মেয়েদের মন ভালো করার উপায় গুলো জেনেরাখুন !Muhammed Juwel Ahmed |

মেয়েদের মন ভালো করার উপায়: জীবনের প্রতিটা দিন একসমান যায় না। ভালো দিনগুলিতে আমরা মুক্ত পাখির মতো সহজেই সকলের সাথে নিজেকে মিশে যেতে দিই। কিন্তু মন-কেমনের দিনগুলি এলে, নিজেকে একাকিত্বের মধ্যে ডুবিয়ে দিই।

তখন একমুহূর্তের জন্য হলেও মনে হয়, কাছের কোনো বন্ধু বা পরিবারের কেউ পেলে হয়তো মনের কথা উজাড় করে দিতে পারতাম। এই অনুভূতি শুধু আপনার একার নয়। এমন অনেকে আছে যারা আপনার মতো করেই ভাবেন।

হয়তো এই তালিকায় আপনার প্রিয় বান্ধবী বা প্রেমিকাও আছেন। এক্ষেত্রে কাছের মানুষ হওয়ার সুবাদে, তাদের মুখে হাসি ফোটানোর বা মন ভালো করার চেষ্টা করা উচিত আপনার। কেননা সামান্য প্রচেষ্টা এক জনকে কঠিন সময়ের মধ্য থেকে বেরিয়ে আসতে সাহায্য করতে পারে।

মেয়েদের মন ভালো করার উপায় গুলো

মেয়েদের মন ভালো করার উপায়

আপনি যদি এই বিষয়ে অপটু হয়ে থাকেন, তবে আজ আমরা আপনার সুবিধার্থে একটি মেয়ের মন ভালো করার সর্বোত্তম ১০টি উপায় সম্পর্কে জানাবো। এই টিপসগুলি অনুসরণ করে খুব সহজেই নিজের বান্ধবী বা প্রেয়সীকে দুঃখ-হীন একটি সুন্দর দিন উপহার দিতে পারবেন।

১. কথা বলুন এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি বুঝুন –

আপনার বান্ধবী যদি কোনো সমস্যায় পরে বা কোনো কারণে তার মেজাজ খারাপ থাকে, তবে তার সাথে খোলাখুলি কথা বলুন। শুধুমাত্র তার জন্য এরূপ সময় বের করতে দেখে, মেয়েটি খুশি হবে এবং কারোর সাথে নিজের মনের কথা শেয়ার করতে পেরে হালকা অনুভব করবে।

পাশাপাশি আপনি তার প্রতি কতটা যত্নশীল, তাও প্রকাশিত হবে।

যাইহোক যদি আপনার বান্ধবী মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন, তবে তাকে সহানুভূতি দিন এবং তার দৃষ্টিভঙ্গি বোঝার চেষ্টা করুন। এমনটা করলে মেয়েটি বেদনা ভুলে সাময়িকভাবে হলেও ভেতর থেকে আনন্দিত হবে।

২. ভালো শ্রোতা হন –

যখন কোনো ব্যক্তি কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যান, তখন তার এমন একটি মানুষের প্রয়োজন হয় যে তার কথা মন দিয়ে শুনবে। তাই আপনি যদি আপনার বান্ধবীর মন ভালো করতে চান, তবে মনোযোগ সহকারে ধৈর্য ও আগ্রহের সাথে তার কথা শুনুন।

এক্ষেত্রে মেয়েটিকে যেচে পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন নেই। পরিবর্তে তার যদি ‘গুড টক’ -এর দরকার হয়, তবে তাকে মন খুলে সব কথা বলতে দিন। তাকে মানসিকভাবে সাপোর্ট করুন।

এমনটা করলে মেয়েটির মন ভালো হবে এবং তার কথা এতক্ষন মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য সে ‘স্পেশাল’ বোধ করবে। তবে তার অনুভূতিগুলিকে ভুলেও তাচ্ছিল্য না উপেক্ষা করবেন না।

