম্পিউটারে আপনি আপনার modem থেকে সোজা ভাবে ইন্টারনেট গ্রহণ করছেন এবং ব্যবহার করছেন।

তবে, এখন যদি সেই মডেম এর মাধ্যমে গ্রহণ করা internet এর সাথে আপনি দপ্তরের অন্যান্য computer বা mobile গুলোকে connect করতে চাচ্ছেন, তাহলে এই ক্ষেত্রে আপনার ব্যবহার করতে হবে একটি router এর।

বিভিন্ন device গুলো যাতে একটাই মডেমের মাধ্যমে গ্রহণ করা internet সেবা একসাথেই গ্রহণ ও ব্যবহার করতে পারে, সেই ক্ষেত্রে একটি router কাজে আসে।

পকেট রাউটার কি ?

পকেট রাউটার গুলোকে পোর্টেবল পকেট ওয়াইফাই রাউটার (portable WiFi router) বলেও বলা হয়।

এই ধরণের পকেট ওয়াইফাই রাউটার গুলো সাধারণ WiFi router এর তুলনায় অনেক ছোট থাকে।

এবং, এতটাই ছোট যে আপনি সেটাকে নিজের পকেটে করে নিয়ে যেকোনো জায়গার থেকেই ব্যবহার করতে পারবেন।

Pocket router গুলো portable থাকে, এবং তাই এর মাধ্যমে ইন্টারনেট সংযোগ করার জন্য WiFi connection এর ব্যবহার করতে হয়।

একটি সাধারণ রাউটার, প্রথমেই তারের মাধ্যমে modem এর সাথে সংযুক্ত করতে হয় এবং তারপর wire বা WiFi ব্যবহার করে অন্যান্য computer device গুলো মডেম থেকে আশা ইন্টারনেট এর সাথে সংযুক্ত হতে পারে।

কিন্তু, একটি পকেট রাউটার বা পোর্টেবল রাউটার এর ক্ষেত্রে, internet connection প্রদান করার জন্য একটি SIM card ব্যবহার করা হয়।

মানে, আপনি যেই কোম্পানির পকেট রাউটার ব্যবহার করছেন, সেই কোম্পানির sim card সেখানে লাগানো থাকবে।

এবং, যখনি যেই জায়গার থেকে আপনি নিজের রাউটার চালু করে দিবেন, সেখান থেকেই WiFi connection এর মাধ্যমে একাধিক device এ Internet ব্যবহার করতে পারবেন।

Pocket router বা portable router গুলো এমনিতে মোবাইলের মতোই charge দিয়ে ব্যবহার করতে হয়।

ভারতে এই ধরণের পকেট ওয়াইফাই রাউটার গুলোর মধ্যে “JioFi” অধিক পরিমানে ব্যবহার করা হয়।

কিছু কিছু ক্ষেত্রে, pocket router গুলোকে travel router বলেও বলা হয়।

তাহলে, “pocket router কি” এই বিষয়ে বুঝলেন তো ?

পকেট রাউটার কি বা কাকে বলে, এই বিষয়ে জানার পর চলুন পকেট রাউটার এর কিছু সুবিধা ও লাভ এর বিষয়ে জেনেনেই।

পকেট রাউটার এর সুবিধা কি কি ?

Pocket রাউটার এর সুবিধা বলতে তেমন বিশেষ কিছু নেই।

তবে, যেই দুটি বা তিনটি সুবিধে রয়েছে, সেটাই অনেক বেশি।

  • নিজের পকেটেই যেকোনো সময় নিজের পার্সোনাল router নিয়ে ঘুরতে পারবেন।
  • যেকোনো সময় রাউটার এর মাধ্যমে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবেন।
  • অন্যান্য রাউটার গুলোর তুলনায় পকেট পোর্টেবল রাউটার গুলো অল্প সস্তায় পাওয়া যেতে পারে।
  • এখানে “internet hotspot” বা “internet access point” তৈরি করার জন্য একটি SIM card ব্যবহার করা হয়।
  • যেকোনো সময় নিজের পার্সোনাল internet access point থেকে internet ব্যবহার করলে, আপনার connection সব সময় সুরক্ষিত থাকছে।

তাহলে, এগুলোই ছিল একটি পকেট রাউটার এর সুবিধা ও লাভ।

আমাদের শেষ কথা,

তাহলে বন্ধুরা, আজকে আমরা সংক্ষেপে জেনেনিলাম যে “Router কি এবং কাকে বলে”.

এছাড়া, একটি রাউটার নিয়ে আরো অনেক তথ্য এই আর্টিকেল জানা গেলো যেমন, “পকেট রাউটার কি” এবং এর সাথে জড়িত আরো অন্যান্য তথ্য।

আমার সব সময় এটাই চেষ্টা থাকে যাতে, আমি আপনাদের সম্পূর্ণ কাজের এবং সঠিক তথ্য প্রদান করতে সফল হয়।

তাই, আজকের আমাদের বিষয় “About router in Bangla” বিষয়টি নিয়ে আপনাদের মতামত কি ? আর্টিকেলটি পড়ে আপনার লাভ হয়েছে কি না, সেটা আমাকে কমেন্টের মাধ্যমে অবশই জানিয়ে দিবেন।

আপনাদের কমেন্ট পড়ে সত্যি আমি অনেক সাহস পাই একটি নতুন বিষয়ে তথ্য লেখার ক্ষেত্রে।

শেষে, রাউটার নিয়ে আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে নিজের বন্ধু এবং প্রিয়জনের সাথে আর্টিকেলটি শেয়ার অবশই করবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.