৩. পরিস্থিতির ইতিবাচক দিকটি দেখান –

আপনার বান্ধবী যদি সমস্যায় পড়েন বা কোনো বিষয় নিয়ে দুঃখী হয়ে থাকেন, তবে তাকে আলিঙ্গন করুন, তার সমস্যার কথা শুনুন এবং পরিস্থিতির ইতিবাচক দিকটি তাকে দেখান।

তাকে বোঝান যে – জীবনে সমস্যা আসবেই, তা বলে জীবন উপভোগ করা বন্ধ করে দেওয়া যায় না। আর হ্যাঁ, যতক্ষণ না সে নিজের থেকে পরামর্শ চায় তাকে ভুলেও কোনো প্রকার উপদেশ দেবেন না।

মেয়েটি যদি তার ভেতরে থাকা আবেগ উজাড় করে বের করে দিতে চায় আপনার কাছে, তবে তা করার সুযোগ দিন। তাকে আটকাবেন না। ভেতরের রাগ, ক্ষোভ বা দুঃখ প্রকাশিত হয়ে গেলে সে আরও ভাল বোধ করবে।

৪. হাসানোর চেষ্টা করুন –

কথায় আছে, ‘Laughter is the best Medicine’ অর্থাৎ হাসি হল সবচেয়ে ভালো ওষুধ। তাই নিজের বান্ধবীর মুড ভালো করতে, তাকে জোকস শোনান, মজার কোনো গল্প বলুন অথবা বিনোদনমূলক কোনো অ্যাক্টিভিটিতে যুক্ত হন।

এমনটা করলে কিছুক্ষনের জন্য হলেও সমস্ত দুশ্চিন্তা এবং দুঃখ ভুলে তার মুখে হাসি ফুটে উঠবে।

তবে একটা বিষয় বিশেষভাবে খেয়ালে রাখবেন যে, বান্ধবীকে ভালো বোধ করানোর জন্য এমন কোনো জোকস বলবেন না যা তাকে আঘাত দিতে পারে। অথবা তার সমস্যাগুলিকে নিয়ে উপহাস করে, তাকে ছোট অনুভূত করাবেন না।

৫. স্নেহপরায়ণ হন –

আপনারা যদি বন্ধু হন, তবে আপনি তাকে আলিঙ্গন করলে সে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ নাও করতে পারে। কিন্তু সে যদি আপনার প্রেমিকা হন, তবে তার প্রতি স্নেহপরায়ণ হন এবং ভালোবাসা প্রকাশ করুন। তবে যদি সে ‘স্পেস’ চায়, তবে তার এই সিদ্ধান্তকে সম্মান দিয়ে কিছুক্ষন একা থাকতে দিন।

যাইহোক, প্রেমিকাকে ভাল বোধ করাতে আলিঙ্গন করা ছাড়াও তাকে উপহার দিয়ে ‘সারপ্রাইজ’ করতে পারেন। আবার তার প্রিয় খাবার বা ফুল কিনে দিতে পারেন।

এছাড়া প্রিয় মানুষটির মুখে হাসি ফোটানোর জন্য হাতে লেখা চিঠি তাকে পাঠাতে পারেন। এই সহজ কয়েকটি উপায় অবলম্বনে বান্ধবী বা প্রেমিকার মন ভালো করতে পারবেন।

৬. সুন্দর টেক্সট মেসেজ পাঠান –

কাজ বা অন্য কোনো কারণবশত আপনি যদি নিজের বান্ধবীর কাছে পৌঁছতে না পারেন, তবে তাকে সুন্দর একটি টেক্সট মেসেজ পাঠানোর মাধ্যমেও কিন্তু তার প্রতি আপনার ভালবাসা এবং ‘মেন্টাল সাপোর্ট’ দেখাতে পারবেন।

সময় বের করে ফোনে কথাও বলতে পারেন। এছাড়া, কিছু সময় অন্তর মজাদার মিম / জোকস, ভয়েস মেসেজ ইত্যাদিও পাঠাতে থাকুন। এমনটা করলে আপনি শারীরিকভাবে পাশে না থেকেও, সর্বক্ষণ তার খেয়াল রাখতে এবং মন ভালো রাখতে পারবেন।

৭. রান্না করে খাওয়ান বা প্যাম্পার করুন –

মেয়েদের ভালো বোধ করানোর সর্বোত্তম উপায় হল প্যাম্পারিং করা। এক্ষেত্রে একটি মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে প্যাম্পার করা যায়। যেমন, বান্ধবীকে নিজের হাতে কোনো স্পেশাল ডিশ রান্না করে খাওয়াতে পারেন। তা সে ডিমের অমলেট হোক বা চাউমিন, আপনার প্রচেষ্টা দেখে এমনি সে খুশি হবে।

আর যদি একান্ত আপনি রান্না করতে না জানেন, তাহলে তাকে তার পছন্দের আইসক্রিম বা স্ট্রিট ফুড খাওয়ান। এছাড়া, তাকে স্পা কিংবা শপিংয়ের জন্য নিয়ে যেতে পারেন।

একটি মেয়ের মন ভালো করার জন্য যে আপনাকে সবসময় ‘আউট অফ দ্য বক্স’ কিছু করতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। মেয়েরা এরূপ ছোটখাটো প্রচেষ্টা বা উদ্যোগ দেখেও খুশি হয়।

৮. সিনেমা দেখুন –

মন ভালো করার জন্য, সিনেমা দেখার থেকে ভালো বিকল্প আর কি হতে পারে। এক্ষেত্রে বান্ধবীকে তার পছন্দের সিনেমা বেছে নিতে বলুন এবং তার সাথে বসে ‘কোয়ালিটি টাইম’ কাটান।

সিনেমা হাসির হোক বা সাসপেন্সের, কোনো বিষয় বা চিন্তার থেকে মনকে দূরে সরিয়ে আনতে সাহায্য করে। আর সাথে যদি ‘কোম্পানি’ দেওয়ার কেউ থাকে, তবে মন আরোও ভালো হয়ে যায়।

৯. ঘুরতে নিয়ে যান –

মন ভালো করার জন্য মাঝে মধ্যে ঘুরতে যাওয়া উচিত। কেননা খোলা আকাশের নিচে, প্রকৃতির মাঝে থাকলে মনের উপর খুব ভাল প্রভাব পরে।

তাই বান্ধবীর মন ভালো রাখতে আশেপাশে কোথায় ঘুরতে নিয়ে যান। অথবা সুযোগ পেলে গাড়ি নিয়ে কোথাও মিনি-ট্রিপ করে আসুন।

এমনটা করলে মেয়েটি ‘স্ট্রেস’ মুক্ত যেমন হবে, তেমনি নতুন জায়গায় ভ্রমণের উৎসাহে আপনা থেকেই তার মন ভালো হয়ে যাবে।

১০. মনে করিয়ে দিন আপনি তাকে কতটা ভালবাসেন –

বান্ধবী বা প্রেমিকা কখনো কোনো কারণে দুঃখ বা কষ্ট পেলে, তাকে আলিঙ্গন করুন বা তার হাত ধরুন এবং তাকে বলুন আপনি তাকে কতটা ভালোবাসেন। সে কষ্ট পেলে আপনার কতটা খারাপ লাগে তা বোঝান। আপনার থেকে এরূপ স্নেহশীল ব্যবহার পেয়ে, মেয়েটির মন ভালো তো হবেই, সাথে তার মুখে বহুল কাঙ্খিত হাসিও দেখতে পাবেন।

উপসংহার

তাহলে বন্ধুরা, মেয়েদের মন ভালো কিভাবে করা যাবে আশা করছি এই বিষয়ে ভালো করে বুঝতেই পেরেছেন। আশা করছি আমাদের আজকের আর্টিকেলটি আপনাদের অবশই ভালো লেগেছে। আর্টিকেলটি ভালো লেগে থাকলে সোশ্যাল মিডিয়াতে অবশই শেয়ার করবেন। এছাড়া, আর্টিকেলের সাথে জড়িত কোনো ধরণের প্রশ্ন বা পরামর্শ থাকলে, তা নিচে কমেন্ট করে অবশই জানিয়ে দিবেন।

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.